ঢাকা,শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

পেকুয়ার আঞ্চলিক মহাসড়কের মেরামত কাজে সীমাহীন অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ

pekua ansalik moha sarok pic 01মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া ::
কক্সবাজার পেকুয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের টইটং সীমান্ত ব্রীজ থেকে ঈদমনীর লালব্রীজ পর্যন্ত ১৩কোটি টাকা ব্যয়ে মেরামত কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট সড়ক বিভাগের কর্মকর্তাদের তদারকীর অভাবে ওই সড়ক মেরামতের কার্যাদেশ প্রাপ্ত ঠিকাদার দায়সারাভাবে নিু মানের সামগ্রি ব্যবহার করে জনগুরুত্বপূর্ণ ওই মহাসড়কের কাজ করা হচ্ছে এমনই অভিযোগ স্থানীয়দের। সরেজমিনে পেকুয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে গিয়েও অনিয়মের সত্যতা পাওয়া গেছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, সিডিউল বর্হিভুত নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে যেনতেন ভাবে মেকাডমের কাজ চলছে। একই রাস্তায় সড়ক ও জনপথ বিভাগ ইতোপূর্বে আরো বেশ কয়েকবার মেরামত করেছে। এতে ব্যয় হয়েছে সরকারের বিপুল পরিমাণ টাকা। উন্নয়নের নামে সরকারী অর্থ লুটপাটকারী সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্তাব্যক্তি এবং সংশ্লিষ্ঠ ঠিকাদারের বিরুদ্ধে বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছে এলাকাবাসি।

জানা গেছে, পেকুয়া উপজেলার এবিসি আঞ্চলিক মহাসড়কের টইটংয়ের সীমান্ত ব্রীজ থেকে চকরিয়ার ঈদমনী লাল ব্রীজ পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার সড়কের বিভিন্ন অংশে ভাঙ্গন ও খানাখন্দকে ভরে গেছে। গত বর্ষা মৌসুমে স্থানীয়রা চলাচলে চরম দূর্ভোগের মুখে পড়েছিল। গত বারের বেশ কয়েকবার বন্যায় এ আঞ্চলিক মহাসড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়। দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ ওই আঞ্চলিক মহাসড়ক উন্নয়নের জন্য গত বছর শেষের দিকে দরপত্র আহবান করলে চট্টগ্রামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স মেক কনস্ট্রাকশন লি: ওই কাজের কাজের দায়িত্ব পান। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৩ কোটি টাকা। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, কাজ শুরুর দুই মাস সময় অতিবাহিত হলেও কার্যাদেশ পাওয়া ঠিকাদারী প্রতিষ্টান যথাসময়ে কাজ সমাপ্ত করতে পারেনি।

গত কয়েক দিন পূর্বে সরজমিনে দেখা গেছে, আঞ্চলিক মহাসড়কের টইটংয়ের প্রধান সড়কে বাঁশ ও ড্রাম বসিয়ে জন এবং যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। চলছে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। সড়কটি সংস্কার করতে গিয়ে সিডিউল মোতাবেক ঠিকমতো রোলার ব্যবহার ও সড়ক পরিস্কার না করে নিম্নমানের মেকাডম এবং নিুমানের ইটের খোয়া-বালু দিয়ে দায়সারাভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে ঠিকাদারী প্রতিষ্টানের লোকজন। সিলেটি উন্নত পাথরের পরিবর্তে ওই সড়কে স্থানীয় নিু মানের পাথরও ব্যবহার করা হচ্ছে। সরেজমিনে নিুমানের সামগ্রী ব্যবহারের সত্যতাও মিলেছে। সড়ক মেরামতের কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা জানান, ঠিকাদারের নিয়োগকৃত ম্যানেজার ইমরুল সাহেদের নির্দেশমতো তারা কাজ করছেন। এখানে কি ধরনের নির্মান সামগ্রী ব্যবহার করার নিয়ম রয়েছে সেটা তাদের জানা নেই। ঠিকাদারের ম্যানেজারই এসব বিষয়ে ভাল জানবে। পরে ঠিকাদার নিযুক্ত লোকের সাথে মোবাইল যোগাযোগ করে বক্তব্য নেওয়ার জন্য বেশ কয়েকবার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আঞ্চলিক মহাসড়ক মেরামতের কাজে কার্যাদেশ পাওয়া ঠিকাদার চট্টগ্রামের মেক কনষ্ট্রাকশন কর্তৃপক্ষ নিুমানের ইটের খোয়া, পাথার ও বালু দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। খোয়া বিচানোর পূর্বে সড়কের ময়লা ভালভাবে পরিস্কার করা হচ্ছেনা। আশ্রয় নেয়া হচ্ছে চরম দুর্নীতি আর অনিয়মের। এতে করে কাজের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কাজের স্থায়িত্ব নিয়েও তারা শংকা প্রকাশ করেন এবং উন্নয়নের নামে সরকারী অর্থ লুটপাটকারী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এবং সংশ্লিষ্ঠ ঠিকাদারের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী তুলেন এলাকাবাসি।

এ ব্যাপারে কক্সবাজার সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রানা প্রিয় বড়–য়ার সাথে গতকাল শুক্রবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, পেকুয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের মেরামত কাজে কোন ধরনের অনিয়ম ও দূর্নীতি হচ্ছেনা দাবী করেছেন। তিনি এও বলেন, সড়ক মেরামত কাজে কোন দূর্নীতি হলে কার্যাদেশপ্রাপ্ত ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শতভাগ কাজ আদায় করবে সড়ক বিভাগ।

পাঠকের মতামত: