ঢাকা,শনিবার, ৪ মে ২০২৪

ঈদগাঁওতে ড্রাইভিং সিটে বালক, ঝুঁকিতে যাত্রী!

সেলিম উদ্দীন, ঈদগাঁও, কক্সবাজার প্রতিনিধি, কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁওতে প্রতিনিয়ত বাড়ছে অনাকাংখিত দূর্ঘটনা। বাদ যাচ্ছেনা স্কুল ছাত্র হতে নিরীহ পথচারী। দিনের বেলায় ডাম্পার-ট্রাক ভারি যান চলাচল, চালকের আসনে বসা অপ্রাপ্ত বালকের অবহেলা আর ট্রাফিক ব্যবস্থা না থাকায় মৃত্যু ঝুকিঁ দিনদিন বাড়ছে বলে দাবী করছেন সচেতন মহল।

তথ্যমতে, সদর উপজেলার ঈদগাঁও কালির ছড়া হয়ে নতুন অফিস পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিঃ মিঃ মহাসড়ক, ঈদগাঁও বাস ষ্টেশন হতে গোমাতলী ১২ কিঃমিঃ এবং বংকিম বাজার হতে চৌফলদন্ডী সড়ক প্রায় ৯ কিঃ মিঃ পরিপাটি সড়ক। এসব সড়কের মধ্যে ঈদগাঁও বাস ষ্টেশন নেই ট্রাফিক। ফলে আইন ভঙ্গ করে ১৪/১৫ বছরের বালকেরা ড্রাইভিং সিটে বসে চালাচ্ছে মিনি ছারপোকা, ট্রাক কিংবা ভারি গাড়ি। ট্রাফিক পুলিশের অব্যবস্থাপনা এবং সড়কে চলাচলকারী মানুষের অসচেতনতার কারণেই এমন হচ্ছে বলে অনেকের অভিযোগ।

গতকাল এসব এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ত্রি চাকার ইজিবাইক, ব্যাটারী চালিত নিষিদ্ধ রিক্সার চলাচল অব্যাহত রয়েছে। এখানে রয়েছে দেশের বড় বড় লবণ মিল কারখানা। সম্প্রতি নতুন ভাবে যোগ হয়েছে রেলওয়ের কার্যক্রম। যাদের মালামাল বহনে ভারি যান চলাচল অব্যাহত।

তথ্যমতে, ঈদগাঁও বাস ষ্টেশনে অধিকাংশ গাড়িতে কম বয়সী ড্রাইভার আর রাতে হেলপারের ছড়াছড়ি চোখে পড়ার মতো। ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচলের বহর। যেখানে কোনো ট্রাফিক পুলিশের সন্ধান পাওয়া যায়নি। অথচ এলাকার জনগণ মনে করছে, ঈদগাঁও বাস ষ্টেশনে একজন ট্রাফিক পুলিশের দরকার। একজন ট্রাফিক পুলিশের অভাবে নিত্যদিন যানজট আর ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে এলাকার জনসাধারণ।

সরজমিন দেখা গেছে, অসংখ্য নিষিদ্ধ ব্যাটারী চালিত রিকশা, নাম্বার প্লেটবিহীন মোটরসাইকেল, সিএনজি, ডাম্পার, প্রাইভেট কার-সহ বিভিন্ন গাড়ি নিয়ম ভঙ্গ করে চলাচল করতে। অনিয়ম যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে এখানে। চলাচলরত রিকশা ও মোটরসাইকেল আরোহীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখানে কোনো ট্রাফিক পুলিশ নেই। তাই নিশ্চিন্তে আসা যায়। যানজটের কবল থেকে রক্ষা পেতে তারা যে যার মত গাড়ি চালান বলে জানান।

বাস ষ্টেশনে ট্রাফিক পুলিশ কেন নেই সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের আইসি আসাদুজ্জামান বলেন, ঈদগাঁও বাস ষ্টেশনের মত ভাইটাল জায়গায় ট্রাফিক পুলিশের খুব দরকার কিন্তু আমাদের জনবল সংকটের কারণে এসব জায়গায় লোক দিতে পারছিনা। তিনি আরো জানান, তারপরও এলাকার স্বার্থে যানজট নিরসনের জন্য একজন আনসার দেয়া হয়েছে।

তথ্যমতে, ১৯৮৩ সালে জারিকৃত মোটরযান আইন এর ৪ ধারা অনুযায়ী কোন ১৮ বছরের কম বয়সী কোন ব্যক্তি যান চলাতে পারবে না। এতে আরও বলা আছে, ২০ বছরের কম বয়সী কোন ব্যক্তি কোন পাবলিক স্থানে একটি পেশাদার ড্রাইভার হিসাবে মোটর গাড়ির চালনা করতে পারবে না। একজন ড্রাইভারকে ড্রাইভিং এর সময় তার সাথে বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স, গাড়ির নিবন্ধন ডকুমেন্টস, গাড়ির বীমার ডকুমেন্ট, ট্যাক্স টোকেন, ফিটনেস সার্টিফিকেট, রুট পারমিট, (যদি প্রযোজ্য হয়) বহন করতে হবে। এখানে তার কোনটিও নেই। বিশেষ করে ঈদগাঁও পোকখালী-জালালাবাদ সড়ক, গোমাতলী সড়ক, ইসলামপুর সড়ক, ঈদগড় সড়কে বেশির ভাগ ভারি যানবাহনে বালক ও শিশুরা ড্রাইভিং সিটে গাড়ি চালাতে দেখা যায়। দিন রাত সড়কগুলো ডাম্পার-ট্রাকের দখলে চলে যায় বলেও অভিযোগ রয়েছে। বাংলাদেশে শিশুশ্রম নিষিদ্ধ হলেও সড়ক পরিবহনে এর ব্যবহার বৃদ্ধির প্রবণতাকে উদ্বেগজনক বলে বর্ননা করছেন বিশ্লেষকরা। ফলে এই শিশুদের পাশাপাশি যাত্রীদের জীবনও ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকের দাবি, পরিবহন খাতে কোন নজরদারি না থাকায় সেখানে অল্প পারিশ্রমিকে শিশুদের ব্যবহার করছে মালিকপক্ষরা।

পাঠকের মতামত: