ঢাকা,শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

এশিয়াকে ইয়াবা পাগল বানাচ্ছে মিয়ানমার

অনলাইন ডেস্ক : মিয়ানমারের গহিন জঙ্গল থেকে শুরু করে হংকং বা সাংগ্রাইয়ের রাজপথ- এশিয়াজুড়েই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে লড়াই করতে হচ্ছে এক সিনথেটিক নেশাদ্রব্যের সঙ্গে।

গোলাপি রঙের এ মরণনেশার নাম মেথামফেটামিন। প্রচলিত নাম ইয়াবা। এ লড়াইয়ে এখন পর্যন্ত পরাজিতের দলেই রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলো। কোনোমতেই ইয়াবার প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।

এশিয়ায় ইয়াবা উৎপাদনে মিয়ানমার সবার শীর্ষে। এশীয় যুবকদের ইয়াবায় পাগল করছে দেশটি। শনিবার এক প্রতিবেদনে সিএনএন জানায়, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড ও লাওসের গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল জঙ্গল একসময় আফিম ও হেরোইন বাণিজ্যে কুখ্যাত ছিল।

পৃথিবীতে আফিমের মোট চাহিদার অর্ধেকের বেশি জোগান আসত এ অঞ্চল থেকে। জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধবিষয়ক দফতরের (ইউএনওডিসি) তথ্যমতে, ২০১৭ সালে মিয়ানমারেই শুধু ৪১ হাজার হেক্টর জমিতে প্রায় সাড়ে ৭০০ টন আফিম চাষ হয়েছে।

১৯৯৩ সালে দেশটির উৎপাদন ছিল ১৮০০ টন। ক্রিস্টাল আকারের মেথামফেটামিন (মেথ) এবং ইয়াবা (মেথ এর সঙ্গে ক্যাফেইন মিশিয়ে বানানো ট্যাবলেট) দুটোরই আকাশছোঁয়া চাহিদা এশিয়ায়।

মাদক ঠেকাতে ফিলিপাইন ও বাংলাদেশ সরকার রীতিমতো যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযানে নিহত হয়েছে অনেকে। বিশ্লেষকদের মতে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ভৌগলিক অবস্থান এবং ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিই ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত দলগুলোকে নানা সুবিধা দিচ্ছে। মিয়ানমারের গহিনে যে বিচ্ছিন্নতাকামী দলগুলো রয়েছে তারা নিজেরা যেমন ‘যুদ্ধের’ খরচ মেটাতে পপি চাষ করছে।

মিয়ানমার সরকার স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীগুলোকে নিয়ন্ত্রণে আনতে বহুদিন ধরে অন্য নৃত্বাত্বিক গোষ্ঠীগুলোকে ব্যবহার করে আসছে। এ রকম একটি গোষ্ঠী ইউনাইটেড ওয়া লিবারেশন আর্মি (ইউডব্লিউএসএ)।

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে জাতিগত নিধনে সহায়তা করে থাকে ইউডব্লিউএসএ। বিনিময়ে সেনাবাহিনীর সহায়তায় তারা সুবিশাল পপি বাগান গড়ে তুলেছে। চীনের প্রস্তাবিত সিল্করোড প্রকল্পও ড্রাগলর্ডদের জন্য আশীর্বাদ হয়েই এসেছে।

তারা এখন ইয়াবা চোরাচালানে এ অবকাঠামো ব্যবহারের পরিকল্পনা করছেন। শুধু এশিয়ায় সীমাবদ্ধ না রেখে ইয়াবাকে বৈশ্বিক মাদকে পরিণত করতে চায় তারা। এ তিন দেশে উৎপাদিত ইয়াবা এখন পাচার হচ্ছে সড়ক ও সাগর পথে।

বেশ কয়েকটি রুট ব্যবহার করে পৌঁছে যাচ্ছে ঢাকা, কলকাতা, বেইজিং, হংকং, ব্যাংকক, ম্যানিলা, জাকার্তা, সিউল, টোকিও, তাইপে, সিডনি, ওয়েলিংটনসহ এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বড় বড় শহরগুলোতে।

পাঠকের মতামত: