ঢাকা,বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ায় এসএসসিতে নৈর্ব্যক্তিক উত্তরপত্র কেলেঙ্কারিতে চার শিক্ষককে পরীক্ষায় দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি

চকরিয়া প্রতিনিধি ::

২০১৮ সালের এসএসসি পরীক্ষা চলাকালীন কক্সবাজারের চকরিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা কক্ষ পরিদর্শক চকরিয়ার বিএমএস উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. কাইছার লিটনকে পাবলিক পরীক্ষার সকল ধরনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ওই কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা সহকারী কেন্দ্র সচিব জামাল উদ্দিন এবং পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির দুই সদস্য মো. তারেক আজিজ ও মুহাম্মদ জায়েরুল হককেও পাবলিক পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে চূড়ান্তভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, চট্টগ্রামের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত আদেশ গতকাল বুধবার চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রধান এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের হস্তগত হয়। অব্যাহতি পাওয়া চার শিক্ষকের মধ্যে কাইছার লিটন ছাড়া অন্য তিন শিক্ষক চকরিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে বর্তমানে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন।

গত ১৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বিষয়ের পরীক্ষায় অংশ নেওয়া চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠের মেধাবী শিক্ষার্থী তাওরীন তাসনিয়া তাসফির (রোল-১২২৪৮৭, রেজি. নং-১৫১৪৯২২৬৪৪) নৈর্ব্যক্তিক উত্তরপত্র (ওএমআর) পরিবর্তন করে ভিন্ন নৈর্ব্যক্তিক উত্তরপত্র প্রতিস্থাপন করা হয়। এতে শিক্ষার্থী তাওরীন তাসনিয়া তাসফি পরীক্ষার ফলাফলে অকৃতকার্য হয়। এ নিয়ে কোরক বিদ্যাপীঠ কর্তৃপক্ষ এবং তাসফির অভিভাবকের পক্ষ থেকে চ্যালেঞ্জ করা হলে শিক্ষাবোর্ডের একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। এই কমিটির তদন্তে প্রমাণিত হয় ওএমআর শিট পরিবর্তনের বিষয়টি। বিষয়টি নিয়ে ওই সময়ে সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এমনকি ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত কাইছার লিটন উচ্চ আদালতে একটি রিটও করেন তদন্ত কমিটির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে। পরবর্তীতে সেই রিট খারিজ হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চকরিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে শিক্ষার্থীর ওএমআর শিট কেলেঙ্কারির ঘটনা তদন্তে গঠন করা তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয় চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষের কাছে। ওই তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে ওএমআর শিট কেলেঙ্কারিতে শিক্ষক কাইছার লিটন সরাসরি জড়িত থাকার বিষয়টি। এছাড়া ওই কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা সহকারী কেন্দ্র সচিব এবং পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির দুই সদস্যের বিরুদ্ধে প্রমাণিত হয় দায়িত্ব পালনে অবহেলার বিষয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এবং শিক্ষাবোর্ডের শৃঙ্খলা কমিটির ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সভার আলোচ্যসূচি-১৭ এর গৃহীত সিদ্ধান্ত মতে পাবলিক পরীক্ষায় সকল ধরনের দায়িত্ব থেকে চূড়ান্তভাবে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে তাদেরকে।

এ ব্যাপারে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমান চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘এসএসসি পরীক্ষায় ওএমআর শিট কেলেঙ্কারির ঘটনায় চার শিক্ষককে পাবলিক পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া সংক্রান্ত একটি আদেশপত্র আমার হস্তগত হয়েছে। সেই মোতাবেক এসব শিক্ষক যাতে পাবলিক পরীক্ষায় দায়িত্ব পালন করতে না পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

পাঠকের মতামত: