ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

উখিয়ায় এনজিওতে কর্মরত নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশায় কলুষিত হচ্ছে সমাজ

 উখিয়া প্রতিনিধি ::
দেশজুড়ে মাদকের ভয়ঙ্কর নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে। দেশের ৩২ জেলার সীমান্তবর্তী ৫১ পয়েন্ট দিয়ে পাচার করে আনা হচ্ছে হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য। এ ছাড়া স্থলপথ, জলপথ, ও আকাশপথেও দেশে ডুকছে হরেক নামের মাদক। এর মধ্যে মিয়ানমার থেকে আসা ইয়াবার চাহিদা রয়েছে পুরো দেশে।মিয়ানমারের ইয়াবা নাফনদীসহ বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে টেকনাফ থেকে সারা দেশে শক্তিশালী মাদক সিন্ডেকেটের মাধ্যমে সহজেই ছড়িয়ে পড়ছে সারা দেশে।

কক্সবাজারসহ দেশের অভিজাত এলাকার হোটেলে ফোন করলেই পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে কাঙ্ক্ষিত ইয়াবা।আর ইয়াবার সেলসম্যানের ভূমিকায় রয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কমী। রাজনৈতিক প্রভাবে দিন দিন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে এই ইয়াবা মাফিয়ারা। ঢাক-ঢোল পিটিয়ে ও মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা দিয়ে শুরু হওয়া চলমান এ অভিযান বজ্র আঁটুনি ফঙ্কা পেরোতে পরিণত হয়েছে।

অভিযানে মাদক কারবারিদের চুনোঁপুটিরা ধরা পড়লেও রাঘববোয়ালরা থাকছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।ফলে বড়সড় এ অভিযানের ভবিষ্যত নিয়ে সংশয়ের কথা জানিয়েছেন অনেকে। তাদের মতে, এ ধরনের অভিযানে মাদক আপাতদৃষ্টিতে কিছুটা নিয়ন্ত্রিত হলেও সরকারের উদ্দেশ্য “মাদক নিমূল; কার্যক্রম ব্যথ হবে।

বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, পুলিশ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী। কেউ প্রত্যক্ষভাবে জড়িত আবার কেউ পরোক্ষভাবে।গত ৪ জুন থেকে দেশব্যাপী শুরু হওয়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাদক বিরোধী অভিযানে এসব রাঘববোয়াল ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে।

এ অবস্থায় প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধবংসের ইয়াবা ব্যবসার প্রসার হচ্ছে দ্রুত। জুলেখা (ছদ্ননাম ও ইয়াবায় আসক্ত) উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এনজিওতে চাকরিরত আছেন। তিনি ঢাকা থেকে ক্যাম্পে চাকরি করতে আসার সুবাদে সহজেই তরুণ বন্ধুদের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলেন।জুলেখা বন্ধুর সাথে কক্সবাজার হোটেলে গিয়ে উঠেন। হোটেল বয়কে ইশারা করতেই জোগাড় হয়ে গেল ইয়াবা।এক সময় এই তরুণীকে ইয়াবা জোগাড় করতে বহুদূর যেতে হতো। কখনো টেকনাফ, কখনো উখিয়া।

কক্সবাজারের তার এক বান্ধবীর মাধ্যমে খবর পায় হোটেলে সহজেই পাওয়া যায় ইয়াবা। ঈদের ছুটিতে জুলেখা বন্ধুর সাথে কক্সবাজারের অভিজাত হোটেলে রাত্রিযাপনের সময়ে সেবন করে ইয়াবা। একদিকে ইয়াবায় আসক্ত এনজিও নারী জুলেখা অন্যদিকে ইয়াবা ব্যবসায় কোটিপতি বনে যাওয়া তরুণ প্রজন্ম। পাশাপাশি উখিয়ায় রোহিঙ্গাদের কারণে এনজিও নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশায় কলুষিত হচ্ছে সমাজ।

স্থানীয় সালাম সিকদার বলেন, রাস্তা-ঘাটে এনজিও নারী-পুরুষের খোলামেলা চালছলন আমাদের স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছেলে-মেয়েদের ধ্যান-ধারণা পাল্টে যাচ্ছে।২৫ জুন সকালে স্কুল ফাকি দিয়ে উখিয়ার ইনানী কটেজে অনৈতিক কাজে ধরা পড়েছে ৪ জন ছাত্রছাত্রী। যা আমাদের জন্যে লজ্জাকর বিষয়।

পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমার এলাকায় শতকরা ৯০ জন ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত। এদের মধ্যে আবার স্কুল, কলেজ পড়ুয়া ছাত্র রয়েছে অনেক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইয়াবায় আসক্ত এক যুবক বলেন, আমি খবর পায় কক্সবাজারের যে কোন হোটেলে পাওয়া যায় ইয়াবা। সেখানেই পরিচয় আরেক ব্যবসায়ীর সঙ্গে। তার কাছ থেকে খবর পায় এতদূরে নয়, হোটেলে আছে ইয়াবা। তিনি আরেক ব্যবসায়ী হোটেল বয়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন। এমনিভাবে এক জনের পরিচয়ে আরেক জন। এভাবে ঘরের দরজার কাছে চলে আসে ইয়াবা। আগে ইয়াবার জোগাড় করতে ঘুরতে হতো, এখন ইয়াবা নিজেই চলে আসছে হাতের মুঠোয়। ইয়াবার এমন সহজ লভ্যতার চিত্র এখন সারা দেশে।

পাঠকের মতামত: