ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

লামায় মধ্যযুগীয় কায়দায় বোনকে নির্যাতন করল ভাই

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা ::    টাকা না দেয়ায় আপন ছোট ভাই ও বোন মিলে বড় বোনকে মধ্যযুগয়ী কায়দায় নির্যাতন করেছে। বান্দরবানের লামা উপজেলার রুপসীপাড়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড বৈক্ষমঝিরিতে বৃহস্পতিবার (১০ মে) সকালে এই ঘটনা ঘটে। শরীরে সীমাহীন ব্যাথা নিয়ে বিধবা অসহায় রাশেদা বেগম (৪০) লামা সরকারী হাসপাতালে বেডে কাতরাচ্ছে। সে বৈক্ষমঝিরি এলাকার মৃত নুর ইসলামের স্ত্রী।

অপরদিকে মায়ের ব্যাথার আহাজারি শুনে পাশে বসে কাঁদচ্ছে ১৩ বছরের মেয়ে এলমুন নাহার ও ৯ বছরের ছেলে তাজমুল হোসেন। তারা বলছে, আপনারা আমার মাকে ভাল করে দেন। আমার মা মরে গেলে আমরা কার কাছে থাকব। আমাদের মা ভাল হবে তো ?

হাসপাতালে দেখতে গেলে নির্যাতনের শিকার রাশেদা বেগম বলেন, সকালে ছোট ভাই নজরুল ইসলাম ও বোন ফরিদা বেগম আমার বাড়িতে এসে টাকা চায়। আমি টাকা নেই বললে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে লাঠিসোটা দিয়ে দুই ঘন্টা ধরে মারধর করে। আমার বাড়ি বৈক্ষমঝিরি পাড়ার একপাশে নিরিবিলি স্থানে। অনেক চিৎকার করলেও কেউ বাচাঁতে এগিয়ে আসেনি। আমি অনেকবার পালিয়ে যেতে চাইলেও তারা আবার ধরে মারে। আমার ছেলে-মেয়ে ছোট। তারা আমাকে বাঁচাতে পারেনি। সকাল থেকে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। ডাক্তার কিছু ঔষুদ কিনতে সিলিপ দিয়েছে। আমার কাছে টাকা নেই। কিভাবে ঔষুদ কিনব। আমি মনে হয় বাচঁবোনা। আপনারা আমার ছেলে মেয়ে দুইটাকে দেখে রাখবেন। আমার ভাই-বোন মূলত চাচ্ছে আমি যেন এই এলাকা ছেড়ে চলে যাই। তাহলে তারা আমার বসতবাড়ি ও বাড়ির আঙ্গিনায় লাগানো বড় বড় গাছ গুলো ভোগ করতে পারবে। আমি কোথায় যাব ! আমার তো যাবার জায়গা নেই।

অভিযুক্ত নজরুল ইসলামের মুঠোফোনে কল করে তার মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া যায়।

ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক হয়ে বলে ইউপি মেম্বার মো. শাহ আলম বলেন, গুরুতর আহত রাশেদা কে সকালে এলাকাবসি আমার কাছে নিয়ে এসেছিল। আমি সিএনজি দিয়ে হাসপাতালে পাঠাই। তার সারা শরীরে আগাতে চিহ্ন। এইভাবে মানুষ মানুষকে মারতে পারে ! আমি জানতাম না।

এই বিষয়ে লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন বলেন, বিষয়টি আমি জানতাম না। অভিযোগ করলে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

পাঠকের মতামত: