ঢাকা,শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

ফসলি জমির মাটি যাচ্ছে ইটভাটায় পরিবেশ বিপর্যয়ের শংকা, বন্ধের দাবি

লোহাগাড়া প্রতিনিধি ::

লোহাগাড়ার কলাউজান মালি পাড়ায় একটি চিহ্নিত মহল প্রতিদিন কৃষি জমি হতে মাটি উত্তোলন করে চলছে। এসব মাটি পশ্চিম কলাউজানের মালি পাড়া হতে উত্তর দিকে কয়েকটি ইটভাটায় কাঁচামাল হিসেবে সরবরাহ করা হয় এবং শত শত ডাম্পারযোগে এসব মাটি পরিবহনের সময় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাজার ও এলাকায় মারাত্মকভাবে পরিবেশের বিপর্যয় ঘটায়। মাটি আহরণ ও পরিবহন বন্ধের জন্য স্থানীয় শতাধিক অধিবাসী, বাজার কমিটি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে গত মাসের শেষ দিকে বন্ধের দাবি জানিয়ে দরখাস্ত করা হয়েছে।

কয়েকদিন বন্ধ থাকার পর রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় এ কাজ পুণরায় শুরু হয়েছে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন। তারা অবিলম্বে মাটি উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধ করা না হলে বৃহত্তর কর্মসূচি গ্রহণ করবেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

জানা যায়, লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে তারা দরখাস্ত করেছেন এবং যথাক্রমে চট্টগ্রাম– ১৫ আসনের সংসদ সদস্য, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, চট্টগ্রাম বিভাগীয় শিক্ষা অফিসার ও পরিবেশ অধিদপ্তরে অনুলিপি প্রদান করেছেন।

দরখাস্তের এলাকার শতাধিক গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ স্বাক্ষর করেছেন । দরখাস্তখানা সরেজমিনে উপজেলা শিক্ষা অফিসার পরিদর্শন করেন এবং সত্যতা পেয়েছেন বলে জানানো হয়। যেসব প্রতিষ্ঠান পৃথকভাবে আবেদন করেছেন সেগুলো হল যথাক্রমে পশ্চিম কলাউজান বাংলা বাজার উন্নয়ন কমিটি, পশ্চিম কলাউজান শাহ মজিদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, পশ্চিম কলাউজান শাহ মজিদিয়া শিশু একাডেমী, কলাউজান খালাসী পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, খদিজাতুল কুবরা (রাহঃ) মহিলা মাদ্‌রাসা, কলাউজান শাহ্‌ মজিদিয়া ফাজিল মাদ্‌রাসা, পশ্চিম কলাউজান এলাহী মোহাম্মদ (সাঃ) সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম কলাউজান খতিবিয়া দাখিল মাদ্‌রাসা, কলাউজান শাহ ফতেহ আলী হোছাইনিয়া এবতেদায়ী মাদ্‌রাসা অন্যতম।

এসব প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এলাকাটি অত্যন্ত গণবসতিপূর্ণ এলাকা। মালি পাড়া বিলে প্রচুর ধান ও রবিশস্য উৎপন্ন হয়। প্রভাবশালীরা এসব তোয়াক্কা না করে প্রতিদিন ডাম্পারযোগে মাটি কেটে নেয়। স্কুল– মাদরাসার শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠানের যাত্রাপথে ডাম্পারের প্রতিবন্ধকতায় পড়ে যায়। অনেক সময় মারাত্মক দুর্ঘটনা ও ঘটে। কয়েকদিন আগে একটি ছাত্র মারাত্মকভাবে আহত হয় এবং পঙ্গু অবস্থায় দিনাতিপাত করছেন বলে তারা দাবি করছেন। তবে শিক্ষার্থীর নাম–ঠিকানা উল্লেখ করা হয়নি। এ প্রতিনিধি সরেজমিনে ডাম্পার চলাচলের দৃশ্য প্রত্যক্ষ করেন। তাকে জানানো হয় সপ্তাহে দু’দিন বাংলা বাজারে হাট বসে। লাইন ধরে ডাম্পার চলাচলের কারণে ক্রেতা–বিক্রেতারা দুর্ভোগ পোহান।

মাটি ব্যবসায়ীরা প্রভাবশালী বলে প্রকাশ্যে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছেন না বলে বাজার কমিটির পক্ষ থেকে সভাপতি মোঃ দিদার জানিয়েছেন।

লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার দরখাস্ত প্রাপ্তির বিষয়ের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন।

পাঠকের মতামত: