ঢাকা,বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

ইয়াবায় ভাগ্য বদল! চকরিয়ার কোটিপতি নুরুল হুদার

বাসের হেলপার থেকে কোটিপতি নুরুল হুদা, পৃথক অভিযানে টেকনাফে প্লাস্টিকের বস্তা থেকে ৬ লক্ষাধিক পিস ইয়াবা উদ্ধার

অনলাইন ডেস্ক ::

ইয়াবা কারবারে অল্পদিনেই ভাগ্য বদল ঘটেছে চট্টগ্রাম–কক্সবাজার–টেকনাফ রোডের গাড়ির হেলপার (চালকের সহযোগী) নুরুল হুদার। কয়েক বছর আগেও যিনি চালকের সহযোগী ছিলেন তিনি কিনা এখন কোটিপতি! গত শনিবার রাতে নগরীতে ১০ হাজার পিস ইয়াবা ও এক সহযোগীসহ ডিবি পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর তার কোটিপতি বনে যাওয়ার এ রহস্য উদঘাটন করে পুলিশ। নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ–কমিশনার (ডিবি) অলক বিশ্বাস জানান, চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী এলাকার মৃত বদিউর রহমানের পুত্র নুরুল হুদা (৩৯) একজন শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী। তিনি নগরীর নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটির এলিগ্যান্ট টাওয়ারে ৪র্থ তলার একটি ফ্ল্যাট বাসায় থাকেন। যার মাসিক ভাড়া ৩৫ হাজার টাকা।

অলক বিশ্বাস জানান, শনিবার রাত সাড়ে ১১টায় নাগাদ পাঁচলাইশ থানাধীন ২ নম্বর গেইট এলাকার একটি কমিউনিটি সেন্টারের সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। নিজ প্রাইভেট কারে (চট্টমেট্রো–গ–১২–৩৭৮৫) করে ১০ হাজার পিস ইয়াবা নগরীর বিভিন্ন স্থানে পাচারের প্রস্তুতিকালে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় কার চালক মোহাম্মদ করিমকেও (২৭) গ্রেফতার করে পুলিশ। করিম ফটিকছড়ি উপজেলার ধর্মপুর এলাকার নুরুল হকের পুত্র বলে জানান ডিবি কর্মকর্তা অলক।

এদিকে মোহাম্মদ উল্লাহ (৩৫) নামে আরেক ব্যক্তি এ ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত থাকার তথ্য পেয়েছে ডিবি পুলিশ। টেকনাফ উপজেলার মধ্যমপাড়া গ্রামের মৃত হাজী আব্দুল হকের ছেলে মোহাম্মদ উল্লাহ বর্তমানে পলাতক। পুলিশ কর্মকর্তা অলক বিশ্বাস গ্রেফতার নুরুল হুদার বরাত দিয়ে জানান, ইতঃপূর্বে তিনি চট্টগ্রাম–কক্সবাজার–টেকনাফ রোডে শ্যামলী গাড়ির হেলপার (চালকের সহযোগী) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এসময় তিনি টেকনাফ থেকে গোপনে বিভিন্ন সময় ইয়াবা চট্টগ্রাম শহরের এনে পাইকারি ও খুচরা বিক্রয় করতেন। জনৈক আব্দুর রহিমের কাছ থেকে এসব ইয়াবা সংগ্রহ করতেন তিনি। এভাবে ইয়াবা ব্যবসা করে অল্প সময়ে অঢেল সম্পত্তির মালিক বনে যান নুরুল হুদা। পরে তিনি তার ড্রাইভারের সহায়তায় নিজেই ইয়াবাগুলো নগরীর বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করেন বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা অলক। গ্রেফতারের দিনও একই উদ্দেশে তিনি ঘটনাস্থলে অবস্থান করছিলেন বলে জানিয়েছেন ডিবি পুলিশের এ কর্মকর্তা। পুলিশ জানিয়েছে, জব্দ করা প্রাইভেট কারটি নুরুল হুদার স্ত্রীর নামে নিবন্ধন করা। যার মূল্য ১৪ লাখ টাকা। মূলত গাড়িটি ইয়াবা সরবরাহ কাজে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া নুরুল হুদার বিরুদ্ধে চান্দগাঁও ও চকবাজার থানায় ২টি মামলা এবং মোহাম্মদ উল্লাহ’র নামে বাকলিয়া থানায় একটি মামলা রয়েছে বলে জানান ডিবির এই কর্মকর্তা।

এদিকে একই দিন সন্ধ্যায় পৃথক অভিযানে কোস্টগার্ড বাহিনী (পূর্ব জোন) টেকনাফের সেন্টমার্টিনের ছেড়াদ্বীপ সংলগ্ন দক্ষিণ–পূর্ব সমুদ্র এলাকায় একটি বোট থেকে ৬ লাখ বিশ হাজার পিস ইয়াবা জব্দ করেছে।

কোস্টগার্ডের সহকারী গোয়েন্দা পরিচালক ও লে. কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মারুফ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়, সেন্টমাটিন সমুদ্র এলাকায় কোস্টগার্ড সদস্যরা টহলকালে একটি বোট দেখতে পান। এসময় বোটটিকে থামানোর সংকেত দিলে ইয়াবা পাচারকারীরা কয়েকটি প্লাস্টিকের বস্তা ফেলে মিয়ানমারের দিকে পালিয়ে যায়। ফলে কাউকে আটক করতে পারেনি কোস্টগার্ড। পরে ফেলে দেওয়া বস্তাগুলো থেকে ৬ লাখ বিশ হাজার পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়। জব্দকৃত ইয়াবাগুলো টেকনাফ থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান লে. কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মারুফ।

পাঠকের মতামত: