ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

১০ টাকার চাল নিয়ে ডিলারদের চালবাজি

এম. বেদারুল আলম, কক্সবাজার ::
দরিদ্রদের জন্য চালু হওয়া ১০ টাকার চাল নিয়ে চলছে ডিলারদের নানা কারসাজি। কেউ সুবিধাভোগিদের চালের পরিবর্তে আটা কিনতে বাধ্য করছে। কোথাও চাল ডিলারের গুদামে না এনে পথেই বিক্রি করে দিচ্ছে। অনেক ডিলার খাদ্য কার্ড জমা রেখে কিছু টাকা দিয়ে উপকারভোগিদের বোকা বানাচ্ছে। সদরের কয়েকজন ডিলারের বিরুদ্ধে খাদ্য গুদামের কর্মকর্তাদের যোগসাজসে ডিও বিক্রির অভিযোগ ও পাওয়া গেছে। চালের পরিবর্তে আটা বিক্রির কিছু ভিডিও চিত্র এসেছে দৈনিক কক্সবাজার কার্যালয়ে। ফলে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি নিয়ে ডিলার এবং কতিপয় কর্মকর্তাদের যে চালবাজী চলছে তা এখন অনেকটা প্রকাশ্যে এসেছে।
জানা যায়, বাজারে চালের দাম বৃদ্ধির কারনে অসহায় দরিদ্রদের জন্য সরকার প্রতিশ্রুত খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি চালু করে মার্চ থেকে। সাধারণ মানুষের খাদ্য কষ্ট লাগবে খাদ্য মন্ত্রনালয়ের আওতাধীন হতদরিদ্রদের জন্য কেজি মাত্র ১০ টাকায় চাল বিক্রির উক্ত কর্মসূচি হাতে নেয় সরকার। খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির আওতায় কক্সবাজারে ইতোমধ্যে ১০ টাকার চাল বিক্রির জন্য ১৮৩ জন ডিলার নিয়োগ দেওয়া হয়। প্রতি কেজি ১০ টাকা করে মাসে এক পরিবার ৩০ কেজি চাল ডিলারদের কাছ থেকে কেনার সুযোগ পায়। ৮ উপজেলায় খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি সফলভাবে পরিচালনার জন্য ১৮৩ জন ডিলার নিয়োগ দেওয়া হয়। বরাদ্দ দেওয়া হয় ৮৭ হাজার ৭শ ২৩ পরিবারের জন্য ২৬৩১.৬৯০ মে.টন চাল। কিন্তু ডিলাররা সরাসরি চাল উত্তোলনের পর পথে চুপিসারে কালোবাজারে চিহ্নিত সিন্ডিকেটকে বিক্রি করে কিছু নি¤œমানের আটা ক্রয় করে গুদামজাত করে উপকারভোগিদের বিক্রি করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প ভেস্তে যেতে বসেছে। অনেক ডিলার দোকান বিক্রির কারনে কার্ড থাকা সত্ত্বেও চাল কিনতে না পারায় সুফল বঞ্চিত হয়েছে। একটি শক্তিশালী চক্র, ডিলার , তদারকি কর্মকর্তা এবং কালোবাজারি ৭/৮ জন সিন্ডিকেটের পেটে চলে যাচ্ছে অনেক চাল।
জেলা খাদ্য অফিসসূত্রে জানা যায়, খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির আওতায় জেলায় সাড়ে ৮৭ হাজার পরিবারের জন্য ১৮৩ জন ডিলারকে ২৬৩১.৬৯০ মে.টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। উপজেলা ভিত্তিক ডিলার , উপকারভোগি পরিবার এবং বরাদ্দের পরিমান হলো কক্সবাজার সদরে ৬৪৯৮ পরিবারের জন্য ২২ ডিলারকে বরাদ্দ দেওয়া হয় ২৮৪.৯৪০ মে.টন। চকরিয়ায় ১৩১২৫ পরিবারের জন্য ২৮ জন ডিলারকে ৩৯৩.৭৫০ মে.টন। পেকুয়ায় ১০৫৪১ পরিবারের জন্য ১৯ ডিলারকে ৩১৬.২৩০ মে.টন। কুতুবদিয়ায় ৩৯৯৩ পরিবারের জন্য ৯ ডিলারকে ১১৯.৭৯০ মে.টন। মহেশখালীতে ১৩২৬২ পরিবারের জন্য ২৫ ডিলারকে ৩৯৭.৮৬০ মে.টন। উখিয়ার ১০৩২৯ পরিবারের জন্য ২২ ডিলারকে ৩০৯.৮৭০ মে.টন। টেকনাফের ১৬১৫৯ পরিবারের জন্য ৩১ ডিলারকে ৪৮৪.৭৭০ মে.টন। রামুতে ১০৮১৬ পরিবারের জন্য ৭ ডিলারকে ৩২৪.৪৮০ মে.টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়।
এদিকে উপকারভোগিদের তালিকা প্রনয়নে ব্যাপক অনিয়ম এবং স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে। তালিকা প্রনয়ন করার সময় প্রকৃত দরিদ্র পরিবার কিন্তু ভোটের সময় উক্ত জনপ্রতিনিধিদের ভোট দেয়নি সেই অজুহাতে অনেক অসহায় পরিবার বাদ পড়েছে বলে বিভিন্ন ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।

পাঠকের মতামত: