ঢাকা,শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

রবি শষ্যের মূল্য কম পাওয়ায় তামাকে ঝুঁকছেন চাষীরা

লোহাগাড়া প্রতিনিধি ::

লোহাগাড়ার বিভিন্ন চরে ব্যাপকভাবে তামাক চাষ করা হয়েছে। বিধান অমান্য করে তামাক চাষ অব্যাহত থাকায় পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। পরিবেশবাদীরা তামাক চাষ বন্ধের জন্য উপজেলা কৃষি বিভাগসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছেন কিন্তু ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। তারা অনতিবিলম্বে পরিবেশ রক্ষায় তামাক চাষ বন্ধের দাবী জানিয়েছেন। এ প্রতিনিধি গত ২৮ ফেব্রুয়ারী হাঙ্গর ও টংকাবতী তীরে বিভিন্ন চরে সরেজমিন পরিদর্শন করে তামাক চাষবাদ দেখতে পান।

সরেজমিনে দেখা যায় হাঙ্গরকূলে বর চরে অসংখ্য কৃষক রবি শষ্যের বদলে তামাক চাষ করেছেন। তারা বলছেন রবি শষ্যের বাজার মূল্য কম পাওয়ায় তামাক চাষের দিকে বেশী উৎসাহী। এসব চরে তামাক চাষের সাথী ফসল হিসেবে মিষ্টি কুমড়া চাষাবাদ দেখা গেছে। তামাক উঠে যাওয়ার পর বাড়তি ফসল হিসেবে মিষ্টি কুমড়ার ফলন পান কৃষকরা। এটি তাদের বাড়তি আয় বলে এ প্রতিনিধিকে কৃষকরা জানিয়েছেন। তারা অভিমত রেখেছেন অনেক সময় কৃষি অফিসের কর্মকর্তা–কর্মচারীরা তাদের খোঁজখবর নেন না।

বিজ্ঞান ভিত্তিক চাষাবাদ করতে পারেন না বলে অনেক ক্ষেত্রে মাঠের ফসল মাঠেই মারা যায়। তামাক চাষে পুঁজির অভাব হয় না। একটি নির্দিষ্ট কোম্পানী চাষীদের কাছে তামাক চাষের সহযোগিতা দিয়ে থাকেন। তারা মাঠ থেকে তামাক কেটে তন্দুরে শুকানো ও বাজারজাত করা পর্যন্ত সহযোগিতা দিয়ে যান। এলাকাবাসীরা বলছেন, তামাক চাষে ব্যাপক তির কথা জেনেও চাষীরা তা চালিয়ে যান। যারা খবরদারী–নজরদারী করবেন তারা রহস্যজনক কারণে নীরব ভূমিকা পালন করছেন।

লোহাগাড়ার টংকাবতী, হাঙ্গর প্রভৃতি খালের উজানে টংকাবতী চর থেকে নিম্নদিকে কলাউজান পর্যন্ত চরের দু’তীরে তামাক চাষ রয়েছেন। হাঙ্গরের অবস্থাও একই। হাঙ্গর খালের দু’তীরে তামাক চাষের ফলে দিন দিন এলাকার কৃষকরা রবিশষ্য চাষাবাদে উৎসাহ হারানোর কথা বলেছেন। তবে লোহাগাড়া উপজেলা কৃষি অফিসার শামীম হোসেন দাবী করেছেন কৃষকদেরকে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সহযোগিতা না দেয়ার কথা ভিত্তিহীন। কৃষকদের কল্যাণে হাঙ্গর খালের তীরবর্তী নওঘাটা এলাকায় কৃষি ক্লাব, কৃষি সমিতি সহ কৃষক কল্যাণমূলক বিভিন্ন সংগঠন রয়েছে।

এসব সংগঠন মাঠ দিবসসহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করেন। তবে তামাক চাষ প্রতিরোধ মূলক কোন ব্যবস্থা গৃহীত হয়েছে কিনা তা তিনি জানাননি। নাওঘাটা এলাকায়ও তামাক শুকানোর তন্দুর রয়েছে। হাঙ্গর খালের পার্শ্ববর্তী সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে কাঠচোরেরা কাঠ চুরি করে যা তামাকের তন্দুরে ব্যবহৃত হয়। এতে স্থানীয় বিট কর্মকর্তার প্রত্যক্ষ সহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে। বিট কর্মকর্তাকে খোঁজ করে না পাওয়া তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

পাঠকের মতামত: