ঢাকা,মঙ্গলবার, ৭ মে ২০২৪

পেকুয়ায় এস আলম গ্রুপের জায়গা নিয়ে উত্তপ্ত মগনামা: ফের সংঘর্ষের আশংকা, এলাকায় চলছে উত্তেজনা

নিজস্ব প্রতিবেদক, পেকুয়া ::

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ইউনুচ চৌধুরীকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে সন্ত্রাসীরা। এসময় তার বাড়িতে ব্যাপক ভাংচুরও করেছে সন্ত্রাসীরা। ইউনুচ চৌধুরীর স্ত্রী ফেরদৌসি বেগমকেও পিঠিয়ে আহত করেছে সন্ত্রাসীরা। সন্ত্রাসীরা ইউনুচ চৌধুরীর বসতঘরে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাঠ চালিয়েছে। এ ঘটনায় পুরো মগনামাজুড়ে আতংক ছড়িয়ে ছড়িয়ে পড়ে। সন্ত্রাসীরা প্রায় ২০ রাউন্ড গুলি ছোড়ে ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়ে। তবে এ ঘটনায় কাউকে রাত ৯টা পর্যন্ত আটক করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ হামলাকারীদের ধরতে চেষ্টা চালাচ্ছে বলে থানা সূত্রে জানা গেছে। শনিবার (১৩জানুয়ারি) সন্ধ্যায় মগনামা ইউনিয়নের কাকপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

ইউনুছ চেয়ারম্যানের স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, সকাল থেকে সন্ত্রাসীরা আমাদের বসতবাড়ি লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ অব্যাহত রাখে। এসময় স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তা চেয়েও আমরা পাইনি। পরে সন্ধ্যায় মগনামা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিমের নেতৃত্বে কালার পাড়া এলাকার কানা মানিক, পশ্চিম কূল এলাকার জিয়াবুল, কাজী মার্কেট এলাকার আব্দুল করিম, লিটন, আফজলীয়া পাড়া এলাকার কায়সার ও জয়নাল সহ অর্ধশতাধিক সন্ত্রাসী বাড়ীতে হামলা চালায়। এসময় তারা ব্যাপক ভাংচুর চালিয়ে গুলিবর্ষণ করতে করতে আমার স্বামীকে তুলে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতা আমার স্বামীকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করি।

ইউনুছ চেয়ারম্যানকে উদ্ধার করতে গিয়ে স্থানীয় পাঁচ লবণচাষী আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন চান্দার পাড়া এলাকার মোঃ আব্দুর রহিমের ছেলে মোঃ হেলাল (২৫), আকতার হোসেনের ছেলে লোকমান(১৬), মোক্তার হোসেনের ছেলে মোঃ রিদুয়ান(২২), আব্দু জলিলের ছেলে আহমদ নবী (১৮) ও মোঃ ইব্রাহিম (২০)।

পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ও আরএমও ডাঃ মুজিবুর রহমান এমবিবিএস বলেন, আহতের মাথা, চোখ সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত চিহ্ন রয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে চমেক হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।

কক্সবাজার জেলা পরিষদ সদস্য ও পেকুয়া উপজেলা যুবলীগ সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ষড়যন্ত্রমূলক ফাঁসানো মামলায় দীর্ঘ দশমাস কারাভোগ করার পর শুক্রবার (১২জানুয়ারি) বিশাল গণ সংবর্ধনার মাধ্যমে এলাকায় ফিরেন আওয়ামীলীগ নেতা ইউনুছ চেয়ারম্যান। তার ফিরে আসাতে প্রাণসঞ্চার হয় অত্যাচারিত জনসাধারণের। প্রতবাদ মুখর হয়ে উঠে স্থানীয় নির্যাতিত লবণ চাষীরা। বন্ধ করে দেয় স্থানীয় চেয়ারম্যানকে অনৈতিক চাঁদা প্রদান। তাই পরিকল্পিতভাবে তার ইউনুচের উপর এ হামলা চালানো হয়।

পেকুয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মনজুর কাদের মজুমদার বলেন, পূর্ব শত্রুতা এবং এস.আলম গ্রুপের জমির দখল সংক্রান্ত বিষয়ে নিয়ে এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। ইউনুছ চেয়ারম্যানের উপর হামলাকারীদের ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। তবে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মগনামায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছিল।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন এস.আলম গ্রুপের জায়গা দখল বেদখলকে কেন্দ্র করে বারবার এসব ঘটনা ঘটছে। এস আলম গ্রুপের কারণে মগনামায় বারবার অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে। এস আলম গ্রুপের জমির দখল-বেদখলকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি সময়ে মগনমায় দুইটি গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। মগনামা ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। আবারো দখল-বেদখলকে কেন্দ্র করে হামলা-সংঘর্ষের আশংকা করছেন স্থানীয়রা। তাই মগনামা কাকপাড়া নামক স্থানে পুলিশ ফাঁড়ী স্থাপন করে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশের আইজিপির কাছে মগনামার সাধারন জনগণ জোরালো দাবী জানিয়েছেন।

পাঠকের মতামত: