ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

পেকুয়া উপজেলা হাসপাতালে ১৩ বছর বাক্সবন্দি এক্সরে মেশিন!

মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া :
কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলা হাসপাতালে ২০০৪ সালে ইউনিসেফ প্রদত্ত এক্সরে মেশিনটি বাক্সবন্দি অবস্থায় পড়ে থাকার কারণে তা বর্তমানে অচল হয়ে পড়েছে।
বিগত ১৩ বছরে একবারও সরকারের দেয়া এ মেশিনটির সুবিধা নিতে পারেনি সাধারণ মানুষ কিংবা অন্য কেউ।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন, একজন টেকনিশিয়ানের অভাবে ওই এক্সরে মেশিনটি চালু করা সম্ভব হয়নি। অথচ এক্সরে মেশিনের অভাবে এখানকার প্রত্যন্ত
অঞ্চলের হতদরিদ্র রোগীদের স্থানীয়ভাবে অবৈধভাবে প্রতিষ্ঠিত এক্সরে মেশিনে এক্সরে করে প্রতারণার শিকার হচ্ছে।

রেডিওগ্রাফার না থাকায় ১৩ বছর ধরে এক্সরে যন্ত্রটিকে রোগীদের সেবায় ব্যবহার করা যায়নি। একজন রেডিওগ্রাফার পদায়নের জন্য মন্ত্রণালয়ে বার বার
পত্র পাঠানো হয়। কিন্তু মন্ত্রণালয় থেকে এখনও পর্যন্ত কোন ধরনের আশার বাণী পাওয়া যায়নি। এখন এক্সরে মেশিনটি সচল আছে কিনা তাও জানি না।

হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, এক্সরে যন্ত্রের কক্ষটি তালাবদ্ধ। রোগীদের কাউকে এক্সরে করাতে হলে ছুটতে হচ্ছে ২০ কিলোমিটার দূরের চকরিয়ায়। আশেপাশে
মানসম্মত বেসরকারি কোনো রোগ নির্ণয়কেন্দ্র নেই। যে কয়টি আছে তাতে নেই কোন সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সনদপ্রাপ্ত চিকিৎসকও।

শীলখালী ইউনিয়নের দূর্গম জারুলবনিয়ার বাসিন্দা আবদুল হাকিম (৪০) বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এখন পর্যাপ্ত ভালো চিকিৎসক পাচ্ছি আমরা। সব
ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকলেও আগত রোগীদের এক্সরে প্রয়োজন হলে হাসপাতাল থেকে করানোর কোন সুযোগ নেই। যেতে হয় চকরিয়া। সেখান থেকে এক্সরে করিয়ে পেকুয়া ফিরতে ফিরতে দিন পার হয়ে গেলে সেদিন আর চিকিৎসক পাওয়া যায় না। তাই এক দিনের চিকিৎসা নিতে সময় লাগে দুইদিন। এসব কারণে মহা বিপাকে পড়েন রোগীরা। শুধু একজন টেকনিশিয়ানের অভাবে এমন দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে উপকূলীয় উপজেলার হতদরিদ্র সাধারণ মানুষকে।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, ১৯৯৬ সালে ২০ শয্যার পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠিত হয়। ওই সময় হাসপাতালটি উন্নয়ন খাত থেকে পরিচালিত
হতো। ২০০৫ সালে ৩১ শয্যায় রূপান্তরিত হাসপাতালটি ২০০৮ সালের এপ্রিলে স্থানান্তরিত হয় রাজস্ব খাতে।

উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের চিকিৎসা সেবার একমাত্র আশা ও ভরসার স্থান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। আগের চেয়ে চিকিৎসার মান ভালো হলেও এক্সরে যন্ত্র
চালু না থাকায় রোগীদের দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে।

টেকনিশিয়ান না থাকায় ব্যবহৃত না হওয়া যন্ত্রটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, মাসিক সমন্বয় সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়।
কার্যবিবরণীসহ আবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলেও কর্মকর্তারা আমলে নিচ্ছেন না কেন তাও অজানা।

পাঠকের মতামত: