ঢাকা,শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী আর নেই। বাদ আছর লালদিঘী ময়দানে জানাজা

চকরিয়া নিউজ ডেস্ক ::

বর্ষীয়ান রাজনীতিক, মুক্তিযোদ্ধা ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী আর নেই (ইন্নালিল্লাহি…রাজিউন)। নগরীর ম্যাক্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে তিনি শেষ নিঃশ^াস ত্যাগ করেন বলে তাঁর বড় ছেলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল জানান। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। এ ৭৪ বছরের জীবনে তিনি চট্টগ্রামের মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন ১৬ বছর।
তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ প্রয়াত এ নেতার আত্মার শান্তি কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, চট্টগ্রামের মানুষের উন্নয়ন ও কল্যাণে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক মহিউদ্দিনের অবদান অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতও মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুতে শোক জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে কিডনি ডায়ালাইসিসের জন্য মেহেদীবাগের ম্যাক্স হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। পরে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয় বলে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. লিয়াকত আলী জানান।
মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে পৌঁছানোর পর রাত ৩টার পর তাঁর বাবার লাইফ সাপোর্ট খুলে নেওয়ার কথা সাংবাদিকদের জানানো হয়। হাসপাতালে উপস্থিত সাংবাদিকদের নওফেল বলেন, “চট্টগ্রামের মানুষের প্রিয় মানুষ ছিলেন আমার বাবা। ঢাকায় একটু সুস্থ হওয়ার পর তিনি চট্টগ্রামে ফিরে আসতে চেয়েছিলেন। সে কারণেই নিয়ে আসা হয়েছিল। কিন্তু গতকাল হাসপাতালে আনার পর তাঁর কার্ডিয়াক অ্যাটাক হয়। প্রথমে আইসিইউতে নিলেও পরে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয় তাকে। এক পর্যায়ে তাঁর আর কোনো সাড়া না পাওয়ায় সবার সঙ্গে আলোচনা করে লাইফ সাপোর্ট খুলে নেওয়া হয়েছে।”
তাঁর পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে ম্যাক্স হাসপাতালে ভর্তি করানোর পর ৪৮ ঘণ্টা অবজারভেশনে রাখার কথা জানান ডাক্তাররা। তখন ম্যাক্স হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. লিয়াকত আলী খান বলেন, ‘ডায়ালাইসিসের সময় তিনি ডিসকমফোর্ট ফিল করেন। সন্ধ্যার পর থেকে তাকে আইসিইউতে লাইফসাপোর্টে রাখা হয়েছে। তাঁর শরীরের কোনো অর্গানই কাজ করছে না। অবস্থা খুবই সংকটাপন্ন।’ ডা. লিয়াকত আলী খান আরও বলেন, ‘তাঁর শারীরিক অবস্থা একবার খারাপ হচ্ছে, একবার একটু উন্নতি হচ্ছে। প্রেশার কমে যাচ্ছে। এটাকে আমরা সংকটাপন্ন অবস্থা বলছি।’
মহিউদ্দিন চৌধুরীর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটার খবর ছড়িয়ে পড়লে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র নেতারা ম্যাক্স হাসপাতালে ছুটে যান। এসময় শত শত নেতাকর্মী হাসপাতালে ভিড় করেন। সিঙ্গাপুর এবং ঢাকায় চিকিৎসা শেষে গত মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) মহিউদ্দিন চৌধুরীকে চট্টগ্রামে নিজ বাসভবনে নিয়ে আসেন তার স্বজনরা। সিঙ্গাপুরের অ্যাপোলো গ্লেনিগ্যালস হসপিটালে তার এনজিওগ্রাম এবং হার্টের দুটি ব্লকে রিং বসানো হয়েছিল।
মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুর খবরে চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। সকালে মহিউদ্দিনের মরদেহ নগরীর ষোলশহর এলাকায় তার চশমা হিলের বাসায় নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেও নেতাকর্মীরা ভিড় করেন শেষবার তাকে দেখতে।
আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, আজ শুক্রবার আসরের পর বন্দরনগরীর লালদীঘি মাঠে তাদের প্রয়াত নেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে তাকে দাফন করা হবে পারিবারিক কবরস্থানে।

পাঠকের মতামত: