ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

ভিক্ষার চাউলের বাজার ষোলশহর রেল স্টেশনে

vriঅনলাইন ডেস্ক ::   সংখ্যায় প্রায় ২০ জন। তন্মধ্যে কয়েকজন নারীও আছেন। রেল লাইনের ধারে চালের বস্তা নিয়ে পাশাপাশি বসে আছেন ওরা। বেশ কয়েকজন ক্রেতা বস্তার চাল নেড়েচেড়ে দেখছেন। গতকাল শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টার চিত্র এটি। ছোটখাট এই চালের বাজারটি বসেছে নগরীর ৮নং শুলকবহর ওয়ার্ডের ষোলশহর রেল স্টেশনে। এই চালের বাজারের ছবি তোলা শুরু করলে ক্যামেরা দেখে কয়েকজন ক্রেতা সরে যান। তবে অন্য ক্রেতাবিক্রেতাদের সেদিকে খেয়াল নেই। তারা চাল বিকিকিনিতে মগ্ন। তবে সেখানে চাল মাপার জন্য কোন দাঁড়িপাল্লা কিংবা ডিজিটাল পাল্লা নেই। তারা কনডেন্সড মিল্কের কৌটা দিয়েই চাল মেপে দিচ্ছেন। চার কৌটায় এক কেজি। বস্তার কাছে গিয়ে দেখা গেল বিভিন্ন জাতের চাল। একসাথে মিশানো। একই বস্তায় চিকন, মোটা, আতপ, সিদ্ধ সব ধরনের চাল আছে।
প্রায় ৭০ বছর বয়সী চাল বিক্রেতা সাদেক আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, এইগুলিগ্রাম’ (ভিক্ষার চাল) করা চাল। তাই মিশানো। গতকাল তিনি প্রায় ২৫ কেজি চাল এনেছেন। চাল কোথা থেকে সংগ্রহ করেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সারা সপ্তাহ গ্রাম (ভিক্ষা) করে ২৫ থেকে ২৭ কেজি চাল জমা করেন। সপ্তাহের একদিন এখানে এসে বিক্রি করেন। তার বাসা ক্যান্টনমেন্ট এলাকার পাশে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ষোলশহর রেল স্টেশনের কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে যারা ভিক্ষা করেন তারা তাদের চাল, দানছদকার মুরগি স্টেশনে এনে বিক্রি করেন। ভিক্ষা করতে গিয়ে নগদ টাকা যা পান তা সারা মাসে খরচ করেন। তারা মূলত বিকাল বেলা এখানে বসেন। ক্রেতারাও ওই সময়ে আসেন প্রায় চার বছর ধরে গাইবান্ধা থেকে চট্টগ্রামে এসে এই পেশা বেছে নিয়েছেন সাদেক আলী। গাইবান্ধার সাদল্যপুর উপজেলা সদর থেকে কয়েক কিলোমিটার দুরে তার বাড়ি। গ্রামে তারা ছেলেমেয়েরা আছে। এর মধ্যে ছোট ছেলেটা প্রতিবন্ধী। নিজে খেয়ে, বাসা ভাড়া দিয়ে মাসে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা বাড়িতে পাঠান ছোট ছেলের খরচের জন্য। যতদিন ভিক্ষা করার শারীরিক সক্ষমতা থাকবে, ততদিন এভাবে বেঁচে থাকতে চান সাদেক আলী

পাঠকের মতামত: