ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

বাজার তদারকিতে জেলা প্রশাসনের ৬ টিম ।। আজ থেকে কার্যক্রম শুরু, সিটি কর্পো’র মনিটরিং চলছে

bazarঅনলাইন ডেস্ক :::

পবিত্র রমজানকে সামনে রেখে বাজার মনিটরিং শুরু করছে জেলা প্রশাসন। আজ বুধবার থেকে তাদের ৬টি মনিটরিং টিম বাজার তদারকি করবে। এছাড়া সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে মনিটরিং শুরু হয়েছে। গতকালও তারা বক্সিরহাট বাজার মনিটরিং করেছে। মনিটরিং কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে। জানা গেছে, গত ৪ মে চট্টগ্রামের সর্বস্তরের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও ক্যাব প্রতিনিধির সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আজ থেকে বাজার মনিটরিংয়ের সিদ্ধান্ত হয়। রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য ও জামাকাপড়ের বাজারমূল্য স্থিতিশীল রাখতে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রতিবারের মতো এবারও সিটি কর্পোরেশন এলাকার ১৭টি খুচরা ও ২টি পাইকারি বাজার, নগরীর শপিংমল, সুপারশপ, কাপড়ের পাইকারি বাজারে মনিটরিং হবে। এ লক্ষ্যে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শংকর কুমার বিশ্বাস, সৈয়দ মোরাদ আলী, আবদুস সামাদ শিকদার, রঞ্জন চন্দ্র দে, মো. তৌহিদুল ইসলাম ও শান্তা রহমানকে প্রধান করে ৬টি মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে। মনিটরিং টিমে সিটি কর্পোরেশন, ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর, বিএসটিআই, পুলিশ, র‌্যাব, জেলা বাজার কর্মকর্তা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খাদ্য, টিসিবিসহ সরকারের বিভিন্ন বিভাগের প্রতিনিধিরা থাকবেন।

এদিকে গতকাল মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে নবনিযুক্ত জেলা প্রশাসক মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরীর সাথে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম নেতৃবৃন্দের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মমিনুর রশিদ, ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী ও দক্ষিণ জেলা সভাপতি আবদুল মান্নান।

সভায় জেলা প্রশাসক বলেন, খাদ্যে ভেজাল রোধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকারের জিরো টলারেন্স দেখাবে। ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকার প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেবে। মোবাইল কোর্ট নিয়ে হাইকোর্টের সাম্প্রতিক রায়ের কারণে বাজার তদারকিতে কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্ব হলেও, জনস্বার্থ রক্ষায় এ সমস্ত উদ্যোগ আরো জোরদার করার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবে সরকার।

ক্যাব নেতৃবৃন্দ জেলা প্রশাসনের বাজার মনিটরিংসহ ভোক্তা স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সকল বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

এদিকে সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে গতকাল সকালে বক্সিরহাট বাজারে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মূল্যতালিকা ও বাজারদর মনিটরিং করা হয়। মনিটরিংকালে সব দোকানে মূল্যতালিকা টাঙানো এবং সঠিক ওজনের বিষয়টি নিশ্চিত করা এবং যেসব দোকানে মূল্য তালিকা প্রদর্শন করা হয়নি, তাদেরকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মূল্যতালিকা টাঙানোর জন্য নির্দেশ দেয়া হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সনজীদা শরমিন। এসময় কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেটকে সহায়তা করেন।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সনজীদা শরমিন বলেন, রমজানকে সামনে রেখে বাজার মনিটরিং ইতোমধ্যে আমরা শুরু করেছি। আজও (গতকাল) বক্সিরহাট বাজার মনিটরিং করেছি। মনিটরিং কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

মনিটরিংয়ে কোন বিষয়কে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছেণ্ডএমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সাধারণত রমজানে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির একটা প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। আমরা বাজারগুলোতে উপস্থিত হয়ে পণ্যমূল্য বৃদ্ধি না করার জন্য ব্যবসায়ীদের সতর্ক করছি। একইসঙ্গে পণ্যমূল্যের তালিকা টাঙানোর নির্দেশ দিচ্ছি। সঠিকভাবে যেন পণ্যের ওজন করা হয়, সে বিষয়টিও দেখছি।

জেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করা হবে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, শহরের বাজারগুলো যেহেতু আমাদের এখতিয়ারে বা আমাদের নিজস্ব বাজার রয়েছে, তাই বাজারগুলোতে আমরা মনিটরিং করছি। জেলা প্রশাসনও ওনাদের মতো করে মনিটরিং করছেন।

ভেজালবিরোধী অভিযান চালাবে বিএসটিআই

রমজানে চট্টগ্রামসহ সারা দেশে ভেজালবিরোধী অভিযান চালাবে বিএসটিআই। ভেজালের অস্তিত্ব পাওয়া গেলে পণ্যের মূল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে জেল ও বড় অংকের জরিমানা করা হবে।

গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেছেন, সেহরি এবং ইফতারি সামগ্রী হিসেবে খাদ্য ও পানীয় উৎপাদন এবং বিপণন পর্যায়ে যাতে কোনোরকম ভেজাল মেশাতে না পারে, তা নিশ্চিত করার জন্যই ঢাকাসহ সারা দেশে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। মিডিয়ার মাধ্যমে অসাধু কোম্পানি এবং বিক্রেতাদের আগাম সতর্ক করতে এই সংবাদ সম্মেনের আয়োজন করা হয়েছে।

মন্ত্রী জানান, মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা আছে। কিছু দিনের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা এখন স্থগিত আছে। তবে তারা মোবাইল কোর্ট চালু রাখার চেষ্টা করবেন। কারণ এছাড়া ভেজাল নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, খাদ্যপণ্যে ফরমালিনের ব্যবহার অনেকটাই কমে এসেছে। ফরমালিনের অপব্যবহার শতভাগ বন্ধ না হলেও বিষয়টি এখন আর ধর্তব্যের পর্যায়ে নেই। তবে শতভাগ কীভাবে নিশ্চিত করা যায় সে বিষয়ে চেষ্টা করছে সরকার। তিনি বলেন, চলতি ফলের মৌসুমে কমলা, মাল্টা, আপেল, আঙুর, তরমুজ, আম, কলা ও নাশপাতির ওপর পরীক্ষা চালিয়ে এসব ফলে ফরমালিনের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। খেজুরের নমুনা এখনো পরীক্ষাধীন।

এসময় শিল্পসচিব বলেন, ফলের পর এবার মাছেও ফরমালিনবিরোধী অভিযানে যাবেন তারা।

পাঠকের মতামত: