ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

পেকুয়ায় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রকৌশলীসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তরের মামলা

mamla.পেকুয়া প্রতিনিধি :::

ক্সবাজারের পেকুয়ায় পরিবেশ আইন অমান্য করে পুকুর ভরাট করার অপরাধে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের একজন উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীসহ ৫ প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে থানায় পরিবেশ অধিদপ্তর বাদী হয়ে মামলা দায়েরের সাড়ে পাঁচ মাসেও একজন আসামীও গ্রেফতার হয়নি! এ নিয়ে সচেতন মহলে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নও উঠেছে। পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবারের পরিদর্শক জাহানারা ইয়াসমিন বাদী হয়ে গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর পেকুয়া থানায় পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০০০) এর ১৫ (১) ব-বিলের ক্রমিক ৮/১ ধারা মতে মামলাটি দায়ের করেছেন। যার মামলা নং ১৪, (পেকুয়া থানা)। মামলায় আসামী করা হয়েছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (চউক) এর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ও পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের সবজিবন পাড়া গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমানের পুত্র মো. হাসান, পেকুয়া জমিদার বাড়ীর মৃত সিরাজুল হক চৌধুরীর পুত্র মোসাদ্দেক হোসেন চৌধুরী প্রকাশ মানিক মিয়া, মাষ্টার আশেক এলাহীর তিন পুত্র মো. ফোরকান এলাহী, এরফান এলাহী, ফরমান এলাহীসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৭/৮ জনকে আসামী করা হয়েছে।

 পেকুয়া থানায় দায়েরকৃত মামলার এজাহারে বাদী কক্সবাজার পরিবেশ অধিপ্তরের পরিদর্শক জাহানারা ইয়াসমিন লিখিতভাবে উল্লেখ করেছেন, উল্লেখিত আসামীরা পেকুয়া মৌজার বিএস খতিয়ান নং ৮৩৪, ৮৩৫ এর বিএস দাগ নং ২১১০ ও ২১১১ এর স্থিত ১.১৫ একর পুকুর বিগত ২০১৫ ইং এর ডিসেম্বর থেকে ২০১৬ ইং এর ডিসেম্বর পর্যন্ত ভরাটের কাজ করেছিল। গত ৩০/১২/২০১৫ ইংরেজী তারিখ স্থানীয় এলাকাবাসীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অভিযোগের অর্থাৎ পুকুর ভরাটের সত্যতা পাওয়া যায়। এরপর আসামী ফোরকান এলাহী ও ফরমান এলাহীকে পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে পুকুর ভরাটের মাটি অপসারণ করে পুকুরটি পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়। কিন্তু আসামীরা পুকুর ভরাটের কাজ বন্ধ রাখলেও পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনেননি। এরপর কিছুদিন বন্ধ থাকলেও পুকুরের একটি অংশের শরিক বা অংশীদার মানিক মিয়া ও চউকের প্রকৌশলী হাসান পুকুর ভরাট শুরু করে। এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অভিযোগের করে অভিযোগের অর্থাৎ পুকুর ভরাটের সত্যতা পাওয়া যায়। বারবার আসামীদের নোটিশ দেওয়ার পর তারা পরিবেশ অধিদপ্তরের আদেশ অমান্য করেছে। আসামীরা পুকুর ভরাট করে জলাশয়ের জীব বৈচিত্র নষ্ট করাসহ পুকুর ভরাট করে আসামীরা বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) এর ৪ এর (১), (২)ধারা লংঘন করে দন্ডনীয় অপরাধ করেছেন। তাই তাদের বিরুদ্ধে পরিবেশ আইনে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে বলে জানালেন মামলার বাদী।

 অভিযোগের ব্যাপারে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. হাসান এর সাতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ওই পুকুরটি জমিদার বাড়ীর লোকজনের খতিয়ান ভূক্ত জায়গা। তাই তারা কয়েকজন মিলে সেটির কিছু অংশ ক্রয় করেছিলেন। এরপরে সেটি অন্যজনের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। পুকুর ভরাটের সাথে তার কোন ধরনের সম্পৃক্ততা নাই।

অভিযোগের ব্যাপারে মামলার ১ নং আসামী মোসাদ্দেক হোসেন মানিক মিয়ার সাথে গতকাল বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করে বক্তব্য নেওয়ার জন্য চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

 মামলার বাদী পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজারের পরিদর্শক জাহানার ইয়াসমিন জানান, তারা এখনো মামলাটির তদন্ত শুরু করেনি। মামলা দায়েরের পর আসামী গ্রেফতারে কোন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, এ ব্যাপারে আপনাদের পরে জানানো হবে।

 পেকুয়া থানার ওসি তদন্ত মনজুরুল কাদের মজুমদার জানান, পরিবেশ অধিদপ্তরের দায়েরকৃত মামলাটি তদন্তেদর জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা রিকুইজেশন দিলেও আসামীদের গ্রেফতারে উদ্যোগ নিবে পুলিশ। জিইউপে

পাঠকের মতামত: