ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

লবণশ্রমিক থেকে ইয়াবা চোরাচালানে কোটিপতি

yabaaঅনলাইন ডেস্ক :::

চট্টগ্রামের গভীর সমুদ্রে ইয়াবার চালান নিয়ন্ত্রণে গড়ে উঠেছে ২৪ সদস্যের সিন্ডিকেট। গভীর সমুদ্রে ইয়াবার চোরাচালানে দক্ষ এই গ্রুপ। ইয়াবা কেনাবেচার টাকায় গাড়ি-বাড়িসহ গড়ে তুলেছেন বিপুল অর্থ সম্পদ। লবণশ্রমিক থেকে ইয়াবা পাচারের মাধ্যমে অনেকে আজ কোটিপতি।

এই নেটওয়ার্কে উপকূলের বিভিন্ন এলাকার লোকজনকে যুক্ত করেছে তারা। আনোয়ারা, টেকনাফ, চাঁদপুর, পটিয়া, হাতিয়ায় রয়েছে নিজস্ব এজেন্ট। সম্প্রতি র‌্যাবের হাতে এই সিন্ডিকেটের ৯ সদস্য গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর নানা তথ্য।

র‌্যাবের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এই ২৪ জনের সিন্ডিকেটের মূলহোতা মোজাহের ও নুন জলিল। এই সিন্ডিকেটের অন্যদের মধ্যে রয়েছে ইউসুফ ওরফে কালা মনু, আবু, সবুর, রহিম, কাশেম, ফয়েজ, শফিক, ফরিদ, সেলিম, নূর সৈয়দ, জালাল, আবু সৈয়দ, জাহাঙ্গীর, নাছির, সেলিম, ইদ্রিছ, নাশা মিয়া, মাহমুদু হক, লেদু, আফসার, ওসমান ও কালু। এদের মধ্যে দুই মূলহোতার একজন মোজাহেরসহ ৯ জন র‌্যাবের হাতে আটক হয়েছেন। আরেক হোতা নুন জলিলসহ ১৪ জন পলাতক।

সূত্র জানায়, এই সিন্ডিকেটের সবাই এক সময় লবণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। ইয়াবা কারবারে যুক্ত হয়ে রাতারাতি কোটিপতি বনে গেছেন তারা। মার্কেট, গাড়ি-বাড়ি সবই করেছেন। টেকনাফের ইয়াবা চোরাকারবারের হোতা শফিকুর রহমানের হাত ধরে এই সিন্ডিকেট এ পথ ধরে ১৯৮৪ সালে। এরপর তাদের টেনওয়ার্কে ঢুকে পড়ে চাঁদপুরের শীতল, পটিয়ার ওয়াহিদ, টেকনাফের হাবিব। চট্টগ্রামের সুগন্ধা আবাসিক এলাকায় জলিল, মোজাহের ও শীতলের রয়েছে বহুতল ভবন। নাছিরাবাদ হাউজিংয়ে রয়েছে হাবিব ও ওয়াহিদের বাড়ি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মোজাহের তেমন একটা লেখাপড়া শিখতে পারেননি। তবে সন্তানদের পড়াচ্ছেন নামিদামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। এক ছেলে অস্ট্রেলিয়া, আরেক ছেলে নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন। মেয়ে ইংরেজি মাধ্যমের পাঠ চুকিয়ে এখন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করছেন। এলাকায় ‘দানবীর’ হিসেবেও পরিচিতি রয়েছে তার।

মূলত মাছ ধরার ট্রলারকেই তারা ইয়াবা ব্যবসার বাহন হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন। মিয়ানমার থেকে দক্ষিণ ছেড়া দ্বীপের পশ্চিম দিক দিয়ে মোবাইল নেটওয়ার্কের বাইরে থেকে হাতিয়ার দিকে চলে অগ্রসর হয়। সেখান থেকে কাটালিয়া হয়ে আনোয়ারা-গহিরা এলাকার গভীর সমুদ্র দিয়ে ইয়াবা দেশে প্রবেশ করে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারির বাইরে থেকে ইয়াবা চোরাকারবার চালিয়ে যেতেই নেটওয়ার্কের বাইরে দিয়ে চলাফেরা করতেন তারা।

র‌্যাব জানায়, ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে এক কোটি এক লাখ ৪৯ হাজার ইয়াবা ট্যালেট আটক করে শুধুমাত্র র‌্যাব-৭।

গত ১৬ এপ্রিল চট্টগ্রামের গভীর সমুদ্রে অভিযান চালিয়ে ২০ লাখ ইয়াবাসহ ৯ মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করে র‌্যাব-৭। এটি ইয়াবার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ চালান।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ইয়াবার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে কাজ করছে র‌্যাব। যত শক্তিশালী সিন্ডিকেট হোক না কেন কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

পাঠকের মতামত: