ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

১০ লাখ মানুষের চিকিৎসক একজন

57292_x7কুমিল্লা প্রতিনিধি ::

মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রায় ১০ লাখ মানুষের চিকিৎসার জন্য বলতে গেলে রয়েছে ১ জন ডাক্তার। আর একজন ডাক্তারই চালাচ্ছেন ৫০ শয্যার হাসপাতালটি। ফলে মিলছে না প্রত্যাশিত সেবা। ডাক্তার, ওষুধ ও যন্ত্রপাতি সংকটে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে হাসপাতালটিতে। নানা সমস্যায় জর্জরিত হাসপাতালটিতে আগত রোগীদের দুর্ভোগের শেষ নেই। বহির্বিভাগে প্রতিদিন ৩০০ হতে ৩৫০ জন রোগী চিকিৎসা নিতে আসে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়। পর্যাপ্ত পরিমাণে ওষুধ সরবরাহ না থাকায় রোগীরা ওষুধ পাচ্ছে না। আউটডোরে কোনো চিকিৎসক না থাকায় ওএসডি ও উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র বন্ধ রেখে সেখানকার ডাক্তারদের দিয়ে কোনো রকমভাবে চলছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। এমন পরিস্থিতিতে হাসপাতালের সর্বত্র অরাজকতা শুরু হয়ে গেছে। ভেঙে পড়েছে চেইন অব কমান্ড। অসহায় অবস্থায় পড়ে চিকিৎসা বঞ্চিত রোগীরা বিভিন্ন হাতুড়ে ডাক্তারের শরণাপন্ন হচ্ছেন।
কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাসপাতালটিতে ডাক্তারদের ২১টি পদের মধ্যে ২০১৫ সাল থেকে যথাক্রমে শূন্য রয়েছে জুনিয়র কনসালটেন্ট পদে ১০টি ডাক্তারের মধ্যে ৯টিই শূন্য, এর মধ্যে জুনিয়র কনসালটেন্ট (মেডিসিন) ডা. মো. মামুনুজ্জামান হাসপাতালে উপস্থিত না থেকেই বেতন নিচ্ছেন। ৪টি মেডিকেল অফিসার পদে ২টি শূন্য এর মধ্যে ডা. উম্মে কুলসুম শিক্ষা ছুটিতে থাকায় পদটি শূন্য, ডা: পারমিতা ওয়াহিদা কানিজ মাতৃত্ব কালিন ছুটিতে থাকায় এটিও শূন্য, মেডিকেল অফিসার (আয়ুর্বেদীয়) শূন্য, ডেন্টাল সার্জন ডা: সৈয়দ আতিকুর রহমান স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে ডেপুটেশনে, সহকারি সার্জন (আইএমও) ডা: মো: আক্তার হোসেন অনুপস্থিত থেকে বেতন নিচ্ছেন, এনেথসিস্ট ডা. আবদুল্লাহ আরাফাত ঢাকা মেডিকেল কলেজে ডেপুটেশনে। হাসপাতালে ভর্তি রোগীরা সাংবাদিকদের জানায়, রোগীদের রোগ নির্ণয়ের জন্য হাসপাতালটিতে একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার চালু থাকলেও ছোটখাটো রক্ত পরীক্ষার জন্য রোগীদের বাইরে যেতে হয়। যে কয়েকজন রোগী সেই ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরীক্ষা করেন তার টাকা চলে যায় প্যাথলজিস্টের পকেটে। সামান্য পেট ব্যথা নিয়ে রোগী এলেও তাকে কুমিল্লায় রেফার করে দেয়া হচ্ছে। এ হলো মুরাদনগর হাসপাতালে চালচিত্র।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আবু জাহের জানান, হাসপাতালের যে সকল সমস্যা রয়েছে সেইগুলো সমাধান করা হবে। ডাক্তার সংকটের পরও কীভাবে ডাক্তাররা এখান থেকে ডেপুটেশনে গেছেন তা আমার জানা নেই। প্রতি মাসেই আমরা ডাক্তার সংকটের বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হচ্ছে।
ডা. মো. আবু জাহের আরো জানান, সাংবাদিক ভাই আপনারা আর লিখবেন না। আমাদেরকে উপর থেকে খুবই চাপ দেয়। সাংবাদিকদের সঙ্গে ডাক্তারদের সম্পর্ক ভালো নেই নাকি জানতে চেয়েছেন উপর মহল। সাংবাদিকদের সঙ্গে সম্পর্ক ভাল থাকলে ওরা লেখে কেন? মুরাদনগর হাসতাপালে ডা. নেই সারা দেশ জানবে কেন? এ বিষয়ে সিভিলসার্জন মজিবুর রহমান জানান, অচিরেই এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। পদোন্নতি না হওয়ার কারণে এ অবস্থার তৈরি হয়েছে। আমি বিষয়গুলো অবগত আছি। গ্রামে নিয়োগ চিকিৎসকরা বদলি হয়ে অন্যত্র চলে যাওয়ায় মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার সংকট দেখা দিয়েছে।

পাঠকের মতামত: