ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

শীর্ষ মানব পাচারকারী কালাম আটক হলেও অন্যরা অধরা

kalamউখিয়া প্রতিনিদি :::::
উখিয়া উপজেলার স্বরাস্ট মন্ত্রনালয়ের তালিকাভুক্ত মোস্ট ওয়ান্টেড শীর্ষ মানবপাচারকারী আবুল কালাম কে অবশেষে আটক করেছে উখিয়া থানা পুলিশ। গত ১২ মার্চ বিকাল ৫ টার দিকে উপজেলার ব্যস্ততম কোটবাজার এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। তার গ্রেফতারের খবরে অন্যান্য র্শীষ মোস্ট ওয়ান্টেড মানবপাচারকারীদের মধ্যে গ্রেফতার আংতক বিরাজ করলেও তারা গোপনে মানবপাচার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। কালাম গ্রেফতার হওয়ার চিন্থিত অনেক পাচারকারী প্রভাবশালী মহলের মাধ্যমে তোড়জোড় চালাচ্ছে থানা পুলিশকে ম্যানেজ করার জন্য। ফলে অধরাই থেকে যাচ্ছে চিন্থিত তালিকাভ’ক্ত মানবপাচারকারীরা।

সুত্রে জানা গেছে, উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের ছেপটখালী গ্রামের মৃত মাষ্টার শরীফ মোহাম্মদের পুত্র স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের তালিকাভূক্ত আসামী আবুল কালাম দীর্ঘদিন ধরে মানবপাচার করে স্বরাস্ট মন্ত্রনালয়ের মোস্ট ওয়ান্টেড মানবপাচার কারীদের তালিকায় নাম লেখায় । কক্সবাজার উপকুলীয় এলাকাকে টার্গেট করে বেশ কয়েকটিভ সিন্ডিকেট সাধারণ জনগন কে ধোঁকা দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। এসব সিন্ডিকেটের সদস্যরা মানবপাচার করে অল্প সময়ে গড়ে তুলেছে কোটি-কোটি টাকার সম্পদ। অনেকে আঙ্গুল ফুলে কালাগাছে পরিণত হয়েছে তারা। এ বছর শীত মৌসুমের শুরু থেকে প্রসাশনের তালিকায় থাকা শীর্ষ মানবপাচারকারী চত্রু কক্সবাজারের প্রভাবশালী নেতা ও প্রসাশনকে ম্যানেজের করে উপজেলার উপকুলবর্তী জালিয়াপালং ইউনিয়নের উপকূলীয় সোনারপাড়া, ইনানী, ডেইলপাড়া, মোঃ শফির বিল, মনখালী, ছোয়াংখালী, ছেপটখালী ,পাটোয়ার টেক সহ বিশাল সমুদ্র তীরবর্তী এলাকা জুড়ে শক্তিশালী মানব পাচারকারী সিন্ডিকেট মানবপাচার করে যাচ্ছে।

উপকুলীয় এলাকার লোকজন জানায়, শীত মৌসুমের শুরু থেকে সাগর পথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় মানব পাচারকারীরা আবারো প্রকাশ্যে এসে বেপরোয়া ভাবে তাদের মানবপাচার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এ ঘটনায়  তারা রীতিমত উদ্বিগ্ন ও চিন্তিত হয়ে পড়েছে বলে জানান। জনপ্রতি মাত্র ১০/২০ হাজার টাকা নগদ নিয়ে পাচার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে ওই চক্রটি।মানবপাচারকারীদের অবশিষ্ট টাকা মালয়েশিয়ায় গিয়ে পরিশোধ করবে মর্মে অঙ্গীকার দিতে হয় মালয়েশিয়া গামীদের। তবে পাচারকারী চত্রু এসব মালেয়শিয়া গামী যাত্রীদের তাদের নির্ধারিত গন্তব্যে মালেয়শিয়ায় না পৌছিয়ে থাইল্যান্ডের গভীর অরন্যে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন চালায়। পরে নির্যাতনের মাধ্যমে তাদের নির্ধারিত টাকার চেয়ে বেশী আদায়ের মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এলাকার সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যান মেম্বার সহ  প্রভাবশালী রাজনৈতিক একাধিক নেতা পাচারে জড়িত থাকায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন একটু নমনীয় ভাব দেখাচ্ছে। গুটিকয়েক মানবপাচার কারী গ্রেফতার হলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে এলাকায় এসে প্রসাশন তাদের বাড়তি কমিশন নিয়ে চলে যাচ্ছে। উখিয়া উপজেলার সোনারপাড়ার  রেবি আক্তার ও কায়সার জনি ও বেলালের বিরুদ্ধে মানবপাচারের একাধিক মামলা ও সুনিদ্দিষ্ট  অভিযোগ থাকার পর ও তারা প্রকাশ্যে বিচরন করছে। অভিযোগ রয়েছে, রেবি, জনি ও বেলালের প্রতি কক্সবাজারের সরকার দলীয় এক শীর্ষ নেতার আশির্বাদ থাকায় তারা গ্রেফতার এড়িয়ে মানবপাচার  কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া পশ্চিম সোনাইছড়ির আলীর রুস্তম আলী, পূর্ব সোনারপাড়ার লালু মাঝি, পশ্চিম সোনারপাড়ার  নুরুল আবছার, লম্বরীপাড়ার  মফিজুর রহমান , পশ্চিম সোনাইছড়ির শাহ আলম, সোনাইছড়ির আক্তার, পশ্চিম সোনারপাড়ার  সৈয়দ আলম, সওদাগরপাড়ার মফিজ ওরফে , সোনার পাড়ার জয়নাল আবেদিন, পশ্চিম সোনারপাড়ার জাফর মাঝি, সোনাইছড়ির  বেলাল , মীর আহমদ, ফয়েজ আহমদ, কালা জমির ও মোজাম্মেল সহ প্রসাশনের তালিকায় মোষ্ট ওয়ান্টেড মানবপাচারকারী চত্রু প্রকাশ্যে রাতের আধারে মানবপাচার চালিয়ে গেলেও রয়েছে প্রসাশনের ধরাছোয়ার বাইরে। প্রসাশনের তালিকায় থাকা মোষ্ট ওয়ান্টেড ৩০০ জন ব্যাক্তিকে মানবপাচারকারী দালাল হিসেবে চিন্থিত করা হলেও ২/১ জন ছাড়া এদের কারো বিরুদ্ধে পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়নি। সর্বশেষ প্রসাশন শীর্ষ মানবপাচারকারী কালামকে আটক করে। কিন্ত পুলিশের দুর্নীতিবাজ কিছু সদস্যের সহায়তা থাকায় অন্যান্য মানবপাচারকারীরা নির্বিঘেœ মানবপাচার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে স্থানীয় জনগনের অভিযোগ। উপজেলা মানবপাচার প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি আবুল কাশেম জানান, মানবপাচার প্রতিরোধে ব্যাপক ভাবে জনসচেনতামূলক সভা-সেমিনার করে যাচ্ছি। মানবপাচারকারীদের সাথে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যাক্তিবর্গ ও পুলিশের  গভীর সখ্যতা রয়েছে। ফলে স্থানীয়ভাবে মানবপাচার প্রতিরোধে কাজ করেও কোন সুফল পাওয়া যাচ্ছেনা। এ ব্যাপারে উখিয়া-টেকনাফের সহকারী পুলিশ (সার্কেল) ছাইলাউ মারমার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মানবপাচরকারীদের গ্রেফতারের ব্যাপারে পুলিশ যথেষ্ট আন্তরিক। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন চিন্থিত মানবপাচারকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সর্বশেষ শীর্ষ মানবপাচারকারী কালামকে আটক করা হয়েছে। মানবপাচারে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবেনা।

পাঠকের মতামত: