ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪

পেকুয়ায় জমি নিয়ে বিরোধ: পুলিশের উপস্থিতিতে অর্ধ-শতাধিক গুলি বর্ষন, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

pekua-dc-newপেকুয়া প্রতিনিধি :::

পেকুয়ায় জায়গার বিরোধ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। এ সময় একপক্ষের ভাড়াটে অস্ত্রধারীরা পুলিশের উপস্থিতিতে অন্তত ৫০-৬০রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে। ফসলি জমিতে মৎস্য ঘের তৈরিতে লবন পানি প্রবেশ নিয়ে কৃষকদের সাথে প্রভাবশালী চক্রের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রভাবশালী চক্রের লেলিয়ে দেয়া ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা পুলিশের উপস্থিতিতে দিন দুপুরে প্রকাশ্যে গুলি ছোঁড়ে। গুলির বিকট শব্দে এলাকায় জনমনে ব্যপক উদ্বেগ তৈরি হয়। আতংকিত মানুষগুলো ভয়ে দিগবিদিগ ছুটা ছুটি করেছে বলে স্থানীয়রা নিশ্চিত করেছেন। পেকুয়া থানা পুলিশ তিন দফা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তবে পুলিশের ভুমিকা প্রশ্নবিদ্ধ বলে স্থানীয়রা অভিযোগ তুলেছেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের পশ্চিম গোঁয়াখালী বকসুচৌকিদার পাড়া এলাকায় গুলি বর্ষনের এ ঘটনাটি ঘটে। এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের উত্তেজনা বিরাজ করছে। হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। স্থানীয় জমির মালিকরা তিন ফসলি আবাদি জমি লবনাক্ততার করাল গ্রাস থেকে মুক্তি পেতে গনস্বাক্ষর যুক্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ প্রশাসনিক বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে সদর ইউনিয়নের বকসুচৌকিদার পাড়া এলাকায় মৃত.ফুরুখ আহমদের ছেলে ফরহাদুল ইসলাম ছুট্টু, ফখরুল ইসলাম মানিক গং প্রায় ৪০একর জমিতে চিংড়ি ঘের তৈরির জন্য লোনা পানি প্রবেশ করায়। এতে করে পশ্চিম গোঁয়াখালী, দক্ষিন বটতলীয়া পাড়া, জালিয়াখালী, ফুরুকের দ্বিয়াসহ আশ পাশের বিপুল জমি লবনাক্ততায় গ্রাস করে ফেলে। গত দু’বছর ধরে লবনাক্তা ছড়িয়ে পড়ায় এসব এলাকার বিপুল কৃষি জমি অনাবাদি থেকে যায়। বর্তমান শুস্ক মৌসুমেও ওই ব্যক্তিরা এসব জমিতে লবন পানি প্রবেশ বিপুল এলাকা একাকার করে। ওইদিন এলাকাবাসিরা জড়ো হয়ে জালিয়াখালী-রাবার ড্যাম সড়কের রুকুর খালের উপর নির্মিত কালর্ভাট এর মুখ খোলে দেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় ছুট্টু, মৌলভী আব্দু রহিম, মানিকের লেলিয়ে দেয়া ভাড়াটে ১০-১৫জনের অস্ত্রধারীরা লম্বা বন্ধুক নিয়ে ওই স্থানে গিয়ে ব্যাপক গুলি চালায়। এ সময় জমির মালিকরা দ্রুত পালিয়ে যায়। এ ব্যাপারে মাহবুব আলম ফকির, শাহাব উদ্দিন, আরমানুল ওসমান চৌধুরী, নুর মুহাম্মদসহ শতশত এলাকাবাসিরা জানায় ছুট্টু গং সন্ত্রাসী ও অস্ত্রধারীদের নিয়ে তিন ফসলি জমিতে লবন পানি ঢুকিয়েছে। আমরা এলাকাবাসিরা কালভার্টের মুখ খুলতে গেলে আমাদের উপর গুলি চালায়। জমির মালিক আবু তালেব, কামাল উদ্দিন, আরমান, জামাল হোসেন, আবুল শামা, শাহনেওয়াজ চৌধুরী বিটু, খালেদ নেওয়াজ, জাহাঙ্গীর, শফিউল আজম, শওকত ওসমান, বুলবুলি, আব্দুল করিম, আনোয়ারা বেগম, ছিদ্দিক আহমদ, আতিকুর রহমান জানায় ওইবিলে আমাদের বিপুল জমি আছে। ছুট্টু গংদের আছে মাত্র ২১কানি। কিন্তু তারা সমস্ত জায়গায় লোনা পানি ঢুকিয়ে জবর-দখল করার চেষ্টা করছে। জমি থেকে লোনা পানি বের করার জন্য কালভার্টের মুখ খোলে দেয়ার চেষ্টা করলে বিলহাসুরা এলাকার হামিদ, শাহাব উদ্দিন, নেজাম উদ্দিন, সাক্কু, আজম, জালিয়াখালী এলাকার বশির আহমদ, জাহেদ, ফারুকসহ ১০-১৫জনের ভাড়াটে অস্ত্রধারীরা আমাদের লক্ষ্য করে অন্তত ৫০-৬০রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে। পুলিশ ছুট্টুর বাড়িতে অবস্থান নেয়। আমাদেরকে হঠাতে পুলিশ ও সন্ত্রাসীরা এক সাথে ছুট্টুর বাড়ি থেকে বের হয়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতিতে তারা গুলি চালায়। পুলিশ মুলত অস্ত্রধারীদের পক্ষে প্রকাশ্যে অবস্থান নিয়েছে। সেটি শতশত লোকজন প্রত্যক্ষ করেছে। এ ব্যাপারে পেকুয়া উপজেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি ফরিদুল আলম জানায় দিন দুপুরে পুলিশের সামনে এ ভাবে গুলাগুলি মেনে নেয়া যায়না। পুলিশ সরাসরি একটি পক্ষের অনুচর হয়েছে। উপজেলা আ’লীগের সাধারন সম্পাদক আবুল কাসেম জানায় এখানে আমাদের দলীয় নেতাকর্মীদের ব্যক্তি মালিকানা জমি রয়েছে। তারা চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের নিয়ে সব জমি জবর দখল করে লোনা পানি ঢুকিয়ে দিয়েছে। লোকজন আমাকে বলেছে পুলিশের সামনে গুলি করেছে। উপজেলা আ’লীগ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহনেওয়াজ চৌধুরী বিটু মিয়া জানায় এ বিলে আমার ও আমার ভাইদের বিপুল জমি আছে। ছুট্টু গং এ জমিও গায়ের জোরে দখল করে রেখেছে। পুরো এলাকা লবন পানিতে ছেয়ে গেছে। লোকজন কালভার্টের মুখ খোলতে গেলে ছুট্টুর ভাড়াটে অস্ত্রধারীরা গুলি করে। পুলিশ সরাসরি তাদের কাছে বিক্রি হয়ে গেছে। না হলে পুলিশের সামনে কিভাবে এত গুলি ছোঁড়ে। পেকুয়া থানার এস.আই কামরুল ইসলাম জানায় খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পুলিশ পৌঁছার আগে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে গেছে। তবে পুলিশের সামনে গুলি বর্ষনের কথা সরাসরি অস্বীকার করেছেন তিনি।

#####################

পেকুয়ায় কবির আহমদ চৌধুরী বাজার বনিক সমিতির নির্বাচন কাল, ৬টি পদের জন্য প্রার্থী হয়েছে ১৪জন

পেকুয়া প্রতিনিধি :::

পেকুয়ায় সর্ববৃহৎ বানিজ্যিক কেন্দ্র আলহাজ¦ কবির আহমদ চৌধুরী বাজার (পেকুয়া বাজার) বনিক সমিতি পেকুয়া ব্যবসায়ী কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লি.এর নির্বাচন কাল (১৯জানুয়ারী বৃহষ্পতিবার)। ত্রি-বার্ষিক নির্বাচনকে ঘিরে ব্যবসায়ী ও সাধারন ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক কর্ম ব্যস্ততা ও প্রানচাঞ্চল্য পরিলক্ষিত হয়েছে। আগামি কাল বৃহষ্পতিবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহন চলবে। নির্বাচনে ৬টি পদের জন্য ১৪জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। সভাপতি পদে ৩জন প্রার্থী ভোট যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। সেক্রেটারী পদের জন্য ২জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। সহ-সভাপতি একটি পদের জন্য ২জন প্রার্থী প্রতিযোগিতা করছেন। অপরদিকে ৩টি ডিরেক্টর পদে ৭জন প্রার্থী হয়েছেন। পেকুয়া বাজার ব্যবসায়ী কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লি.এর এটি ৮ম ব্যবস্থাপনা নির্বাচন অনুষ্টিত হতে যাচ্ছে। মুলধনী ওব্যবসায়ীক প্রতিষ্টান হিসেবে এ প্রতিষ্টান পেকুয়ায় অত্যন্ত পরিচিতি। এর নির্বাচনকে ঘিরে গত কয়েকদিন ধরে পেকুয়ার বানিজ্যিক কেন্দ্রসহ সদর ইউনিয়ন ও পাশ^বর্তী ইউনিয়ন সমুহতে নির্বাচনী আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে। জানা গেছে মোট ১৭২৫জন ভোটার ভোট প্রয়োগে অংশ নিবেন। এরই মধ্যে নির্বাচনকে ঘিরে জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে। পোষ্টার ও ব্যানারে ছেয়ে গেছে বাজারসহ আশপাশের এলাকা ও অলিগলি। প্রার্থীরা প্রতিক সম্বলিত নিজ নিজ পোষ্টার বিলি করেছে। মগনামা-চকরিয়া সড়কের পেকুয়া বাজার পয়েন্টে সড়কে টাঙ্গানো হয়েছে রংবেরঙ্গের পোষ্টার। নির্বাচনে সভাপতি পদে বর্তমান সভাপতি হাজ¦ী আকতার আহমদ, সাবেক সেক্রেটারী শহিদুল ইসলাম ও পেকুয়া সমবায় কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লি.এর সভাপতি মাষ্টার নাছির উদ্দিন প্রার্থী হয়েছেন। সেক্রেটারী পদে বর্তমান সেক্রেটারী মো.মিনহাজ উদ্দিন ও হাজ¦ী গিয়াস উদ্দিন লড়ছেন। সহ-সভাপতি পদে বর্তমান সহ-সভাপতি মো.হোছাইন প্রকাশ মাছন মিকার ও আজিজুর রহমান ভোট করছেন। ডিরেক্টর পদে বর্তমান দু’ডিরেক্টর ওসমান গনি ও শাহেদ ইকবালসহ ৭জন প্রার্থী হয়েছেন। এদের মধ্যে মো.শফি, জাকের হোসাইন, সমবায় কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লি.এর ডিরেক্টর নাজেম উদ্দিন নাজু, আব্দু রহিম ও সাঈদ মো.মনির উদ্দিন নতুন মুখ। নির্বাচনকে ঘিরে প্রার্থীদের মধ্যে প্রানপন ভোটযুদ্ধ চলছে। তবে ভোটাররা নির্বাচনের ঠিক শেষ মুর্হুতে সব হিসাব নিকেশ শেষ করেছে। বিশ্লেষন করছেন প্রার্থীদের যোগ্যতা, ভিত্তি, মনোবল ও অভিজ্ঞতা। পেকুয়া বাজারের ব্যবসায়ী ও ভোটারদের কাছে নির্বাচন নিয়ে মুল্যায়ন ও জরিপ চলছে। ভোটাররা জানিয়েছেন সবদিক বিবেচনায় বর্তমান পদে যারা আসীন রয়েছে তারা সর্বাধিক শক্তিশালী প্রার্থী। সপ্তম কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লি.নির্বাচনে যারা বিজয়ী হয়ে তিন বছর ধরে দায়িত্ব পালন করছেন ভোটাররা তাদের প্রতি অত্যান্ত আস্থাশীল। তিন বছরে ওই প্রতিষ্টানের ব্যাপক অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হয়েছে দাপ্তরিক কাজে। পেকুয়া বাজারের বেশ কিছু উন্নয়ন হয়েছে বর্তমান কমিটির মাধ্যমে। বাজার সমিতির কার্যালয় সম্প্রসারন হয়েছে। পানি ও পয়ঃনিস্কাশনের জন্য পাশ^বর্তী কহলখাল খনন করা হয়েছে। মসজিদ সড়ক ও মুড়ি গলিতে ব্রিক সলিন করা হয়েছে। পান বাজার সড়ক সিসি ঢালাই করা হয়েছে। তহশিল অফিস সড়ক পিচ দ্বারা উন্নয়ন করা হয়েছে। মাছ বাজার ও পান বাজার সড়কে নালা তৈরি হয়েছে। বাজারে ব্যবসায়ীদের জন্য শেডে টিনের ছাউনি দেয়া হয়েছে। হকার মার্কেটে স্থাপন করা হয়েছে নলকুপ। এছাড়া ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা বলয় তরান্বিত করা হয়েছে। এক সময় বাজারের ব্যবসায়ীরা পেশি শক্তির কাছে প্রতিনিয়ত নির্যাতিত, লাঞ্চিত ও হয়রানির শিকার হত। আকতার আহমদ সভাপতি ও মিনহাজ উদ্দিন সেক্রেটারী হওয়ার পর এসব দুরীভুত হয়েছে। ব্যবসায়ীদের সম্মান বৃদ্ধি পেয়েছে। সহ-সভাপতি মাছন মিকার, ডিরেক্টর শাহেদ ইকবাল ও ওসমান গনি পেকুয়া বাজারের অত্যন্ত নির্ভর ব্যবসায়ীক। তারা নীতির প্রতি অবিচল ছিল। সর্বোপুরি বর্তমান নেতৃত্ব ব্যবসায়ীদের স্বার্থকে সবচেয়ে প্রাধন্য দিয়েছেন। ব্যক্তি স্বার্থের চেয়ে তারা সমিতির স্বার্থকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। গত কিছুদিন আগে সওজ কর্তৃপক্ষ পেকুয়া বাজারে উচ্ছেদ অভিযানের জন্য ঘোষনা দেন। বর্তমান কমিটির বিচক্ষনতা ও বাস্তব উদ্যেগের ফলে এসব বন্ধ হয়ে যায়। এরফলে বাজারের শতশত ব্যবসায়ী বিশাল ক্ষতি থেকে রক্ষা পেয়েছে। পাশা পাশি বিকল্প সড়ক হিসেবে পেকুয়া বাজারের দক্ষিন পাশে^ কহল খালের ওপার দিয়ে সড়কটি সম্প্রসারনের জন্য বিকল্প সড়ক ব্যবস্থা জোরদার করতে তারা সক্ষম হয়েছে। এনিয়ে তারা ব্যপক প্রচেষ্টা ও লবিং করেছেন। বর্তমান নেতৃত্ব সর্বজন প্রশংসনীয় বলে ভোটাররা অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

 

পাঠকের মতামত: