ঢাকা,শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

নিষ্ঠুর পৃথিবীকে ঝাঁকুনি দিলেন শের আলী!

15338756_1244400005598300_3686059366223291473_n-1শাহেদ মিজান, কক্সবাজার :
আধুনিকতার যাঁতাকল ও বৈজ্ঞানিক উৎকর্ষতার চাপে দিনে দিনে আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়ছে মানুষ। এই চাপের জীবনে অন্যকে নিয়ে ভাবার ফুরসৎ কই! এই কারণে পৃথিবীজুড়ে মানবতা শব্দটির পরিধি ছোট হয়ে গেছে অনেক আগেই! নিজের স্বার্থের জন্য মুহুর্তে জলাঞ্জলি দিচ্ছে মানবতাকে। যার প্রকৃষ্ট উদাহরণ হতে পারে পাশের মিয়ানমার বা মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো। যেখানে শুধু মানুষ নয়; হাজার নিষ্পাপ শিশুর জীবন প্রদীপ নিমিষেই নিভে যাচ্ছে মানবরূপী দানবদের বুলেটের আঘাতে। এই গেলো বিশ্বপ্রেক্ষাপটের কথা। দেশেও ঘটছে শিশুর হরণের অহরহ ঘটনা। এখানেও মানবরূপী দানবদের নিষ্ঠুরতার বলী হয়ে কত শিশুর জীবন প্রদীপ নিভে যাচ্ছে তার ইয়তা নেই! এমনকি জন্মদাত্রী মায়ের হাতেও হন্তা হচ্ছে অনেক শিশু কত শিশুর জীবন! তারপরও পৃথিবীর বুকে থেকে যায় কিছু মানবতাবাদী প্রেমিক। পুলিশ কর্মকর্তা মেহের আলীই এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।


১১ ডিসেম্বর কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের রামু উপজেলার পানিরছড়া এলাকায় ১১ ডিসেম্বর যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে গেলে বাসের নিচে অন্যান্য যাত্রীদের সাথে তিন ঘন্টা চাপা পড়ে থাকে ছোট্ট একটি শিশু উম্মে হাবিবা। অনেক চেষ্টার পর সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় রক্তাক্ত শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালের নেয়ার জন্য দৌড়ানো শুরু করে দেন স্থানীয় বাসিন্দা পুলিশ সদস্য শের আলী। শুধু কী তাই? অপরিচিত এই শিশুটির জন্য তখন চিৎকার করে কাঁদতে থাকেন চট্টগ্রাম ডিবি পুলিশে কর্মরত শের আলী। তিনি শুধু নিজে কাঁদেননি। তিনি কাঁদিয়েছেন সেখানকার উপস্থিত হাজার হাজার জনতাকেও। কাঁদিয়ে দিয়েছেন মানবতাবাদকে। শের আলীর এই মানবপ্রেমী কান্নার দৃশ্যটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে ছড়িয়ে গেছে পৃথিবীজুড়ে। এতে শের আলী পরিণত হয়েছেন এই যুগের মানবতাবাদীদের আইকন! তার দৃশ্যটি নি:সন্দেহে সব মানুষকে আরো একবার স্মরণ করিয়ে দিয়েছে মানবতাপ্রেমই শ্রেষ্ঠ ধর্ম! শের আলীর বিরল এই মানব নিয়ে ফেসবুকসহ সব সামাজিক মাধ্যমে তুমুল আলোচনা। সবাই তাঁকে আখ্যায়িত ‘শের আলী’ই এই যুগের হাতেম তাই। এই দৃষ্টান্ত দেখিয়ে মানবতার সাথে আমাদের দেশের পুলিশ বিভাগকে একটা ঝাকুনি দিয়ে গেছেন শের আলী-এমন অভিমত উঠে এসেছে।
ফেসবুকে শের আলীকে নিয়ে এক স্ট্যাটাস দিয়েছেন, যমুনা টিভির স্টাফ রিপোর্টার ইমরুল কায়েস চৌধুরী (মিস্টার চৌধুরী)। তিনি লিখেছেন, এই হলো মানবতা- আজ কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যাত্রীবাহি বাস নিয়ন্ত্রন হারিয়ে উল্টে গেলে বাসের নিচে অন্যান্য যাত্রীদের সাথে তিন ঘন্টা চাপ পড়ে থাকে ছোট্ট শিশুটি। অনেক চেষ্টার পর সেনাবাহিনীর সহযোগিতা রক্তাক্ত শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালের নেয়ার জন্য দৌড়ানো শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দার পুলিশ সদস্য শের আলী। অপরিচিত এই শিশুটিকে বাঁচানোর জন্য তখন চিৎকার করে কাঁদতে থাকে চট্টগ্রাম ডিবি পুলিশে কর্মরত শের আলী। শের আলীর কান্না দেখে উপস্থিত হাজার হাজার জনতাও চোখের পারি ধরে রাখতে পারেনি। শের আলী আর হাজারো মানুষের দোআ আর কান্না আল্লাহ কবুল করেছেন। শিশু উম্মে হাবিবা এখন আশংখা মুক্ত। এই হলো মানবতা।। জয় হোক মানবতার।

পাঠকের মতামত: