ঢাকা,বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

পেকুয়ায় কালভার্টের মুখ বন্ধ করে দোকান নির্মান, মালামাল জব্দ

pekua,,পেকুয়া প্রতিনিধি :::

পেকুয়ায় কালভার্টের মুখ বন্ধ করে নির্মিত হচ্ছে দোকান। একটি প্রভাবশালী চক্র পাহাড়ি প্রবাহমান যাদুখালী ছড়ায় স্থাপিত কালভার্ট এর মুখ বন্ধ করে সেখানে দোকানঘর নির্মানকাজ অব্যহত রেখেছে। এদিকে প্রবাহমান ছড়ায় অবৈধ স্থাপনা নির্মানকাজ বন্ধ করে দিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসন। এ সময় পেকুয়া থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই স্থান থেকে বেশকিছু নির্মান সামগ্রি জব্দ করে। গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার টইটং ইউনিয়নের ধনিয়াকাটা বটতলা বাজার থেকে মালামাল জব্দ করেছে পুলিশ। স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় আঞ্চলিক মহাসড়ক (এবিসি সড়ক) টইটং ইউনিয়নের ধনিয়াকাটা বাজার পয়েন্টে কালভার্ট সংলগ্ন স্থানে দোকানঘর নির্মান বাস্তবায়ন করছে ধনিয়াকাটা এলাকার মৃত.আমিন শরীফের ছেলে সৌদি প্রবাসি আইয়ুব আলী। তিনি কালভার্টের মুল ফটক বন্ধ করে ওই স্থানে নির্মান করছেন একটি পাকা দোকান। কালভার্টটি যাদুখালী ছড়ায় নির্মিত হয়েছে। উপজেলার বারবাকিয়া ও টইটং ইউনিয়নের সিমান্তবর্তী যাদুখালী প্রবাহমান ছড়াটি পাহাড়ি অববাহিকা থেকে উজানের দিকে নেমে এসেছে। শত বছর ধরে ওই ছড়া দিয়ে পানি চলাচল করছে। ওই ছড়া দিয়ে পানির প্রবাহ সরাসরি পাহাড় থেকে টইটংখালে নামছে। এদিকে সম্প্রতি ছড়ার অর্ধাংশ জবর দখল করে ওই ব্যক্তি কালভার্টের মুখে তৈরি করছে একটি দোকানঘর। স্থানীয়রা জানায় যাদুখালী ছড়া বারবাকিয়া ও টইটং ইউনিয়নের পানি চলাচলের অন্যতম মাধ্যম। বর্ষায় পানি নিচের দিকে নেমে গেলেও শুস্ক মৌসুমে এর পানি দিয়ে টইটং ও বারবাকিয়া ইউনিয়নের বিপুল এলাকায় ফসল ও সবজির চাষ হয়। ছড়াটি বর্তমানে দখল উৎসবে মেতেছে প্রভাবশালীরা। এতে করে সরু হয়েছে ওই ছড়াটি। বর্তমানে অনেকটা মরা ছড়ায় পরিনত হওয়ায় বর্ষায় পানির প্রচন্ড ¯্রােত বাধ উপচিয়ে লোকালয় প্লাবিত হচ্ছে।  এরমধ্যে উপক্রম হয়েছে ধনিয়াকাটা বাজারের কালভার্টের মুখ বন্ধ হওয়ার। প্রবাসি আইয়ুব আলী স্থাপনা নির্মান করছেন কালভার্টের একদম মুখে। ফলে দু’টি ফটকের মধ্যে কালভার্টের একটি ফটক নিষ্প্রভ হয়ে যাওয়ার মত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা যাদুখালী ছড়ার গতি ও ¯্রােতধারা স্বাভাবিক রাখতে কালভার্টের স্থানে স্থাপনা নির্মানের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তারা এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। এমনকি এ অপতৎপরতা রুখতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। টইটং ও বারবাকিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দরা জানায় যাদুখালী ছড়ার প্রধান পানি চলাচলের মুখ হচ্ছে ধনিয়াকাটা বাজারের এবিসি সড়কের উপর নির্মিত ওই কালভার্টটি। সেটি রুদ্ধ হয়ে গেলে দু’ইউনিয়নের ১০-১৫হাজার মানুষ চরম ক্ষতিগ্রস্ত হবে। টইটং ইউনিয়নের ধনিয়াকাটা, মিয়াজিমুরা, হারকিলার ঝিরি, ঢালারমুখ, আবাদিঘোনা, ভেলুয়ারকাটা ও বারবাকিয়া ইউনিয়নের মগঘোনা, চাকমারঢুরি, পাহাড়িয়াখালী, ছনখোলারজুম, কাদিমাকাটা, নয়াকাটা, বারাইয়াকাটাসহ বিপুল গ্রাম বর্ষার সময় পানিতে তলিয়ে যাবে। একইভাবে এসব গ্রাম শুস্ক মৌসুমে শুকিয়ে যাবে। সম্পুর্ন বন্ধ হয়ে যাবে চাষাবাদ ও ফসল উৎপাদন। এ ব্যাপারে টইটং ইউপির সদস্য হেলাল উদ্দিন ও ছাত্রলীগ সম্পাদক মো.বাহাদুর, স্থানীয় জহির উদ্দিন, রিদুওয়ানুল হক জানায় এ ছড়াটি আমাদের প্রান। এর পানি দিয়ে আমরা ক্ষেত খামার করি। বর্ষার সময় প্রায় ২০মাইল উজান থেকে পাহাড়ি পানি ভাটির দিকে নেমে আসে। কালভার্টের মুখ বন্ধ হয়ে গেলে ছড়াটি মরুতে পরিনত হবে। এভাবে হলে কালভার্টটি পানির ¯্রােতের আঘাতে বিধ্বস্থ হতে পারে। বর্ষার সময় পানির আঘাতে বাধ উপচিয়ে পানি এমনি লোকালয়ে প্রবেশ করে বিপুল এলাকা প্লাবিত হয়। কালভার্টের মুখে বিল্ডিং হলে ঝুকি ব্যাপক আকার ধারন করবে। পেকুয়া থানার এসআই কামরুল হাসান জানায় খবর পেয়ে সকালে ওই স্থানে গিয়েছি। কালভার্টের একটি ফটক ভরাট করে দোকান নির্মানকাজ চলছিল। পুলিশ যাওয়ার খবর পেয়ে তারা পালিয়ে যায়। কিছু নির্মান সামগ্রি জব্দ করেছি। কাজ না করতে বলা হয়েছে। টইটং ইউপির চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী জানায় ছড়াটি অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন। বিষয়টি আমি জেনেছি। কাজ বন্ধ করতে আমি সেখানে পরিষদ থেকে গ্রাম পুলিশ পাঠিয়েছি।

পাঠকের মতামত: