ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

পেকুয়ায় অধিগ্রহনকৃত জমি নিয়ে চাষিদের অনিশ্চিয়তা, হ্রাস পাবে ২০হাজার মে.টন লবন

soltপেকুয়া প্রতিনিধি :::

পেকুয়ায় এবার উৎপাদনে প্রায় ২০ হাজার মে.টন লবন হ্রাস পাওয়ার শংকা তৈরি হয়েছে। চলতি ২০১৬-১৭ সনের লবন উৎপাদন মৌসুমে উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের দক্ষিন মগনামা এলাকায় প্রায় ৪২০একর জমিতে চাষাবাদ নিয়ে অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে। সাব-মেরিন নৌ-ঘাটি স্থাপনের জন্য ওই জমি অধিগ্রহন করে সরকার। অধিগ্রহনকৃত এসব জমিতে লবন উৎপাদন হ্রাস পাওয়ার সম্ভবনা তৈরি হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে লবনের সর্বোচ্চ মুল্য বৃদ্ধি থাকায় চলতি বছরে লবন উৎপাদনের জন্য উপকুলের বিভিন্ন এলাকায় চাষিরা আগেভাগে মাঠ প্রস্তুতির কাজ শুরু করেছে। আশা করা যাচ্ছে আবহাওয়া লবন উৎপাদনের অনুকুলে থাকলে চলতি বছরের ডিসেম্বরের শুরুতে প্রায় জমিতে উৎপাদিত হবে লবন। তবে উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের বিপুল লবন চাষি সাব-মেরিন নৌ-ঘাটি স্থাপনের জন্য জমি অধিগ্রহন হওয়ায় চরম বেকায়দায় পড়েছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগ অধিগ্রহনকৃত জমিতে অনুপ্রবেশ সংরক্ষিত করার জন্য সিমানা চিহ্নিত করে সাইন বোর্ড টাঙ্গিয়েছেন। গত কিছুদিন আগে মগনামায় অধিগ্রহনকৃত ভুমির মালিকদের অনুকুলে চেক বিতরন কার্যক্রমের সুচনা করা হয়েছে। নৌ-বাহিনীর পক্ষ থেকে প্রকল্প বাস্তবায়নে চেক বিতরনের আনুষ্টানিকতা সম্পন্ন করতে মগনামা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এক আলোচনা সভা হয়েছে। মগনামা ইউনিয়ন পরিষদ ওই সভার সমন্বয় করেন। জেলা প্রশাসক মো.আলী হোসেন ও নৌ-বাহিনীর কর্মকর্তরা ভুমির মালিকদের নিকট চেক তুলে দেন। ওইদিন অনুষ্টিত সমাবেশে স্থানীয় লবন চাষিদের পক্ষে জোরালো বক্তব্য উপস্থাপন করেন জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ। বলা হয়েছে মগনামার মানুষ সাব-মেরিন নৌঘাটি স্থাপনের পক্ষে। সরকারের উন্নয়নকে তারা সাধুবাদ জানায়। তবে চলতি মৌসুম পর্যন্ত চাষিরা অধিগ্রহনকৃত জমিতে লবন উৎপাদন করতে চায়। সরকার শেষ মুর্হুতে এসে এর চুড়ান্ত প্রক্রিয়া হাতে নিয়েছে। চাষিরা যুগ যুগ ধরে এসব মাঠে লবন উৎপাদন করছে। তারা সবাই প্রান্তিক চাষি। জমির মালিকরা ছয়মাস এক বছর আগে এসব জমি লাগিয়ত করে চাষিদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়েছেন। চাষিরাও এ মুর্হুতে লবন চাষ করতে না পারলে অর্থনৈতিক ভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অনেকে দাদন ও ধার কর্জ করে লবন উৎপাদনের জন্য টাকা বিনিয়োগ করেছেন। এখন লবন উৎপাদন ছাড়া তাদের আর কোন আয়ের উৎস নেই। এদিকে সারা দেশে লবনের জাতীয় চাহিদা রয়েছে প্রায় ১৩লাখ মে.টন। চট্টগ্রামের আংশিকসহ কক্সবাজার জেলায় এ লবন উৎপাদন হচ্ছে। নৌ-ঘাটি এলাকায় লবন উৎপাদন থেমে গেলে প্রায় ২০ হাজার মে.টন লবন উৎপাদন হ্রাস পাবে। মগনামার ৪২০একর জমিতে প্রায় তিন হাজার মানুষ প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। এ খাতে পরোক্ষ জড়িত সংখ্যর প্রায় দু’হাজার। তারা বর্তমানে চরম অর্থনৈতিক ঝুকিতে রয়েছেন। চাষিরা বেকার হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এ মুর্হুতে লবন চাষ বন্ধ হয়ে গেলে বিপুল জনগোষ্টির মাঝে দারিদ্রতা বৃদ্ধি পাবে। তবে স্থানীয় চাষিরা জমি চাষের জন্য অধির আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তারা জমি চাষের অনুমতি পেতে ছুটছেন ইউপি কার্যালয়ে।  প্রতিদিন শতশত লবন চাষি এ সংক্রান্ত সহায়তার জন্য মগনামা ইউপির চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিম ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের শরনাপন্ন হচ্ছেন। তবে কোন ধরনের নিশ্চিয়তা পাওয়া যায়নি। এখন চাষিদের প্রশ্ন অন্তত ৫মাস সময়ের জন্য তারা লবন চাষের সুযোগ পাবেনকি। এ ব্যাপারে মগনামা ইউপির চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিম জানায় আমি সংশ্লিষ্ট বিভাগের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে চলছি। চাষিরা অত্যন্ত দরিদ্র্। অন্তত এ মৌসুমটা চাষিরা যেন জমি ভোগ করতে পারে এ সুযোগটুকু দেয়ার অনুরোধ করছি। লবন উৎপাদন করতে না পারলে প্রান্তিক চাষিরা নিঃস্ব হয়ে যাবে। তারা ধার কর্জ করে এসব জমি মালিকদের কাছ থেকে প্রায় ৬মাস আগে থেকে আগাম নেয়। প্রতিকানি ২৫-৩০হাজার টাকা জমি লাগিয়ত হয়েছে। চাষ করতে না পারলে তাদের টাকাগুলো মাটি হয়ে যাবে। পথে বসার উপক্রম হবে তাদের।

পাঠকের মতামত: