ঢাকা,শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

ইয়াবা ও মাদকের স্বর্গরাজ্য লামা

lama-photo-10-11-16-1মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি ঃ

মরণ নেশা ইয়াবা, গাজাঁ ও মাদকের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে বান্দরবানের লামা উপজেলা। ইতিমধ্যে নেশার প্রাপ্তির স্থান ও নেশা গ্রহণের অভয়রাণ্য হিসেবে ব্যাপক পরিচিত লামা পৌর এলাকার লামা বাজার ছোট নুনার বিল মার্মা পাড়া, পাড়া সংলগ্ন কয়েকটি দোকান, মধুঝিরি মাষ্টার পাড়া, কলিঙ্গাবিল মার্মা পাড়া, চাম্পাতলী মার্মা পাড়া। উপজাতি পাড়া কেন্দ্রিক নেশার জোন গড়ে উঠলেও নেশা গ্রহিতা ৯০ শতাংশ বাঙ্গালী। পাশাপাশি লামা উপজেলা প্রত্যেকটি ইউনিয়নে বেশ কয়েকটি স্থানে নিয়মিত নেশা বিক্রি হয়। নেশা গ্রহিতার মধ্যে উঠতি বয়সের ছেলের সংখ্যা বেশী।

নাম প্রকাশ না সত্ত্বে এক ইয়াবা সেবী জানায়, টাকা হলে যে কোন ধরনের নেশা মিলে এখন লামায়। বর্তমানে মাদক সেবী কমেছে। বেড়েছে ইয়াবা ও গাজাঁ। জনপ্রিয়তার শীর্ষে আছে ইয়াবা ট্যাবলেট। বেশ কয়েকটি সিন্ডিকেট এর মাধ্যমে নিয়মিত লামা প্রবেশ করছে ইয়াবা গাজাঁ। পাচার হচ্ছে দেশীয় চোলাই মদ।

লামার মাদক সাম্রাজ্যের চিহ্নিত গডফাদারেরা এসব মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে দেদারছে। অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নিরব ভূমিকার কারনে ইয়াবা ও মাদক ব্যবসায়ীরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। মাঝে মধ্যে প্রশাসন লোক দেখানো অভিযান পরিচালিত করলে গুটিকয়েক মাদক ও ইয়াবা সেবনকারীরা ধরা পড়ে। কিন্তু রাগববোয়ালরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় দিন দিন এলাকায় উঠতি বয়সের ছেলেরা বিপদগামী হচ্ছে। দীর্ঘ অনুসন্ধান, ইয়াবাসেবী, মাদকসেবী, বিক্রেতা ও সচেতন এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে লামা পৌর শহর সহ বিভিন্ন ইউনিয়নে শতাধিক স্পটে মাদক, গাজাঁ ও ইয়াবা বিক্রি হচ্ছে। স্থানগুলো রয়েছে নেশা ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে। তাদের ভাষ্যমতে, প্রতিদিন প্রত্যেকটি স্পটে কমপক্ষে লক্ষাধিক টাকার ইয়াবা, গাজাঁ ও মদ বিক্রি হচ্ছে।

পাহাড়ি এলাকা হিসেবে প্রায় সকল উপজাতি পাড়াতে অনেকে দেশীয় চোলাই মদ তৈরি করে এবং যার অধিকাংশ মাদকসেবী বাঙ্গালীরা। সম্প্রতি সময়ে মাদকের আড়ালে ব্যাপকহারে বিক্রি হচ্ছে ইয়াবা গাজাঁ। অনেকে নেশা বিক্রি করে স্বল্প সময়ে বনে গেছেন লাখ ও কোটিপতি। তাদের দেখে অনেকে সহজে প্রচুর টাকার মালিক হতে নেমে পড়েছে নেশার রাজ্যে।

লামা বাজার ছোট নুনার বিল মার্মা পাড়া অনেকে জানায়, কিছু লোকজন নেশা সাথে জড়িত। আমরা নিষেধ করেছি কিন্তু তারা কোন কথা শুনেনা। তারা অঢেল টাকার মালিক হয়ে গেছে কাউকে তাদের চোখে মানুষ মনে হয়না। কয়েকজন লোকের কারণে পাড়ার সকলকে সমস্যায় পড়তে হয়।

এ ব্যাপারে লামা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ইকবাল হোসেন বলেন, এলাকার চিহ্নিত মাদক ও নেশার স্পটগুলোতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অনেককে আটক করে মাদক আইনে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। উপজাতি পাড়া কেন্দ্রিক নেশার ব্যবসা গড়ে উঠায় অনেক সময় অভিযান পরিচালনা করতে আমাদের সমস্যা হয়।

যুব সমাজকে নেশার হাত থেকে বাচাঁতে, নেশার বিস্তার রোধে ও নেশা আমদানী রপ্তানী বন্ধে র‌্যাব সহ ভাম্যমান আদালতে পরিচালনা করতে আবেদন জানিয়েছে সচেতনমহল ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।

পাঠকের মতামত: