ঢাকা,শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

পেকুয়ায় স্বাক্ষর জালিয়াত করে প্রকল্পের টাকা আত্নসাতের অভিযোগ পিআইও’র বিরুদ্ধে

durnitiপেকুয়া প্রতিনিধি :::

পেকুয়ায় ব্যাংক চেকে নারী সদস্যের স্বাক্ষর জালিয়াত করে প্রকল্পের অর্থ আতœসাত করার গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও’র) বিরুদ্ধে। পেকুয়ার পিআইও সৌভ্রাত দাশ ও মগনামা ইউপির চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা শরাফত উল্লাহ ওয়াসিমের এ দুর্ধান্ত প্রতারনা ও চেকে স্বাক্ষর জালিয়াতির খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় সর্বত্রে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পেকুয়ার ইউপি সদস্য ও জনপ্রতিনিধিরা এ ঘটনায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ ও মর্মহত হয়েছেন। এদিকে উপজেলার মগনামা ইউনিয়নে বেড়িবাধ সংস্কারের জন্য সরকারের খাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) কর্মসুচির আওতায় বাধ সংস্কারের জন্য প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি গঠিত হয়। সাত সদস্য বিশিষ্ট ওই কমিটির প্রকল্প সভাপতি মগনামা ইউপির ১,২,৩ নং ওয়ার্ড়ের সদস্য হামিদা আকতার। চলতি বর্ষার সময় ঘুর্নিঝড় রোয়ানুর আঘাতে মগনামা ইউনিয়নের কুতুবদিয়া চ্যানেল সংশ্লিষ্ট পাউবো নিয়ন্ত্রিত বেড়িবাধ বিলিন হয়ে যায়। বিলিন অংশ মাটি দিয়ে সংস্কারের জন্য কাবিটা প্রকল্পের আওতায় প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ১,১৬৬,৬৮৬টাকা বরাদ্ধ দেয়। ওই অর্থ থেকে ইউপি সদস্য হামিদা আকতার এ ইউনিয়নের শরৎঘোনা হয়ে চরখানাই ও মগনামা জেটিঘাট পর্যন্ত ঝুঁকিপুর্ন অংশ মাটি দিয়ে সংস্কার করেন। একইভাবে মগনামা ইউনিয়নের পশ্চিমকুল অংশে প্রায় ২০চেইন বেঁড়িবাধের বিলিন অংশ সংস্কার করা হয়। পিআইসির অনুকুলে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি গঠন ও অনুমোদন দেয়। এদিকে কাজের অর্থ প্রকল্প বাস্তাবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে পৃথক দু’ধাপে ছাড় দেয়। পিআইও ও ইউএনও’র যৌথ একাউন্ট থেকে কাবিটার টাকা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির অনুকুলে প্রেরন করা হয়। কাজের ১ম ডিও গত গত ২০জুন সোনালী ব্যাংক চকরিয়া শাখা থেকে ৫৮,৩৪৩টাকা উত্তোলন করেন প্রকল্প সভাপতি হামিদা আকতার। অভিযোগ উঠেছে বেঁিড়বাধ সংস্কার কাজের চুড়ান্ত বিল অনুমোদন দেয় প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে। গত ১৪আগষ্ট বিল পাশ হয়। কাজের বকেয়া বিল ৪৩হাজার টাকার ওই চেকটি পাশ করে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কার্যালয়। অভিযোগ উঠেছে পিআইও সৌভ্রাত দাশ প্রকল্প সভাপতি হামিদা আকতারের ইস্যুকৃত ওই চেকটি তাকে না জানিয়ে একই ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ওয়ার্ড়ের সদস্য জামায়েত নেতা খোরশেদ আলমকে দিয়ে গোপনে কৃষি ব্যাংক পেকুয়া শাখা থেকে সমুদয় টাকা উত্তোলন করে আতœসাত করে। টাকা উত্তোলন করতে সৌভ্রাত দাশ প্রকল্প সভাপতি হামিদা আকতারের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে। এদিকে কাজ সমাপ্তির প্রায় চার মাস অতিবাহিত হয়েছে। কিন্তু বকেয়া টাকা উত্তোলনের জন্য হামিদা আকতার পিআইও’র সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ওই টাকা ইউপি চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ ওয়াসিম নিয়ে গেছেন বলে জানান। এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য ও প্রকল্প সভাপতি হামিদা আকতার জানায় পিআইও বলেছেন চেকের টাকা চেয়ারম্যান নিয়ে গেছেন। তখন আমি পিআইওকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিই আমি সভাপতি। আমার টাকা কিভাবে চেয়ারম্যান নিয়ে যায়। পিআইও বলেছেন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আমাকে লিখিত অভিযোগ দেন। আমি ব্যবস্থা নেব। আমি বলেছি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দেবনা। অন্যায় করছেন আপনি। অভিযোগ দেব আপনার বিরুদ্ধে। এ সময় পিআইও আমাকে অশালিন ভাষায় বকাঝকা করে। তিনি আরো জানায় পিআইও ও চেয়ারম্যান হাত মিলিয়ে আমার টাকা আতœসাত করে। প্রতিবাদ করায় চেয়ারম্যান ক্ষেপে গেছে। এখন আমাকে অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। গতকাল বুধবার এনজিও প্রদত্ত ত্রান সামগ্রী বন্টনে আমাকে কোন বরাদ্ধ দেয়নি। অথচ ত্রান বিলির সময় ইউএনও স্যার ছিলেন। পরিষদের সকল সদস্যকে উপকারভোগির বরাদ্ধ দিয়েছে। শুধু আমাকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এখন আমার স্বামীকে বিভিন্ন মামলায় জড়ানোরও হুমকি দিচ্ছে ওয়াসিম চেয়ারম্যান। পিআইও একজন সরকারি দায়িত্বশীল কর্মকর্তা। আমি নারী সদস্য। আমার অধিকার নিয়ে যে জালিয়াতি ও প্রতারনার আশ্রয় নিয়েছে এটি মেনে নেয়া যায়না। আমি এ দুর্নীতিবাজদের অবিলম্বে বিচার দাবি করছি। জানা গেছে পিআইও ও চেয়ারম্যান ইউপি সদস্য হামিদা আকতারের অনুকুলে ৪৯৪৩৬৭৫ নং চেক ইস্যু করে। ওই চেকটিতে হামিদা আকতারের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে অপর ইউপি সদস্য খোরশেদ মেম্বারকে দিয়ে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে। এ বিষয়ে পেকুয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তাবায়ন কর্মকর্তা সৌভ্রাত দাশের সাথে যোগাযোগ করা হয়। ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া যায়নি।

পাঠকের মতামত: