ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

প্রভাষক থেকে অধ্যাপক হতে লাগবে ১৬ বছর

ugcদৈনিক শিক্ষা : পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে অভিন্ন নীতিমালা হচ্ছে। প্রভাষক থেকে অধ্যাপক হতে একজন শিক্ষকের চাকরির বয়স হতে হবে সর্বনিম্ন ১৬ বছর। তবে এমফিল বা পিএইচডি না থাকলে তাঁদের সময় লাগবে ১৮ বছর। দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এসব নিয়ম রেখে শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নতির জন্য অভিন্ন নীতিমালা তৈরি হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইউসুফ আলী মোল্লার নেতৃত্বে ছয় সদস্য বিশিষ্ট কমিটি এই নীতিমালা তৈরি করেছে। কমিটি ইতিমধ্যেই একটি খসড়া প্রণয়ন করেছে। সেখানেই এসব নিয়ম রাখা হয়েছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে ইউজিসি এই নীতিমালা চূড়ান্ত করবে।

ইউজিসি সূত্র জানায়, খসড়ায় বলা হয়েছে, প্রভাষক থেকে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতিতে তিন বছরের অভিজ্ঞতা ও দুটি গবেষণা প্রবন্ধ থাকতে হবে। সহকারী অধ্যাপক থেকে সহযোগী অধ্যাপক হতে হলে আরো ৯ বছরের অভিজ্ঞতা ও তিনটি গবেষণা প্রবন্ধ থাকতে হবে। তবে পিএইডি বা এমফিল থাকলে লাগবে সাত বছর।

আর সহযোগী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক হতে আরো আট বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। সঙ্গে গবেষণাও থাকতে হবে। তবে এমফিল বা পিএইচডি থাকলে আরো দুই বছর কম লাগবে। এভাবেই একজন শিক্ষককে প্রভাষক থেকে অধ্যাপক হতে ১৮ বছর সময় লাগবে। তবে এমফিল বা পিইএচডি থাকলে লাগবে ১৬ বছর।

ইউজিসির প্রণীত খসড়ার ওপর গতকাল বুধবার বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইউসুফ আলী মোল্লার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান।

শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের নেতৃত্বে শিক্ষক নেতারা মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করেন।ইউজিসি চেয়ারম্যান তাঁর বক্তব্যে বলেন, উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

একটি দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন নির্ভর করে উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নের ওপর। বর্তমানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক নিয়োগের কোনো সমন্বিত নীতিমালা না থাকায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে জ্ঞান-বিজ্ঞানে বৈষম্য পরিলক্ষিত হয়।

সভায় শিক্ষক নেতারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে উচ্চশিক্ষার মান সমুন্নত রাখা ও মেধা লালনের জন্য গ্রহণযোগ্য এবং সময়োপযোগী একটি অভিন্ন নিয়োগ ও পদোন্নতি নীতিমালা সময়ের দাবি। এতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকদের মধ্যে বৈষম্য দূর হবে এবং শিক্ষার মানও উন্নত হবে।

ইউজিসি সূত্র জানায়, ‘জাতীয় বেতন স্কেল, ২০১৫’ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের বেতন কাঠামো নিয়ে জটিলতা নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুসারে ইউজিসির চেয়ারম্যান ও সদস্যদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবসহ প্রশাসনের কয়েকজন সিনিয়র সচিবের আলোচনা হয়।

তখন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদোন্নয়নের বিষয়টি প্রাধান্য পায়। আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ইউজিসিকে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য অভিন্ন নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদোন্নয়নের নীতিমালা প্রণয়নের অনুরোধ করা হয়।

জানা যায়, বর্তমানে একেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে একেক নীতি অনুসরণ করা হয়। কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক হতে গেলে লাগে ১৪ থেকে ১৫ বছর, আবার কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ১২ বছর। শিক্ষক হতে গেলে কেউ সব পরীক্ষায়ই প্রথম শ্রেণি চায়। আবার কেউ সব পরীক্ষার মধ্যে একটি প্রথম শ্রেণি চায়।

এভাবে শিক্ষক নিয়োগ হওয়ায় পর সবাই একই স্কেলে বেতন পেলেও একই যোগ্যতাসম্পন্ন হয় না।

পাঠকের মতামত: