ঢাকা,বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রতিনিয়ত অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে চলছে সবজি ও মাছের দাম

কক্সবাজার প্রতিনিধি :: ঈদ পরবর্তী সময়ে হঠাৎ করে বেড়েছে সবজি ও মাছের দাম। একই সঙ্গে মাংসের বাজারে ঈদের আগে দাম ধরে রাখলেও ব্রয়লার মুরগি কেজিপ্রতি ৫০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৭০ টাকায়। তবে চাল, ডাল, ভোজ্যতেল ও চিনি, ডিমসহ বেশকিছু পণ্য বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই। বেড়েছে পেয়াজের দামও। কেজিপ্রতি ২০ টাকা বেড়ে পেয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা।

গতকাল শনিবার শহরের বিভিন্ন বাজারঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। ঈদের তিন দিন পরেও অধিকাংশ দোকান বন্ধ থাকতে দেখা যায়। কিন্তু চলতি সপ্তাহের শেষ নাগাদ বাজারগুলো পুরোদমে চালু হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে। এছাড়া ঈদের ছুটি শেষে আস্তে আস্তে সবকিছু স্বাভাবিক হবে। ছুটিতে বাড়িতে গিয়ে অনেক ক্রেতা এখনো আসেনি। বেশির ভাগ পাইকার মোকাম বন্ধ রেখে ছুটি কাটাচ্ছেন। দুই-চার মোকামে যে পণ্য আসছে, দাম চড়া নিচ্ছেন। শুধু তাই নয়, গাড়ি ভাড়াও দ্বিগুণ হয়েছে। এজন্য পণ্যর বাড়তি দাম।

বাজারে মিষ্টিকুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা, দেড়শ ৮০ টাকা, শসা বড় ৬০ টাকা, ছোট সাইজের ৭০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, বেগুন ৬০-৮০ টাকা, ঝিঙ্গা ৮০ টাকা, গাজর ১০০ টাকা, পটল ৮০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, আলু দেশি ৬০ টাকা, আলু ( ললিতা) ৪০ টাকা, কাঁচা কলা প্রতি পিচ ২০-২৫ টাকা, লাল শাক ৪০ টাকা, কলমি শাক ২০ টাকা, লাউ শাক ৪০ টাকা। যা ঈদের আগে ছিল অর্ধেক মূল্য।

কানাইয়া বাজার সবজি বিক্রেতা জয়নাল জানান, পণ্য পরিবহন খরচ আগের চেয়ে বেড়েছে। তা-ই সবজির দাম চড়া। ঈদের পরে প্রতি গাড়ি পিক-আপের ভাড়া ২০০ টাকা বাড়তি গুনতে হচ্ছে।

বাহারছড়া বাজারে সবজি বিক্রেতা হুমায়ুন করির বলেন, আমরা বেশি দামেই কিনে কিজেতে ৫ টাকা লাভ করি। একদিন পার হয়ে গেলে সবজি নষ্ট হয়ে যায়। দাম বেশি হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরবরাহ কম এজন্য দাম বাড়তি।

ক্রেতাদের অভিযোগ, সরবরাহের অজুহাতে বিক্রেতারা ইচ্ছামত দাম বাড়িয়েই দিয়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিটির দাম দ্বিগুণ বেড়েছে। এতেই করে কষ্ট পড়েছেন সাধারণ মানুষ। সবচেয়ে বেশি কষ্টে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।

অন্যদিকে মাছের বাজারে দামে যেন আগুন জ্বলছে। তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে সাইজ অনুযায়ী ১৫০-২০০ টাকা, রুই ২৫০-৩০০ টাকা, মৃগেল ২৫০ টাকা, কার্প ৩৫০ টাকা, সাগরের লইট্যা ২০০ টাকা, পোপা ২৫০-৩৫০ টাকা, তাইল্যা ৪০০-৫০০ টাকা, সুরমা ৫০০ টাকা, চিংড়ি বাগদা ৮০০-১২০০ টাকা, চিংড়ি বিভিন্ন প্রজাতির ৫০০ থেকেই শুরু করে ১০০০ টাকা পর্যন্ত দরে বিক্রি করছেন মাছ ব্যবসায়ীরা। ইলিশ ১ কেজির উপরে ১৫০০ টাকা, এক কেজির নিচে ৯০০-১১০০ টাকা। এছাড়া সামুদ্রিক বিভিন্ন প্রজাতির মাছের দাম ঈদের পরবর্তী সময়ে কেজিতে দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। এ অবস্থায় ভোক্তারা পড়েছেন চরম বিপাকে।

বড় বাজারে মাছ কিনতে আসা মোহাম্মদ ইসফাক বলেন, ঈদের আগে চিংড়ি মাছ কিনেছি ৬০০ টাকা করে, এখন সেই চিংড়ির দাম বলছে ৭৫০ টাকা। ঈদ পরবর্তী বাজারেও ক্রেতাকে বেশি দাম দিয়ে মাছ কিনতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, বাজারে তরতাজা মাছই নেই, সবগুলো মাছ ফ্রি জারের। ক্রেতা-বিক্রেতা কম থাকায় কমেছে সরবরাহ। এ সুযোগে বিক্রেতারা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।

মাছ বিক্রেতা ছৈয়দ আলম বলেন, আড়তে মাছের দাম চড়া। বেশি দামে কিনে বেশি দামে করতে হচ্ছে। উপায় নেই ব্যবসা করে সংসার চলে। এখানে আমাদের কোন কারচুপি নেই। আপনারা উপরে খবর নেন। কোথায় থেকে মাছ আসছে কোথায় বিক্রি হচ্ছে! তারপর সবকিছুর হিসেব পেয়ে যাবেন।

পাঠকের মতামত: