ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

মগনামায় ‘মালেক শাহে’র ভক্তদের গাড়ী আটকিয়ে চলছে বেপরোয়া চাঁদাবাজি

mognama picমুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া :::

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের ফুলতলা ও লঞ্চঘাট এলাকায় কুতুবদিয়ার মালেক শাহ হুজুরের বার্ষিক ওরশ শরীফে আগত দেশের বিভিন্ন এলাকার ভক্তদের বিভিন্ন যানবাহন আটকিয়ে বেপরোয়া চাঁদাবাজি চলছে। আজ ১৯ ফেব্রেুয়ারী কুতুবদিয়া প্রখ্যাত আউলিয়া হযরাত আবদুল মালেক শাহ আল কুতুবী (রা:) এর বার্ষিক ফাতিহা শরীফের প্রধান দিবস।

 গত ১৮ ফেব্রেুয়ারী থেকে বার্ষিক ফাতেহা শরীফ শুরু হয়। চলবে ২০ ফেব্রেুয়ারী পর্যন্ত। আর কুতুব শরীর দরবারের দেশের বিভিন্ন এলাকার থেকে লাখ লাখ ভক্ত সরাসরি গাড়ী যোগে পেকুয়া হয়ে মগনামায় আসেন। কুতুবদিয়া চ্যানেলের কারণে গাড়ী নিয়ে সরাসরি কুতুবদিয়া দ্বীপ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেনা ভক্তরা। এ কারণে মগনামায় ফুলতলা ও লঞ্চঘাট এলাকায় এসব গাড়ী রাখা হয়। আর এ নিয়ে মগনামা ফুলতলা ও লঞ্চঘাট কেন্দ্রীক একটি চাঁদাবাজ চক্র ভক্তদের প্রতিটি গাড়ী থেকে ইউনিয়ণ পরিষদের নামে চাঁদা আদায় করে। আর পরে এসব চাঁদা প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধির নেতত্বে ভাগভাটোয়ার হয়।

 গতকাল ১৯ ফেব্রেুয়ারী বিকালে সরেজমিনে মগনামা ফুলতলা পরিদর্শন করে দেখা গেছে, কুতুব শরীফ দরবারে আগত ভক্তদের প্রায় ৫ শতাধিক গাড়ী ফুলতলার পূর্ব পার্শ্বে জমিতে সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়েছে। এখানে প্রতিটি বাস থেকে ২০০টাকা, হাইয়েস-মাইক্রোবাস থেকে ১৫০টাকা করে মগনামা ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক দায়িত্ব পাকিং কমিটির নামে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। গতকাল একদিনেই প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকার চাঁদা আদায় করা হয়েছে। ১৮ ফেব্রেুয়ারীও গাড়ী পাকিংয়ের নামে চাঁদাবাজি করা হেয়ছে। ঘটনাস্থল থেকে এ বিষয়ে পেকুয়ার ইউএনওকে অবহিত করা হলে তিনি চাঁদাবাজি বন্ধে পদক্ষেপ নিচ্ছেন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত মগনামা ফুলতলা ও লঞ্চঘাটে দরবারগামী যানবাহন থেকে চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি। এখনকার বিএনপি, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, ছাত্রদলের কিছু নেতাকর্মীরা একজোট হয়ে এ চাঁদাজিতে মেতেছেন বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন। প্রকাশ্যে এভাবে চাঁদাবাজি করা হলেও স্থাণীয় প্রশাসন রহস্য জনক ভূমিকা পালন করেছেন। প্রশাসন চাঁদাবাজি বন্ধে গড়িমসি করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

 মগনামা ফুলতলায় দরবারমুখী গাড়ী থেকে চাদা উত্তোলনের কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছেন স্থানীয় একদল চাঁদাবাজ চক্র। এসব চক্র স্থানীয় এক প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধির সাথে আঁতাত করে এসব চাঁদা উত্তোলন করছেন বলে নিশ্চিত করেছে স্থানীয়রা।

 কুতুব শরীফ দরবারে ক্তদের নিয়ে আগত চট্টগ্রামের বোয়াখালী উপজেলার বাস চালক জামিল হোসেন অভিযোগ করেছেন, তার কাছ থেকে মগনামা ইউনিয়ন পরিষদের নামে ২০০টাকা াাদায় করেছেন।

চট্টগ্রাম, শহরের পাথরঘাটা থেকে দরবারে ভক্তদের নিয়ে আগত বাস চালক মো. মারুফ অভিযোগ করেছেন, তার কাছ থেকেও মগনামা ফুলতলায় ইউনিয়ন পরিষদের নামে ২০০টাকা আদায় করেছেন।

গতকাল ১৯ ফেব্রেুয়ারী সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মগনামা ফুলতলার পূর্ব পার্শ্বে সরেজমিনে অবস্থান করে দেখা গেছে, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক দায়িত্ব প্রাপ্ত পাকিং কমিটির নামে যানবাহন চালকদের রশিদ দিয়ে চাঁদা উত্তোলন করা হচ্ছে।

 ইউনিয়ন পরিষদের নাম ভাঙ্গিয়ে কুতুবদিয়ার দরবারগামী যানবাহন থেকে পাকিংয়ের নামে চাঁদা আদায়ের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিম জানান, তার পরিষদের নামে যাতে কেউ দরবারমুখী যানবাহন থেকে পাকিংয়ের নামে চাঁদা উত্তোলন না করে সে জন্য সবাইকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। তিনি নিজেও আজহ সন্ধ্যায় মাইকে ঘোষনা দিয়েছেন চাঁদাবাজি বন্ধে। এরপরেও কেউ দরবারমুখী যানবাহন থেকে চাঁদা উত্তোল করলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 এ ব্যাপারে অবহিত করা হলে পেকুয়ার ইউএনও মো. মাহবুবুল করিম জানান, মগনামা ফুলতলায় দরবারমুখী যানবাহন থেকে চাঁদাবাজি বন্ধে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে কঠোরভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পাঠকের মতামত: