পেকুয়ায় দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এসময় কলেজ ছাত্র, নারী, শিশু ও স্কুল ছাত্রসহ অন্তত ১১জন আহত হয়েছে বলে জানাগেছে। আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে পেকুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে সদ্য প্রবাস ফেরত এক ব্যক্তিকে চমেকে প্রেরন করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে, গত ২০ জুন সোমবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের টেকঘোনা নামক এলাকায়। আহতরা হলেন, টেকঘোনা এলাকার মোজাফ্ফর আহমদের ছেলে সদ্য প্রবাস ফেরত কবির হোছন(৫০) ও তার ভাই ৬ষ্ট শ্রেণির ছাত্র কামাল হোছেন(১২), তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র আরাফাত(৯), আলী হোছেনের স্ত্রী সানজিদা ইয়াসমিন(২৩), ইউনুছের স্ত্রী পারভিন আকতার(২৫), আব্দু রশিদের স্ত্রী সামিয়া আকতার (২২), রাজাখালী এয়ারআলী খান উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী কবির হোছেনের মেয়ে মুন্নি আকতার(১৩), চট্টগ্রাম মহসীন কলেজের অনার্সের ছাত্র পারভেছ(২৫)।
অপরপক্ষের আহতরা হলেন একই এলাকার জেবর মুল্লুকের ছেলে রাজামিয়া(৬৫), তার ছেলে জাহাঙ্গীর আলম(২৮) ও অপর একজনের নাম জানা যায়নি। ঘটনার জের ধরে রাজাখালী ইউনিয়নের টেকঘোনা এলাকায় স্থানীয় দু’পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। আহতদের মধ্যে কবির হোছেন এর অবস্থা গুরুতর বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। কবির হোছেন গত বৃহস্পতিবার রাতে সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ৩৮শতক জমি নিয়ে মোজাফ্ফর হোসেনের দ্বিতীয় স্ত্রী খালেদা বেগম এর সাথে একই এলাকার জেবর মুল্লুকের ছেলে রাজামিয়ার বিরোধ চলছিল। মোজাফ্ফর আহমদ বিগত ১৫বছর পুর্বে তার স্ত্রীকে ওই জায়গা ক্রয় করিয়ে দেন। বিধবা খালেদা বেগম ও তার এতিম ছেলে কামাল হোছেনকে নিয়ে ওই সম্পত্তি ভোগ করে আসছিলেন। সম্প্রতি জায়গা জবর দখলে নিতে রাজামিয়া গং তৎপর হন। ঘটনারদিন সকালে মালিক পক্ষ জমিতে আউশ চাষ প্রস্তুতির জন্য পাওয়ারটিলার নামান।
এসময় রাজামিয়া ও তার ছেলে জাহাঙ্গীর, আজিজ, মোশারফসহ ভাড়াটে লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জমিতে অনুপ্রবেশ করে। এসময় মোজ্ফ্ফর আহমদের স্ত্রী খালেদা ও শিশু ছেলে কামাল হোছেন বাধা দেয়। এর জের ধরে ওই দুবৃর্ত্তরা তাদেরকে এলোপাতাড়ি মারধর করে আহত করে। খবর পেয়ে খালেদার আগের ঘরের ছেলে কবির হোছেনসহ তার পরিবারের লোকজন উদ্ধার করতে গেলে হামলাকারীরা তাদেরকেও মারধরসহ কুপিয়ে আহত করে।
এব্যাপারে প্রত্যক্ষদর্শী বদিউল আলম, আবুল হোছেনসহ অনেকে জানান, জমি কবির হোছেন গংদের। তারা দীর্ঘ ১৫বছর ধরে ভোগদখলে আছেন। এব্যাপারে গৃহবধু সানজিদা ইয়াসমিন হামিদা জানান, তারা কয়েকদিন আগে জমি দখলে নিতে রাজামিয়া গং দোকানে অস্ত্র মজুদ করে। পুলিশ রাজামিয়ার দোকান থেকে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করেছে। আমরা এগিয়ে না গেলে আমার শ্বাশুড়ি ও দেবরকে মেরে জমিতে পুতেঁ ফেলত। আহত কবির হোছেন জানায়, রাজামিয়া গং আমার কাছ থেকে ১লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা না দেয়ায় জমি দখলের চেষ্টা করছে। তবে রাজা মিয়া গং জানায় ওই জায়গা তাদের মায়ের পৈত্রিক সম্পত্তি। জমি তাদের দখলে থাকলেও উদ্ধারের জন্য বিচার আছে। পেকুয়া থানার ওসি জিয়া মো.মোস্তাফিজ ভুইয়া বলেন, সংঘর্ষের বিষয়ে কোন পক্ষ এখনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্তপুর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পাঠকের মতামত: