পেকুয়া প্রতিনিধি :: কক্সবাজারের পেকুয়ায় বহুল আলোচিত ত্রাণের ১৫ টন চাল আত্মসাতের ঘটনায় তদন্ত কাজ শুরু করেছে মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত টিম। গতকাল সোমবার সকাল ৯ টা থেকে দিনভর পেকুয়ার সকল চেয়ারম্যান, ইউপি সচিব ও উপজেলার কর্মকর্তাদের সাক্ষ্য নিয়েছেন তদন্ত কমিটি। এর বাইরেও বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগীর বক্তব্য নিয়েছেন তারা। তবে সেখানে কোন সংবাদকর্মীকে যেতে দেয়া হয়নি। তদন্ত কমিটির কাছে স্বাক্ষ্য দেয়া বেশ কয়েকজনের সাথে কথা হয় ।
তারা বলেন, আলোচিত ১৫ টন ত্রাণের চাল আত্মসাতের বিষয়ে মূলত তারা সাক্ষ্য প্রমাণ নিয়েছেন এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার সম্পর্কে ধারণা চেয়েছেন। ভুক্তভোগীদের একজন সাবেক উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শাহাব উদ্দিন ফরাজির ছেলে ছাত্রলীগ নেতা মেহেদী হাসান ফরাজী। তিনি সম্প্রতি তার ফেসবুক ওয়ালে তার বৈধ বালি মহালের অভিযান চালানোর প্রেক্ষিতে তার কাছ থেকে ইউএনও ৮০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন বলে প্রকাশ্যে অভিযোগ করেছেন।
গতকাল তদন্ত টিমের কাছে সাক্ষ্য দেয়ার পর বলেন, ‘আমার কাছ থেকে তদন্ত কমিটির সদস্যরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ঘুষ দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে আমি ঘটনার বিস্তারিত তাদেরকে জানাই এবং কোন প্রেক্ষিতে ঘুষ দিতে বাধ্য হয়েছি তার বিস্তারিত জানিয়েছি। পরে তা লিখিতও দিয়েছি।’
সাক্ষ্য দেয়া অপরজন পেকুয়া উপজেলা চেয়ারম্যান এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও উজানটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘আমাদের কাছে আলোচিত ১৫ মে.টন চালের বিষয়ে জানতে চাইলে আমরা এ বিষয়ে মৌখিক ও লিখিতভাবে আমাদের বক্তব্য প্রদান করেছি।
এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির প্রধান চট্টগ্রাম স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক দীপক চক্রবর্তীর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘আমরা ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সচিব, ট্যাগ অফিসার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, বেসরকারী লোকজনসহ মোট ৩৬ জনের কাছ থেকে সাক্ষ্য নিয়েছি। তাদের লিখিত ও মৌখিক স্বাক্ষ্য নিয়েছি। বক্তব্যগুলো বিশ্লেষন করে কয়েকদিনের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করা হবে বলে।’ তিনি জানান, স্থানীয় এমপি জাফর আলমও স্বপ্রণোদিত হয়ে তদন্ত কমিটির কাছে তার বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন।
কমিটির অন্য দুই সদস্য কক্সবাজার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক শ্রাবন্তি রায় ও কক্সবাজার জেলা ত্রান ও পূর্ণবাসন কর্মকর্তা মোঃ মাহবুবুল আলম তদন্তকালে উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, পেকুয়া উপজেলা প্রশাসন থেকে গত ৩১ মার্চ টৈটং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরীর নামে বরাদ্দকৃত ১৫ টন ত্রাণের চাল আত্মসাতের অভিযোগে এনে গত ২৮ অক্টোবর তাকে একমাত্র আসামি করে পেকুয়ার পিআইও বাদী হয়ে পেকুয়া থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। পরদিন স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে এক আদেশে জাহেদুল ইসলাম চৌধুরীকে চেয়ারম্যানের পদ থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। পরে গত ৩০ এপ্রিল একই ঘটনার রেশ ধরে পেকুয়ার ইউএনও সাঈকা সাহাদাত’কে বদলি করা হয়। আবার ১ মে তার বদলি আদেশ স্থগিত করা হয়।
পাঠকের মতামত: