ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

পেকুয়ায় বেড়িবাঁধ সংস্কার করছে চিংড়ি চাষিরা, ফটো সেশনে চেয়ারম্যান

mail.google.comপেকুয়া প্রতিনিধি :::

পেকুয়ায় বেড়িঁবাধ সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন করছে চিংড়ি চাষিরা। ঘুর্নিঝড় রোয়ানুর তীব্র আঘাতে কুতুবদিয়া চ্যানেলের উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের পশ্চিম অংশের বেড়িঁবাধ এর বিপুল অংশ বিলিন হয়ে যায়। ওই অংশ দিয়ে সাগরের জোয়ারের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে মগনামা ইউনিয়নের বিপুল এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। চলতি বর্ষা মৌসুমে মৎস্য চাষিরা চিংড়ি উৎপাদন খাতে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে। বেড়িঁবাধের কারনে মৎস্যঘের পানিতে তলিয়ে গেছে।

 বর্তমানে মগনামা ইউনিয়নে শরতঘোনা থেকে কাকপাড়া পর্যন্ত প্রায় ১২কি.মি বেড়িবাঁধের মধ্যে অন্তত ৮কি.মি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ২কি.মি সম্পুর্ন বিলিন হয়। মগনামার অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। অন্তত ২০হাজার মানুষ পানি বন্দি রয়েছে। গ্রামীন অবকাঠামো বিধ্বস্থ হয়েছে। নাজুক অবস্থা থেকে পরিত্রান পেতে পাউবোর নিয়ন্ত্রনাধীন বেড়িবাঁধ সংস্কারের জন্য উদ্যেগ নিয়েছেন স্থানীয়রা। বিশেষ করে মৎস্য উৎপাদনের জন্য চাষিরা বেড়িবাঁধ সংস্কারের এ উদ্যেগ নিয়েছেন।

 জোয়ারের পানি আটকানোর জন্য তারা নিজেদের অর্থায়নে এবার মগনামা ইউনিয়নের পশ্চিম অংশে বিলিন হওয়া বেড়িবাঁধ স্থানে রিংবাঁধ নির্মানের কাজ শুরু করে দিয়েছে। গত ৪দিন পুর্ব থেকে রিংবাঁধ তৈরীর কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন মৎস্য চাষিরা।

 মগনামায় পানি আটকানোর জন্য স্থানীয়রা গত এক সপ্তাহ আগে ওই ইউনিয়নের হারুন মাতবরপাড়া এলাকায় রেডক্রিসেন্ট সেন্টারে বৈঠক করেন। বৈঠকে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, গন্যমান্য ব্যক্তি, দানশীল ব্যক্তি, মৎস্য ও লবন চাষিরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় মগনামাকে জলবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষা করতে হলে সাগরের জোয়রের পানি আটকাতে হবে। সরকারি অর্থের জন্য অপেক্ষা করা যাবেনা। আপাতত রিংবাঁধ দিয়ে হলেও মগনামাকে পানির কবল থেকে রক্ষা করতে হবে। চিংড়ি চাষিরা ও জমির মালিকরা নিজেদের উৎপাদন ব্যবস্থা সুদুর প্রসারি রাখতে রিংবাঁধের জন্য তারা যৌথভাবে অর্থ বিনিয়োগের সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন। মগনামায় বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজ এগিয়ে চলছে। শরতঘোনা চরখানাই অংশে বেড়িবাঁধের সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন হচ্ছে।

 স্থানীয় মৎস্য চাষি ও লবন ব্যবসায়ি জহিরুল ইসলাম, হাজ্বি জাহাঙ্গীর আলম, দালাল সলিম উল্লাহ, মনু, হাজ্বি শামসুল ইসলাম, আব্দু সালাম, শেহাব উদ্দিন, হাজ্বি মো.তৈয়বসহ দানশীল ব্যক্তিরা বাঁধ সংস্কারের জন্য অর্থ সহায়তা দিয়েছে। স্কেবেটার দিয়ে মাটি কাটার কাজ চলমান রয়েছে। একইভাবে কাকপাড়া পয়েন্টে বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন হচ্ছে।

 সাবেক মেম্বার নুর মোহাম্মদ, দালাল কাইসার, রবিউল আলম, সাবেক মেম্বার জামাল হোসেন, ছাবের আহমদসহ অর্ধ শতাধিক ব্যবসায়িরা কাকপাড়ার বেড়িবাঁধ সংস্কারের জন্য ব্যক্তিগত উদ্যেগে এগিয়ে এসেছেন। স্কেবেটার দিয়ে কাকপাড়া মাজারের দক্ষিন দিকে ও সাবেক চেয়ারম্যান ইউনুস চৌধুরীর বাড়ির উত্তর পাশে মাটি কাটার কাজ আরম্ভ করা হয়েছে।

 এদিকে ব্যক্তিগত উদ্যেগে স্থানীয়রা কাজ আরম্ভ করলেও কাজ নিয়ে ডিগবাজিতে ব্যস্ত হয়েছেন মগনামা ইউপির চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ ওয়াসিম। ধানের শীষ প্রতিক নিয়ে চেয়ারম্যান হয়েছেন। বিগত ১৫দিন ধরে মগনামা মানুষ কঠিন মানবেতর দিনাতিপাত করে আসছিলেন। পানি বন্দি মানুষের প্রতি তার কোন দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ ছিলনা।

 মানুষ পানির নিচে ভাসছে আর চেয়ারম্যান ওয়াসিম আলিসান বিলাসবহুল গাড়ি নিয়ে আরাম আয়েশে চরে বেড়াচ্ছিলেন। বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজ নিজের নামে প্রচারে নেমেছেন চেয়ারম্যান। সরকার পানি আটকানোর জন্য ইউনিয়ন পরিষদের অনুকুলে ১০মে.টন খাদ্যশস্য বরাদ্ধ দেন। অথচ চেয়ারম্যান জাহির করছেন প্রায় কোটি টাকা ব্যায়ে নিজের অর্থায়নে বাঁধ সংস্কার করছেন।

 পরের ধনে পোদ্দারী করতে চেয়ারম্যান ওয়াসিম ব্যস্ত হয়েছেন ফটোশেসনে। বেড়িবাঁধের স্কেবেটারের খুব কাছে গিয়ে পত্রিকায় ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেইসবুক) ছবি ছড়িয়ে দেয় বে-আক্কেল চেয়ারম্যান। চেয়ারম্যানের এহেন দুর্ধান্ত প্রতারনা ও মাতামাতি নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা জানায় যারা অর্থের যোগান দিয়েছে তাদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। চেয়ারম্যানের কারনে তারা নিরুৎসাহ বোধ করছেন। স্থানীয়রা জানায় বাঁধ সংস্কারের কাজে চেয়ারম্যান এক পয়সাও দেয়নি।

 মগনামা ইউনিয়ন আ’লীগ সহ-সভাপতি নাজেম উদ্দিন, সাধারন সম্পাদক রশিদ আহমদ, সাবেক ইউপি সদস্য মোকতার আহমদ, ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ফায়সাল চৌধুরী জানায় স্থানীয়রা এগিয়ে না আসলে পানি আটকানো সম্ভব হতোনা। চিংড়ি চাষি ও জমির মালিকরা বিপুল অর্থের যোগান দিয়েছে বাঁধ সংস্কারের জন্য। চেয়ারম্যানের এখানে কোন বিনিয়োগ নেই। তবে চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ তদারকির দায়িত্ব তার উপর বর্তায়। এ ব্যাপারে জানতে মগনামা ইউপির চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ ওয়াসিমের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হয়। রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া যায়নি।

পাঠকের মতামত: