ঢাকা,রোববার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

পেকুয়ায় বি.এন.পির দূর্গে ৩জয়-৪ইউপিতে শোচনীয় পরাজয়ের হিসাব মিলছেনা!

পেকুয়া-ইউপি-নিবর্কাচন-150x150নিজস্ব প্রতিবেদক :::

জাতীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচন শেষ হয়েছে ৩১ মার্চ বৃহস্পতিবার। পেকুয়া উপজেলার ৭ইউনিয়নের ওই ইউপি নির্বাচনের ৩টিতে সম্মান জনক ভোট পেয়ে জিতলেও ৩টি শোচনীয় পরাজয়ের হিসাব মিলাতে পারছেনা বি.এন.পি সমর্থক সহ রাজনীতিবোদ্ধারা। পেকুয়া সদর ইউনিয়নে উপজেলা বি.এন.পির সভাপতি পেকুয়া সদর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান বাহাদুর শাহ উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ ৩বারের সুনাম অর্জনকারী সাবেক চেয়ারম্যান হেভিয়েট প্রার্থীকে ৩হাজার ৬শ ২২ ভোটের বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করেন। এ ইউনিয়নে বি.এন.পি থেকে মনোনয়ন পেতে ব্যার্থ হয়ে শাহ আলম ৯শ ভোট পেয়ে জামানাত বাজেয়াপ্ত হয়। ইসলামী আন্দোলনের হাতপাখা প্রতীকের নাছির উদ্দিন পান ২শ ভোট মূলত তিনিও বি.এন.পি ঘরনার লোক। শীলখালীতে বর্তমান চেয়ারম্যান নুরুল হোছাইন ৩হাজার ৭শ ৮৯ভোট পেয়ে ১৫৩৩ ভোটের বিশল ব্যবধানে আওয়ামীলীগের ক্লিন ইমেজের প্রার্থী ইনচানকে পরাজিত করে বিজয়ের হ্যাট্রিক অর্জন, মগনামায় অপেক্ষাকৃত তরুণ শরাফত উল্লাহ ওয়াসিম তিন তিন জন সাবেক চেয়ারম্যান ও অভিজ্ঞ লোককে হারিয়ে ৩হাজার ৫শ ১ভোট পেয়ে ৯শ ৮১ ভোটের ব্যাবধানে হারিয়ে ধানের শীষ প্রতীকের দূর্গরক্ষার মান বাচানো হলেও শোচনীয় পরাজয় বরণ করেন বি.এন.পির অপরদূর্গ খ্যাত উজানটিয়া ইউনিয়নে। সেখানে আওয়ামীলীগ প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম চৌধুরী বি.এন.পি প্রার্থীকে অর্ধেক ভোটের ব্যবধানে হারানোকে বি.এন.পির ইমেজে আঘাত হিসেবে নিচ্ছেন সমর্থকরা। রাজাখালীতে জাতীয় নির্বাচনের বার বার ফলাফল এসেছে অর্ধেকের বেশি ভোটের ব্যবধানে জয়। সেখানে বি.এন.পির প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন সিকদার মাত্র ৭শ ৮৬ ভোট পেয়ে ৫ম স্থান। বি.এন.পি সমর্থক না বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরও মানতে পারছেনা। টইট্ং ইউনিয়নের অতীতের ফলাফলে বি.এন.পির একাধিক প্রার্থী থাকার পরও বি.এন.পি প্রার্থীর ব্যবধানের বিজয়ে ইতিহাস এবার চরম ভাবে পদদলিত হয়েছে। বারবাকিয়ার জাতীয় নির্বাচনের ফলাফল বরাবর বি.এন.পিরপক্ষে আসলেও স্থানীয় ইউপি নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকের ভোটেও বি.্এন.পি কেন দখলদারিত্ব সৃষ্টি করতে পারলোনা সেটিই এখন আলোচনার বিষয়। যেখানে জামায়াত প্রার্থী ৩হাজার ৭শ ৬৯ ভোট আর আওয়ামীলীগ প্রার্থী ৩৪৪৩ ভোট লাভ সেখানে বি.এন.পি প্রার্থী মাত্র ১৪শ ৭০ভোট পাওয়াকে বি.এন.পি সমর্থক আর বোদ্ধা মহল রাজনৈতিক অদূর্দশিতাকে দায়ী করছে। উজানটিয়ায় বার বার একাধিক প্রার্থী থাকার পরও বি.এন.পির চেয়ারম্যান প্রার্থীরা জিতেছে এবার একক প্রার্থী এর সাথে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার পরও অর্ধেক ভোটের ব্যবধানে হারের কারণ খুজতে গিয়ে দেখাগেছে, অনেক বি.এন.পি যুবদলের নেতা আওয়ামীলীগ প্রার্থীর সাথে প্রকাশ্যে ভোট করেছেন। বি.এন.পির ইউনিয়ন সাংগঠনিক সম্পাদক প্রকাশ্যে অপ্রকাশ্যে দলীয় নেতাকর্মীদের ধানেরশীষে কাজ করা থেকে বিরত রেখেছেন ও তার পরিবারের সদস্য ৪নং কেন্দ্রে নৌকার পক্ষে দেখে দেখে সীল মারিয়েছেন তখন তিনি নিরব ছিলেন। এছাড়া নাসির মেম্বার প্রকাশ্যে নৌকার পক্ষে কাজ করেছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে। করিয়ার দিয়ার বি.এনপিনেতা জাফর আলম প্রকাশ্যে নৌকার পক্ষে কাজ করে নিজের মেম্বার পদ দখল করেন। তিনি ৫শ ভোট আর নৌকাও ৫শ ভোট পান যা সবার দৃষ্টি আকর্ষিত হয়। এছাড়া বি.এন.পি দূর্গখ্যাত উজানটিয়া এস.এস.সিনিয়র মাদ্রাসা কেন্দ্রে ধানেরশীষ মাত্র ভোট পায় ১৩০ ভোট আর নৌকা ৫শ ৬০ ভোট। যা যে কোন নির্বাচনী ইতিহাসে উজানটিয়ার রেকর্ড় ভঙ্গ। এব্যাপারে উজানটিয়ায় বি.এন.পির প্রার্থী রেজাউল করিম মিন্টু বলেন, সাধারণ লোকজন আমাকে ভোট দিয়েছে, বি.্এন.পির বেশির সংখ্যক নেতাকর্মী প্রকাশ্যে গোপনে নৌকার পক্ষে কাজ করেছে। অনেক কেন্দ্র থেকে আমার এজেন্টকে বের করে দিয়েছে। এছাড়া ৭, ৮ ও ৫ নং কেন্দ্রে সুক্ষ কারচুপির মাধ্যমে নৌকা প্রতীক প্রায় ১৮শ ভোট কেটে নিয়েছে। এদিকে বারবাকিয়ায় তরুন বি.্কএন.পি প্রার্থী ইজ্ঞনিয়র সাইফুকে হঠাৎ করে জামায়াত প্রার্থীর অধ্যক্ষ বদিউল আলমের মতো অভিজ্ঞ বিশাল ইমেজের ব্যক্তি বিপক্ষে ভোটে নামিয়ে দিয়ে সিনিয়র নেতাকর্মীরা কেউ ভোটের ময়দানে ছিলনা বলে গঞ্জণ ওঠেছে। উপজেলা বি.এন.পির সাধারণ সম্পদক গত বারের নির্বাচনে নিজে প্রার্থী ছিলেন, সামান্য ভোটের ব্যবধানে হারলেও এবার তিনি নিজে প্রার্থী না হয়ে তরুণ সাইফ’কে প্রার্থী করেন। তার বিরুদ্ধে নির্বাচনী প্রচার প্রাচারণা থেকে বিরত থাকারও অভিযোগ আছে এমনকি তিনি নিজে ভোট পর্যন্ত দিতে কেন্দ্রে যায়নি বলে চাউর ওঠায় বি.এন.পি সমর্থকদের মাঝে তার ভবিষ্যত রাজনীতি নিয়ে সংচয় দেখা দিয়েছে। টইটং এর জনপ্রিয় বর্তমান চেয়ারম্যান মোসলেম উদ্দিন বি.এন.পি সমর্থিত চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পরও তাকে প্রার্থী না দিয়ে রাজনৈতিক ময়দানে না থাকা বয়োবৃদ্ধ রমিজ আহমদকে প্রার্থী করায় অনেক নেতাকর্মী তার পক্ষে নির্বাচনী কাজ না করা ও তার নিজের বিরুদ্দেও নির্বাচনে জয়ী হওয়ার মতো ক্রিয়াশীল নির্বাচনী কাজ কর্ম না করার অভিযোগ ওঠেছে। যার ফলে বি.এন.পির দুর্গে থেকেও জয় লাভ করতে পারেনি। এছাড়া আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী জাহেদ ৫টি কেন্দ্রে ভোট কেটে নিলেও বি.এন.পি নেতাকর্মীরা নিরব ভ’মিকায় থাকায় পরাজয়ের ব্যবধান বেশির সাথে প্রতীদ্বন্ধিতায় আসতে পারেনি। রাজাখালীতে সবচেয়ে শোচনীয় পরাজয় হয়েছে বি.এন.পি প্রার্থীর। অভিজ্ঞ আনোয়ার হোছাইন সিকাদার নিজেই হেভিয়েট প্রার্থীর সাথে ধানেরশীষপ্রতীক নিয়েও নিজের পক্ষে নির্বাচনী আবাহ তুলতে পারেননি। বি.এন.পির বিদ্রোহী প্রার্থী নুরুল আবছার বদু ভোট করা, এক সময়ের যুবদল নেতা শাহাবউদ্দিন জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচন, জামায়াত থেকে হুমায়ুন ভোট করা আর বি.এন.পির প্রার্থী দীর্ঘদিন মাঠে না থাকাকে দায়ী করছে স্থানীয় নেতাকর্মীরা। স্থানীয় নেতাকর্মীরা বি.এন.পি প্রার্থীকে অনেকটা নির্বাচনী মাঠে নিরব থাকায় এত বিপর্জয় বলে মনে করেন। বি.এন.পি যে কোন নির্বাচনে রাজাখালীতে অন্যান্য প্রার্থীর চেয়ে দু তিন গুণ ভোট বেশি লাভ করলেও এবারই প্রথম চরম বিপর্জয় হলো। এছাড়া উপজেলা বি.এন.পির পক্ষ থেকে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ৭ইউনিয়নের নির্বাচনকে মনিটরিং এর জন্যে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলেও অনেক স্থানীয় নেতাকর্মী অভিযোগ তুলেন। এব্যাপারে পেকুয়া উপজেলা জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের সভাপতি মুজিবুল হক চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, টইটং এ আওয়ামীলীগ প্রার্থীর ত্রাসের কাছে বি.এন.পি প্রার্থীর পরাজয় হয়েছে, রাজাখালীতে সুবিধাভোগী প্রার্থীকে বি.এন.পি সমর্থকরা মেনে নেয়নি। এছাড়া প্রার্থীর নিজেরও নির্বাচন মুখী ছিলনা বলে বড় বিপর্যয় হয়েছে বলে উল্লেখ করেন।তিনি আরো বলেন, যে সব ইউনিয়নে প্রশাসন নিরপেক্ষ ভুমিকা পালন করেছে সে সব ইউপিতে বি.এন.পি প্রার্থীরা জয়ী হয়েছে।আআ

পাঠকের মতামত: