পেকুয়ায় ত্রান বিতরন নিয়ে সাহায্য সংস্থা মুক্তি, কক্সবাজার এর সাথে মগনামা ইউপির চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ ওয়াসিমের দ্বন্ধ দেখা দিয়েছে। রোয়ানু ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় এনজিও সংস্থা মুক্তি উপজেলার মগনামা ইউনিয়নে ত্রান বিতরন কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থদের প্রাথমিক তালিকা প্রস্তুত ও উপকারভোগি নির্বাচন নিয়ে চেয়ারম্যান ও মুক্তির সাথে প্রকাশ্যে দ্বন্ধ দেখা দিয়েছে। চেয়ারম্যান অযাথা হস্তক্ষেপ করায় এনজি সংস্থা মুক্তির সাথে তার ¯œায়ু বিরোধ বলে দায়িত্বশীল সুত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে মুক্তি কক্সবাজারের প্রকল্প ব্যবস্থাপক নুরুল আমিন জানিয়েছেন চেয়ারম্যান ওয়াসিম তার কিছু অনুগত লোককে ক্ষতিগ্রস্থ তালিকায় অর্ন্তভুক্তির জন্য আমাদের উপর চাপ সৃষ্টি করেছিল। আমাদের কাজ হচ্ছে অত্যন্ত স্বচ্ছ। আমারা নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা প্রস্তুত করে থাকি। সরেজমিনে গিয়ে ক্ষয়ক্ষতি স্বচোক্ষে দেখে মুক্তির মাঠকর্মীরা তালিকা প্রস্তুত করেন। চেয়ারম্যান ওই তালিকা রি-কমেন্ড করে থাকেন।
এদিকে মগনামা ইউনিয়নে ত্রান বিতরন নিয়ে পক্ষপাতিত্বের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে বিএনপি দলীয় চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ ওয়াসিমের বিরুদ্ধে। ঘুর্নিঝড় রোয়ানুর পর থেকে মগনামায় যেসব ত্রান বিতরন করা হয়ছে এসবের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে তার দলীয় অনুগত লোকজনকে। ত্রান সরকার বরাদ্ধ দিলেও মগনাময় ক্ষমতাসীন দলের সমর্থকদের ত্রান থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। যেসব এলাকায় সংখ্যায় আ’লীগ বেশি ওইসব এলাকায় এ পর্যন্ত কোন ধরনের ত্রান পৌঁছেনি।
মগনামা ইউনিয়নের মিয়াজিপাড়া, আফজলিয়াপাড়া, করলিয়াপাড়া, সিকদারপাড়া, সাতঘরপাড়া, পশ্চিমকুল এলাকায় রোয়ানুর পর থেকে ত্রান তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে। এসব এলাকায় ঘুর্নিঝড় রোয়ানুর কোন ধরনের প্রভাব পড়েনি। মগনামায় কাকপাড়া, ডলিন্নাপাড়া, কালারপাড়া, শরতঘোনা, পশ্চিম বাজারপাড়া, মগঘোনা, হারুন মাতবরপাড়া, হারঘরপাড়া, লালমিয়াপাড়া, দরদরিঘোনা, মাঝিরপাড়া, ধারিয়াখালী, বাইন্যাঘোনা, মটকাভাঙ্গা, চেরাংঘোনা এলাকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ।
ওই এলাকাগুলোতে গত ২০দিন ধরে হাজার হাজার মানুষ পানি বন্দি রয়েছে। বাড়িঘর পানির নিচে আছে। এসব এলাকায় মুক্তির কোন ত্রান সহায়তা এখনো পৌছেনি। সরকারি জিআর চালসহ যে সব ত্রান সহায়তা দেয়া হয়েছে এসবেরও ছোঁয়া লাগেনি ওই এলাকাগুলোতে। চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ ওয়াসিম তার নিজ এলাকাগুলোকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে ত্রান সহায়তায়।
মুক্তি কক্সবাজারের প্রজেক্ট ম্যানেজার নুরুল আমিন জানায় আমরা উপজেলার উজানটিয়া ও মগনামা ইউনিয়নে ক্ষতিগ্রস্থ এক হাজার পরিবারকে ত্রান সহায়তা দিচ্ছি। প্রত্যেক পরিবারকে নগদ চার হাজার টাকা, কলসি, ডেকসি, সাবান, কাপড় সহায়তা দেয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে ওই দু’ ইউনিয়নে আরো চার শত পরিবারকে একইভাবে ত্রান সহয়াতা দেয়ার পরিকল্পনা আছে। তবে অনুকুল পরিবেশ থাকতে হবে। কেউ অযাথা বাড়াবাড়ি করলে আমরা সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে পারি।
মাঠ পর্যায়ের মুক্তির কয়েকজন মাঠকর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায় মগনামায় আমাদেরকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিচ্ছেনা চেয়ারম্যান। শর্ত দিচ্ছে তার নিজস্ব লোকজনকে তালিকাভুক্ত করতে হবে।
ফুলতলা এলাকার শাহআলম, রশিদ আহমদ, মোস্তাক আহমদ, মটকাভাঙ্গা এলাকার সোলেয়মান, আমির হোসেন জানায় মুক্তি মগনামা থেকে ত্রান না দিয়ে চলে যেতে চাচ্ছে। তারা চেয়ারম্যানের কারনে মুখ ফিরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা রিলিফ না দিয়ে চলে গেলে বঞ্চিত হব আমরা।
৫নং ওয়ার্ড়ের ইউপি সদস্য মো.আলমগীর জানায় আমার ওয়ার্ড়ে একমুঠো চালও পাইনি। চিড়ামুড়ি সরকার দিলেও চেয়ারম্যান প্রচার করছিল তিনি ব্যক্তিগতভাবে দিচ্ছেন। দরদরিঘোনা ও মগঘোনার মানুষ এখনো পানিতে ভাসছে। নৌকার ভোট বেশি পড়ায় চেয়ারম্যান ওয়াসিম ক্ষিপ্ত হয়েছেন পুরো ওয়ার্ড় বাসিকে নিয়ে।
পাঠকের মতামত: