কক্সবাজারের পেকুয়ায় মগনামা ইউনিয়নে কাটাফাঁড়ি নদীর চর দখলের মহোৎসব চলছে। ইউনিয়ন যুবদলের সহ-সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম পুর্ব ধারিয়াখালী এলাকায় জেগে উঠা চর জবর-দখলের মহোৎসবে মেতেছে। তিনি ওই ইউনিয়নের মৃত.শামসুল আলমের ছেলে। নিজের মাথাখিলা দাবি করে নদীর বিপুল জেগে উঠা চর বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ টাকা। সম্প্রতি কাটাফাঁড়ি সোনালী বাজার সড়কের লায়ন মুজিবুর রহমানের বাড়ির দক্ষিন-পুর্ব পাশে বেড়িবাঁধের পুর্ব পাশে অবৈধ স্থাপনা তৈরির কাজ চলমান রেখেছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবোর) মালিকানাধিন জায়গাতে যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলাম একটি বসতবাড়ি নির্মানের কাজ অব্যহত রেখেছে। পাউবো সমন্বিত মৎস্য চাষের শর্তে জায়গা উপকারভোগিদের লীজ দেয়। কিন্তু জোট সরকারের সময় প্রচন্ড ক্ষমতাধর এ যুবদল নেতা সরকারি এসব জায়গা লীজের শর্ত ভঙ্গ করে ওই স্থানে তৈরি করছেন বসতবাড়ি। স্থায়ী বসতবাড়ি গড়ে তুলতে ওই যুবদল নেতা কাটাফাঁড়ি সোনালী বাজার সড়কের বিপুল অংশে বিক্রির পরিকল্পনা নিয়েছেন। ইতিমধ্যে একটি বসতবাড়ি তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। গতকাল রবিবার সকালে সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা গেছে কাটাফাঁড়ি নদীর চর দখল চলমান রয়েছে। তৌহিদুল ইসলাম ওই স্থানে পাউবোর ২০শতক জায়গা ননজুডিসিয়াল ষ্ট্যাম্পমুলে বিক্রি করে দিয়েছে। উজানটিয়া ইউনিয়নের পেকুয়ার চর এলাকার হাজি¦ আব্দুল কাদেরের ছেলে নুর কালামের কাছ থেকে এক লাখ টাকা নিয়ে ওই জায়গা দখল দিয়েছেন। নুর কালাম নদী ভাঙ্গন এলাকার বাসিন্দা। গত কয়েক বছর আগে তিনি উজানটিয়া ছেড়ে পরিবার নিয়ে পেকুয়া সদর ইউনিয়নের সিকদার পাড়া এলাকায় বসবাস করছিলেন। নুর কালাম জানায় স্থায়ী বসবাসের জন্য এ জায়গাটি আমি তৌহিদুল ইসলামের কাছ থেকে ষ্ট্যাম্পমুলে কিনে নিয়েছি। ৭৫হাজার টাকা নগদ পরিশোধ করেছি। ষ্ট্যাম্পে তিন জন স্বাক্ষি আছে। এক সপ্তাহ ধরে জায়গায় আমি মাটি কেটে ঘর ভিটা তৈরির কাজ করছি। এদিকে নুর কালাম পাউবোর জায়গায় বড় পরিসরে ঘর নির্মান কাজ করছে। গাছের খাট দিয়ে চাল তৈরির কাজ হচ্ছে। টিনের ছালের জন্য খাটের কারিগরদের কাজ করতে দেখা গেছে। মটকাভাঙ্গা ও ধারিয়াখালী এলাকার বাসিন্দারা জানায় তৌহিদ আধা কি.মিটার জুড়ে চর বিক্রির উদ্যেগ নিয়েছে। প্লট আকারে এ জায়গা বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা তার পকেটে নিতে ইতিমধ্যে প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তৌহিদ সাবেক মগনামা ইউনিয়ন ছাত্রদলেরও সহ-সভাপতি ছিলেন। বর্তমান ইউনিয়ন যুবদলের সহ-সভাপতি। জোট সরকারের সময় তৌহিদ ওই এলাকায় আতংক ছিলেন। গুদির নাম দিয়ে নদীর পানি থেকে লবন চাষিদের ট্যাক্স নিতেন তিনি। মগনামা ও উজানটিয়া ইউনিয়নের হাজার হাজার লবন চাষিকে জিম্মি করে তিনি হাতিয়ে নিতেন লাখ লাখ টাকা। সে সময় ১৫আগষ্ট উদযাপনের সময় সোনালী বাজারে তৌহিদ ও ছাত্রদল-যুবদলের ক্যাডাররা আ’লীগ নেতাদের বাঁধা দেয়। এ সময় দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। কিন্তু ছাত্রদলের স্বসস্ত্র ক্যাডাররা ওইদিন বঙ্গবন্ধু মৃত্যু বার্ষিকীতে কাঙ্গলী ভোজের সব ভোজন নষ্ট করে দেয়। এখন ওই যুবদল নেতা বীর দর্পে জবর-দখল করে বিক্রি করছেন সরকারি বিপুল জায়গা। এ ব্যাপারে ইউনিয়ন যুবদলের সহ-সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম জানায় এ জায়গা আমাদের মাথাখিলা। পাউবোর কাছ থেকে আমরা লীজ নিয়েছি। লীজ নিলে বিক্রি করা যায় কিনা এমন প্রশ্ন করলে তিনি কোন ধরনের উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান। পানি উন্নয়ন বোর্ড কক্সবাজারের রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তা নাছির উদ্দিন জানায় আমরা মৎস্য চাষ ও মুরগি খামারের জন্য জায়গা লীজ দিয়ে থাকি। শর্ত ভঙ্গ করে কেউ অবৈধ কার্যক্রম পরিচালনা করলে লীজ বাতিল করবে কর্তৃপক্ষ। যারা এ কাজ করছে আপনারা তাদের বিরুদ্ধে রিপোর্ট করেন। পত্রিকায় আসলে আমরা ওই লীজ বাতিল করব। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।
পাঠকের মতামত: