ঢাকা,সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪

পেকুয়ায় অনুমোদনহীন অবৈধ ২২সমিলই উজাড় করছে বনাঞ্চল

পেকুয়া প্রতিনিধি ::

কক্সাবাজারের পেকুয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের হাটে বাজারে স্থাপিত্ ২২টি অবৈধ করাতকলে রাত-দিন চিরাই হচ্ছে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের বিভিন্ন প্রকারের গাছ। উপজেলার টৈটং, শিলখালী ও বারবাকিয়া ইউনিয়নে সংরক্ষিত বনাঞ্চল থাকায় এসব ইউনিয়নের করাতকল গুলোতে সবচেয়ে বেশি বনাঞ্চলের গাছ এনে প্রকাশ্যে চিরাই হচ্ছে।
স্থানীয় পরিবেশবাদীদের সূত্রে জানা যায়, পেকুয়া উপজেলার টৈটং ইউনিয়নের হাজী বাজারে ২টি, বারবাকিয়ার মৌলভীবাজারে ২টি, টৈটং বাজারে ১টি, শিলখালী ইউনিয়নের স্কুল ষ্টেশনে ১টি, শিলখালী আইডিয়েল একাডেমীর পার্শ্বে ১টি, বারবাকিয়া ইউনিয়নে বারবাকিয়া বাজারের পশ্চিম পার্শ্বে ২টি, ফাঁশিয়াখালী ব্রীজ সংলগ্ন ২টি,  পেকুয়া সদর ইউনিয়নে আলহাজ্ব কবির আহমদ চৌধুরী বাজারের পূর্ব পার্শ্বে ৪টি ও পশ্চিম পার্শ্বে ২টি, চড়াপাড়া বাজারে ৩টি, রাজাখালী ইউনিয়নে আরবশাহ বাজারে ২টি, মগনামা ফুলতলা ষ্টেশনে ১টি লাইসেন্স বিহীন অবৈধ করাতকল রয়েছে। সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ৩কিলোমিটার অভ্যন্তরে কোন প্রকার করাতকল বসানোর নিয়ম না থাকলেও ৬টি করাতকল সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ১/২কিলোমিটারের ভিতরে বসানো হয়েছে।
স্থানীয় বনবিভাগ বলছে, এসব করাতকলের মালিকানা কয়েকজন প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ ও বিএনপি নেতার হওয়ায় এগুলো উচ্ছেদ করা যাচ্ছে না। এদিকে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, টৈটং ইউনিয়নের পাহাড়ী জনপদ হাজীবাজারে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় বিএনপির এক নেতা খোকন ও সাবেক ছাত্রলীগ এর এক নেতা বাজারে পশ্চিম পাশে পাশাপাশি ২টি অবৈধ করাতকলে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের কাঠ দেদারছে গাছ চিরাই করে বিক্রি করছে। এছাড়া তাদের করাত কলের সংলগ্ন এলাকায় বিপুল পরিমাণ গাছ মজুদ রেখেছেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এসব গাছ রাতের আধারে সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে অসাধু গাছ চোর দ্বারা সংগ্রহ করা হয়েছে। স্থানীয় বনদস্যু ও বনবিভাগের কতিপয় কর্মকর্তার যোগসাজশে করাতকলের মালিকরা রাতের আঁধারে প্রতিদিন গাছ নামাচ্ছে পাহাড় থেকে। এসব করাতকল বনাঞ্চলের পার্শ্ববর্তী হওয়ায় সবচেয়ে বেশি কাঠ চিরাই হচ্ছে। এছাড়া অন্যান্য করাতকলেও সমানতালে চিরাই হচ্ছে বনাঞ্চলের কাঠ।
স্থানীয়রা আরো জানায়, লাইসেন্স বিহীন এসব করাতকলের কারণে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হলেও সরকারের সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ করাতকল মালিকদের কাছ থেকে নিয়মিত অনৈতিক সুবিধা আদায় করে তাদেরকে বনাঞ্চলের কাঠ উজাড় করতে সহায়তা করছে। সরকারী বিধি অনুযায়ী বনবিভাগের ৩ কিলোমিটারের মধ্যে কোন প্রকার করাতকল বসানোর নিয়ম না থাকলেও কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি অবৈধভাবে করাতকল বসিয়েছে। ফলে সরকার লক্ষ লক্ষ টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বন কর্মকর্তারা বিভিন্ন করাতকলে বিভিন্ন সময় অভিযান পরিচালনা করার কথা সাংবাদিকদের জানালেও এ পর্যন্ত কোন করাতকলে তারা অভিযান পরিচালনা করেনি।
এ ব্যাপারে বারবাকিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা বলেন, লাইসেন্সবিহীন অবৈধ করাতকলগুলোতে শীঘ্রই অভিযান পরিচালনা করা হবে।

পাঠকের মতামত: