চকরিয়া উপজেলার ১৮ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এলাকায় মোট কৃষি জমির পরিমাণ ২২ হাজার হেক্টর তথা ৫৫ হাজার একর। এসব জমিতে প্রতিবছর বর্ষা ও শুস্ক মৌসুমে আমন ইরি বরো এবং রকমারি সবজি চাষ করা হচ্ছে। বেশিরভাগ জমিতে বছরে দুইসনা চাষ করে থাকেন কৃষকেরা। আবার কিছু কিছু জমিতে তিনসনা চাষও করা হচ্ছে। এতে করে চকরিয়া উপজেলা পুরো কক্সবাজার জেলার মধ্যে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে
একটি স্বনির্ভর জনপদে পরিণত হয়েছে। যা চলতি ২০২৪ -২০২৫ অর্থবছরে আমন চাষে রেকর্ড বাম্পার ফলনের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা কৃষি সম্প্রারণ অধিদপ্তর কতৃক দেওয়া সমীক্ষা প্রতিবেদনে জানা গেছে, চকরিয়া উপজেলার ১৮ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এলাকায় ১৯ হাজার পাঁচশত হেক্টর জমিতে সর্বাধিক ৭১ হাজার ৩০ মেট্টিক টন ধান উৎপাদন হয়েছে। যার মাধ্যমে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আমন চাষে কক্সবাজার জেলায় সর্বাধিক রেকর্ড সাফল্য দেখিয়ে শীর্ষে রয়েছে চকরিয়া উপজেলা। একইভাবে চকরিয়া উপজেলা রকমারি সবজি উৎপাদনেও থাম্পার ফলন হয়েছে।
নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে এসব সাফল্য বিবেচনা করে মাঠপর্যায়ের কৃষকদের চাষাবাদের প্রতি আরও বেশি উদ্বুদ্ধ করতে মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ফসলের ক্ষেত পরিদর্শন করতে এসেছেন কৃষি সম্প্রারণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপপরিচালক মো: আতিক উল্লাহ।
তিনি এদিন বিকালে চকরিয়া পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের তরছপাড়া এলাকায় স্থানীয় কৃষি বিভাগের আয়োজনে কৃষকদের নিয়ে একটি উদ্বুদ্ধকরণ সভায় উপস্থিত থেকে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।
উদ্বুদ্ধকরণ সভায় কৃষিবিদ মো: আতিক উল্লাহ বলেন, চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে চকরিয়া উপজেলা নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের জন্য একটি সুপরিচিত জনপদ। যার প্রমাণ এবছর চকরিয়া উপজেলা জেলার মধ্যে সর্বাধিক ৭১ হাজার ৩০ মেট্টিক টন ধান উৎপাদন করে রেকর্ড গড়েছে। সেই সাফল্য থেকে বলতে পারি এই এলাকার কৃষকেরা চাষাবাদে বেশ মনোযোগী। তাঁরা জমিতে কায়িক শ্রমের বিনিময়ে সোনা ফলাতে পারে।
আমরা চাই, কৃষকেরা চাষের মাধ্যমে কৃষি জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা হোক। সেইজন্য এখন থেকে একসনা জমিকে দুইসনা, দুইসনা জমিকে তিন সনা, তিন সনা জমিকে চার সনা চাষের আওতায় করার ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে উৎপাদন বাড়ানো নিশ্চিত করা যায়। কারণ কৃষকের সমৃদ্ধি মানে, একটি দেশের সমৃদ্ধি। কৃষকের নিরাপদ ফসল উৎপাদনে এগিয়ে যেতে পারে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্দি। পাশাপাশি জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার বাড়িয়ে আরও বেশি নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন বাড়ানো গেলে দেশের জনগণের চাহিদা পুরণ করা সহজ হবে।
উদ্বুদ্ধকরণ সভায় আরও বক্তব্য দেন চকরিয়া উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি অফিসার শাহনাজ ফেরদৌসী, উপজেলা কৃষি বিভাগের উদ্ভিদ সংরক্ষণ অফিসার মোঃ মহিউদ্দিন, উপসহকারী কৃষি অফিসার (উন্নয়ন শাখা) রাজীব দে, চকরিয়া পৌরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি অফিসার আরিফৃল ইসলাম এবং স্থানীয় কৃষকেরা।
উপপরিচালক কৃষিবিদ মো: আতিক উল্লাহ চকরিয়া উপজেলার ফসলের ক্ষেত পরিদর্শন শেষে স্থানীয় কৃষকদের মাঝে জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতকরণে দিকনির্দেশনা মুলক পরামর্শ প্রদান করেন। তাঁর আগে তিনি কক্সবাজার জেলা কৃষি সম্প্রারণ অধিদপ্তরের আওতাধীন টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ফসলের ক্ষেত পরিদর্শন ও জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতকরণে কৃষক এবং কৃষি বিভাগের এসএএওকে পরামর্শ প্রদান করেন।
পাঠকের মতামত: