ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

টেকনাফের ৮৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই

জসিম মাহমুদs m :
আজ  আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। টেকনাফ উপজেলায় ৯৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮৩ টিতেই শহীদ মিনার নেই। এর ফলে উপজেলার ৩৪ হাজার ১৮৩ শিক্ষার্থী একুশে ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস যথাযথভাবে পালন করতে পারবে না।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি এরশাদুর রহমান বলেন, শহীদ মিনার না থাকায় কোমলমতি শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও ভাষা আন্দোলনের সঠিক ইতিহাস জানতে পারছে না। তাই জরুরি ভিত্তিতে বিদ্যালয়গুলোতে শহীদ মিনারের ব্যবস্থা করা হোক।
এরশাদুর রহমান বলেন, প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করার উদ্যোগ নেওয়ার জন্য উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভায় আলোচনা করা হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলায় একটি পৌরসভা ও ছয়টি ইউনিয়ন রয়েছে। তার মধ্যে চারটি স্থানে কেবল শহীদ মিনার আছে। এ ছাড়া উপজেলায় সরকারি ও রেজিস্টার্ড প্রাথমিক ৬৯টি বিদ্যালয়ের মধ্যে শুধু টেকনাফ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সেন্টমার্টিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার রয়েছে। এতে প্রাথমিক স্তরের ২২ হাজার ৭৫৭ শিক্ষার্থীরা দিবসটি যথাযথভাবে পালন করতে পারবে না।
অন্যদিকে, উচ্চমাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও নিম্নমাধ্যমিক এবং মাদ্রাসাসহ ২৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৩টিতে শহীদ মিনার থাকলেও টেকনাফ ডিগ্রি কলেজসহ ১৬টি প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। এসব প্রতিষ্ঠানে ১১ হাজার ৪২৬ শিক্ষার্থী রয়েছে।
পল্লানপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী দিলনেওয়াজ ও শাহপরীর দ্বীপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী রোখসানাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল শহীদ মিনারে কখনো গেছে কি না? উত্তরে তারা বলে, শহীদ মিনারের কথা তারা বইতে পড়েছে। কিন্তু কখনো শহীদ মিনারে গিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানানো হয়নি। টেকনাফ কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কলেজ প্রতিষ্ঠার প্রায় ২৩ বছরেও একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়নি। ২০১৫ সালে কলেজে বেঞ্চ, কাপড়, বাঁশ ও মাটি দিয়ে একটি অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়েছিল।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাথমিক ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা আশীষ বোস বলেন, নতুন প্রজন্মের সামনে ভাষা আন্দোলনের চেতনা সঠিকভাবে তুলে ধরতে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকা উচিত। শহীদ মিনার দেখে একুশে ফেব্রুয়ারি সম্পর্কে জানতে আগ্রহ প্রকাশ করবে শিক্ষার্থীরা।
উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার নুরুল আবছার বলেন, অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকায় শিক্ষার্থীরা দিবসটি যথাযথভাবে পালন করতে পারে না। শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য সরকারিভাবে বরাদ্দ থাকা উচিত।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) টেকনাফের সাধারণ সম্পাদক এ বি এম আবুল হোসেন বলেন, ‘ভাষা আন্দোলনের ৬৫ বছরে পা দিলেও অনেকেই এর সঠিক ইতিহাস জানে না। মাতৃভাষার সঠিক ইতিহাস জানতে ও ভাষাসৈনিকদের শ্রদ্ধা জানাতে তিনি সরকারের কাছে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানান। ‍

পাঠকের মতামত: