ঢাকা,শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়া-পেকুয়া আসনে বিএনপি-জামায়াত তাকিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে : মাঠে তৎপর আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::

জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী মানুষের দুর্গ কক্সবাজারের চকরিয়া-পেকুয়া এলাকা। সেই ১৯৭৩ সালের পর থেকে প্রতিটি সংসদ নির্বাচনে এখানে জিতেছে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসীরা; কিন্তু এই এলাকাতেই বিগত ১০ বছর ধরে চরম দুঃসময় পার করছেন বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা। এ রকম নিজস্ব ঘাঁটিতেই এখন নীরবতাই একমাত্র কর্মসূচিতে পরিণত হয়েছে তাদের। দেশের চলমান রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে সামনের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রাক-প্রস্তুতি দেখা যাচ্ছে শুধু আওয়ামী লীগের এবং তার পরের অবস্থান জাতীয় পার্টির। প্রচার-প্রচারণায়, গণসংযোগ ও সমাবেশে সরব আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টিরও কিছু তৎপরতা দৃশ্যমান। এই অবস্থায় আওয়ামী লীগ এবার এই আসনে জয়লাভ করার স্বপ্নে বিভোর তবে জাতীয় পার্টিও জোটগতভাবে আসনটি ধরে রাখতে চাইছে। বিনা ভোটে নির্বাচিত বর্তমান সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ ইলিয়াছ যেকোনো মূল্যে আসনটি ধরে জোটগতভাবে পাওয়ার আশায় দিন গুনছেন। তবে অনেক বাধা-বিপত্তির মধ্যেও সংগঠিত হয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে এখানে ২০ দলীয় জোটের প্রার্থীই পাস করার শতভাগ সম্ভাবনা তো থাকছেই। এর মধ্যে ভারতের আদালতে চকরিয়া পেকুয়ার গণমানুষের প্রিয় নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ খালাস পাওয়ায় দারুণভাবে উজ্জীবিত জাতীয়তাবাদী পরিবারের সদস্যরা। সালাহ উদ্দিন আহমদ ভারতের প্রত্যার্পন আইনের প্রক্রিয়ায় দ্রুত দেশে আসছেন। এ কারণে বিএনপি নেতাকর্মীদের আশা তিনি নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন। সালাহউদ্দিন আহমদের সহধর্মিণী হাসিনা আহমদ সেই আশার কথা জানিয়ে নয়া দিগন্তকে বলেন, ওনার ইচ্ছা পারলে এই মুহূর্তে দেশে চলে আসতেন। কিন্তু এটিতো ওনার চাওয়ার ওপর নির্ভর করছে না। কোর্টের অর্ডার শিলংয়ের এসপি অফিসে পৌঁছেছে বলে খবর পেয়েছি এবং বাকি প্রসেসিংও চলছে। আমরা আশা করছি তিনি শিগগির দেশে ফিরে আসবেন। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, সব আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যেও ওনি চকরিয়া-পেকুয়ার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন। দুয়ারে কড়া নাড়ছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
নির্বাচনে তফসিল ঘোষণার আগ মুহূর্তে কক্সবাজার সংসদীয় আসন-১ তথা চকরিয়া পেকুয়ায় আওয়ামী লীগ থেকে প্রার্থী হতে বিরামহীন নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছেন চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আলাম এমএ। সেই সাথে আওয়ামী লীগ থেকে একাধিক প্রত্যাশী প্রার্থী থাকলেও এখন মাঠে আছেন কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ সিআইপি এবং চকরিয়া উপজেলার পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা রেজাউল করিম। সরব রয়েছেন জাতীয় পার্টির এমপি হাজী মোহাম্মদ ইলিয়াছ (বিনা ভোটে নির্বাচিত)। আছেন জাতীয় পার্টির (মঞ্জু) নেতা ও কক্সবাজার জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সালাহউদ্দিন মাহমুদ। জামায়াতের আরিফুর রহমান চৌধুরী মানিকও সক্রিয় রয়েছেন।
এদিকে ভারতের আদালতে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ খালাস পাওয়ায় নতুন সমীকরণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন মনোনয়নপ্রত্যাশী অন্য প্রার্থীরা। কারণ আইনি জটিলতা না থাকলে তিনিই ২০ দলের প্রার্থী হিসেবে লড়বেন এটি নিশ্চিত। তিনি প্রার্থী হলে এবং মানুষ ভোট দিতে পারলে ফলাফল ভাবনারও বাইরে যাবে বলে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধারণা। চকরিয়া বিএনপি নেতা অধ্যাপক ফখর উদ্দিন ফরায়েজি বলেন, চকরিয়া-পেকুয়ার উন্নয়নের রূপকার সালাহউদ্দিন আহমদকে ভোটের মাধ্যমে পরাজিত করা অনেক কঠিন হবে। তিনি চকরিয়া পেকুয়ার ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন যার সুফল মানুষ চিরদিন ভোগ করবে।
সাবেক সংসদ সদস্য হাসিনা আহমেদ চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘আমার স্বামী সালাহউদ্দিন আহমদ চকরিয়া-পেকুয়ার গণমানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। এলাকায় তিনি বেশ জনপ্রিয়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হবেন এই প্রত্যাশা সাধারণ ভোটারের।
সরেজমিনে দেখা যায়, চকরিয়া পেকুয়া এলাকায় এখন জনমানুষের মধ্যে আলোচনা সবশেষে কারা হচ্ছেন জোট বা মহাজোটের প্রার্থী। আওয়ামী লীগ থেকেই বা কে পাচ্ছেন দলীয় মনোনয়ন। এরই মধ্যে এলাকায় চাউর হয়েছে উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আলমই পাচ্ছেন নৌকা। তিনি নিজেও বিভিন্ন স্থানে বলে বেড়াচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী তাকে এলাকায় ভালোভাবে কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। এতেই তিনি উদ্বুদ্ধ হয়ে আশান্বিত হয়ে পড়েছেন দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে। জাফর আলম বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতির হাল ধরার পর থেকেই দলের জন্য নিবেদিত হয়েই কাজ করে যাচ্ছি। চকরিয়া-পেকুয়াতে বিএনপি-জামায়াতের ব্যাপক নাশকতার অপতৎপরতা নেতাকর্মীদের নিয়ে কঠোরভাবে দমন করেছি। আমি আশা করি, একাদশ সংসদ নির্বাচনে আমাকেই মনোনয়ন দেবে এবং এরই মধ্যে আমি হাই কমান্ড থেকে সেই ইঙ্গিতও পেয়েছি।
তবে প্রার্থিতা ও দলীয় মনোনয়ন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী সালাহউদ্দিন আহমদ সিআইপি বলেন, সম্প্রতি আমরা নেত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করেছি। দলের পক্ষে এখনো কাউকে তিনি নিশ্চিত করেননি মনোনয়নের বিষয়ে। তিনি বলেন, ‘দলের দুঃসময়ে আমিই হাল ধরে রেখেছিলাম। দলের মনোনয়ন পেয়ে বিগত কয়েকটি নির্বাচনে আমি নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছিলাম। কিন্তু দলেরই একটা অংশ আমার বিরুদ্ধে নির্বাচনে কাজ করেছেন বলে আমার জেতা হয়নি। এর পরও আমি দল ছেড়ে চলে যাইনি। আমাকে এবারো দলের মনোনয়ন দেয়া হবে বলে আমি আশাবাদী। তবে আমাকে ছাড়া অন্য কাউকেও দল মনোনয়ন দিলে তার পক্ষেই আমি কাজ করব।’ চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কক্সবাজার জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম লিটু চকরিয়া নিউজকে বলেন, চকরিয়া-পেকুয়া আসনের নির্বাচন খুবই কঠিন হবে। যেহেতু এই আসনে বিএনপির সালাহউদ্দিন আহমদ একজন শক্তিশালী প্রার্থী, তার সাথে লড়াই করে নির্বাচনে জয়ী হয়ে আসাটা সহজ হবে না। সে জন্য আওয়ামী লীগে জাফর আলমের মতো প্রার্থীর প্রয়োজন রয়েছে।
আওয়ামী লীগের অন্যতম মনোনয়নপ্রত্যাশী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম চকরিয়া নিউজকে বলেন, আমার মতে, চকরিয়া-পেকুয়ায় বর্তমানে আওয়ামী লীগ থেকে তিনজন প্রার্থী তীব্রভাবে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী। এই মুহূর্তে মাঠপর্যায়ের দলের কর্মী-সমর্থক ও সাধারণ মানুষের মতামত হচ্ছে, ভোটারেরা ভদ্রলোক ও জনগণের কাছে বিশ্বস্ত একজন নেতাকে ভোট দিতে আগ্রহী। উক্ত তিনজন থেকে সেই গুণের প্রার্থীকে মনোনয়ন দিলে তিনিই ভালো ফলাফল আনতে পারবেন। আমি উপজেলা চেয়ারম্যান থাকাকালে এবং পরবর্তী সময়ে চকরিয়া-পেকুয়ার জনমানুষের ভালোবাসা অর্জন করেছি। আশা করছি নেত্রী সেটির মূল্যায়ন করবেন।
বর্তমান সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি হাজী মোহাম্মদ ইলিয়াছের আশা জোটের রাজনীতিতে এবারো তাকে ‘মহাজোটের’ প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হবে। তিনি বলেন, ‘আমি এমপি হওয়ায় এলাকার মানুষ স্বস্তি পেয়েছে। এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। যার সুফল মানুষ ভোগ করছে। জাতীয় পার্টিও অনেক শক্তিশালী হয়েছে।
এদিকে মহাজোটের রাজনীতিতে শরিক জাতীয় পার্টি জেপিও চাইছে আসনটি পেতে। এ লক্ষে মাঠে বেশ সক্রিয় রয়েছেন জেপির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ এ এইচ সালাহউদ্দিন মাহমুদ। তিনি কক্সবাজার জেলা পরিষদ ও চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। ছিলেন সংসদ সদস্যও। সালাহউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়ার জন্য আমাকে প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল কেন্দ্রীয়ভাবে। কিন্তু সেই প্রস্তাবে আমি রাজি হয়নি। তবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যদি দল চায় তাহলে অবশ্যই মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করব।’
এদিকে চকরিয়া-পেকুয়া আসনের জন্য শক্তিশালী ও জনপ্রিয় প্রার্থী হিসেবে এরই মধ্যে রাজনীতির মাঠে চলে এসেছেন জামায়াতের আরিফুর রহমান চৌধুরী মানিক। তিনি প্রতিকূল পরিবেশেও এলাকায় কাজ করে যাচ্ছেন। বিগত উপজেলা নির্বাচনে তিনি প্রথমবারের মতো কোনো নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে রেকর্ডসংখ্যক ভোট পান। এমনকি সুষ্ঠু ভোট হলে তিনিই জয়লাভ করতে পারতেন। তাই অন্য প্রার্থীরাও তাকে সমিহ করেন। এ ছাড়া জামায়াতের বিশাল ভোট ব্যাংক রয়েছে চকরিয়া-পেকুয়ায়। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে এখানে জামায়াতের প্রার্থী এমপি হয়েছিলেন। এবার ২০ দলের সাথে বনিবনা না হলে সর্বশক্তি দিয়ে জামায়াত আরিফুর রহমান মানিককে নিয়েই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকবেন বলে জানান জেলা জামায়াতের আমির মওলানা মোস্তাফিজুর রহমান। উল্লেখ্য কক্সবাজারের সংসদীয় আসন-১ তথা চকরিয়া ও পেকুয়ায় মোট ভোটার সংখ্যা হচ্ছে তিন লাখ ৭৫ হাজার ৬৭৬ জন। তন্মধ্যে চকরিয়া উপজেলার ১৮ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ভোটার সংখ্যা দুই লাখ ৭১ হাজার এবং পেকুয়ার সাত ইউনিয়নে ভোটার সংখ্যা এক লাখ চার হাজার ২২৩ জন।
কক্সবাজার জেলার অতীব গুরুত্বপূর্ণ এই আসন থেকে কোন দল থেকে এবার কে প্রার্থী হচ্ছেন তা নিয়ে সর্বমহলে চলছে আলোচনা-সমালোচনা ও নানা বিশ্লেষণ। বিশেষ করে তৃণমূলে সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি জনগণের মধ্যে কোন প্রার্থীর বেশি জনপ্রিয়তা রয়েছে তা নিয়েও চলছে জোরেশোরে আলোচনা। তবে এরই মধ্যে নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি ছাড়া ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির সম্ভাব্য মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রার্থীরা যে যার যার মতো করে নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ অব্যাহত রেখেছেন। একই সাথে দলের মনোনয়ন নিশ্চিত করতে নানাভাবে তদবির চালাচ্ছেন দলের হাইকমান্ডে।
এ আসনে ১৯৭৩ সালের পর আর আওয়ামী লীগ জয় পায়নি। এই সময়ে বিএনপি পাঁচবার, জাতীয় পার্টি তিনবার ও জামায়াতে ইসলামী একবার এই আসনে জয় পায়। ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য হন জাতীয় পার্টির (এরশাদ) প্রার্থী ও কক্সবাজার জেলা জাপার সভাপতি হাজী মোহাম্মদ ইলিয়াছ।
চকরিয়া-পেকুয়া আসনে বিএনপির তরফ থেকে প্রার্থী হিসেবে সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদের সহধর্মিণী সাবেক এমপি হাসিনা আহমদকে, অন্য দিকে জাতীয় পার্টি (এরশাদ) থেকে আবারো মনোনয়ন প্রায় নিশ্চিত বর্তমান এমপি হাজী মোহাম্মদ ইলিয়াছের। অন্য দিকে মহজোটের অন্য শরিকদল জাতীয় পার্টির (জেপি) প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক এমপি ও সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সালাহউদ্দিন মাহমুদ এবং আওয়ামী লীগে রয়েছে মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রার্থীর অবাধে ছড়াছড়ি। এরই মধ্যে নির্বাচন করতে ইচ্ছুক অন্তত ১২ জন প্রভাবশালী নেতার নাম প্রচারমাধ্যমে এসেছে। তাদের মধ্যে কিছু প্রার্থী জনপ্রিয়তা দলের ভেতরে বাইরে থাকলেও তৃণমূল সংগঠন ও সাধারণ নেতাকর্মী এবং জনগণের সাথে কোনো ধরনের সম্পৃক্ত নেই এ ধরনের অনেক নেতা এ আসনের প্রার্থী হতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
জানা গেছে, জাতীয় সংসদের (২৯৪) কক্সবাজার-১ আসনটি চকরিয়া-পেকুয়া দুই উপজেলার ২৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। দুই উপজেলার বর্তমান ভোটার সংখ্যা প্রায় তিন লাখ। বিএনপির শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এই আসন থেকে ১৯৯১ সালে জামায়াত প্রার্থী অধ্যাপক এনামুল হক মঞ্জু ও ১৯৯৬ এবং ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী বর্তমান বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ পরপর দুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
২০০৮ সালের নির্বাচনে সালাহউদ্দিন আহমদ কারাবন্দী থাকলে তার স্থলে সহধর্মিণী অ্যাডভোকেট হাসিনা আহমদ বিএনপির প্রার্থী হন। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমেদ সিআইপিকে ৩৫ হাজার ৪০১ ভোটে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
অন্য দিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদের সহধর্মিণী সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট হাসিনা আহমদকে এরই মধ্যে কক্সবাজার জেলা বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে চকরিয়া-পেকুয়া আসনে বিএনপির একক প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। ফলে প্রার্থী নিয়ে আপাতত সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে বিএনপি। অন্য দিকে দুই বড় দুই দলের পাশাপাশি মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন জাতীয় পার্টি (এরশাদ) দলীয় বর্তমান এমপি হাজী মোহাম্মদ ইলিয়াছ।
এদিকে বিএনপির সাথে একাদশ নির্বাচনে জামায়াতের জোটগত বন্ধন অটুট থাকলে এখানে বিএনপি জোটের প্রার্থী হবেন অ্যাডভোকেট হাসিনা আহমদ। তবে আরিফুর রহমান মানিক দাবি করেন চকরিয়া-পেকুয়া আসনে জোটগত নির্বাচনে তাকে এককভাবে মনোনয়ন দেবেন বলে তিনি আশা করেন। সম্পর্কের অবনতি ঘটলে সেই ক্ষেত্রে এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন জামায়াত নেতা আরিফুর রহমান চৌধুরী মানিক। তিনি ২০০৯ ও ২০১৪ সালে চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে দুইবার নির্বাচন করেছেন। অল্প ভোটের ব্যবধানে তিনি পরাজিত হলেও এখনো চকরিয়া-পেকুয়া উপজেলার প্রতিটি অঞ্চলে সভা সেনিমারে অংশ নিয়ে কৌশলে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন।

পাঠকের মতামত: