ঢাকা,বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়া-পেকুয়ায় ১৪৩৬টি পরিবারকে কারিতাস দিচ্ছে ২ কোটি ৮৭ লাখ টাকা

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::

চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের ঘুর্ণিঝড় ‘মোরা’ আক্রান্ত হয়ে সর্বস্ব হারানো ১৪৩৬ পরিবারের মাঝে বেসরকারী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা কারিতাস বাংলাদেশ এর পক্ষ থেকে ২ কোটি ৮৭ লক্ষ ২০ হাজার নগদ টাকা বিকাশের মাধ্যমে বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে। প্রথমদিনে চকরিয়ার চিরিঙ্গা, ডুলাহাজারা, খুটাখালী, সাহারবিল ও বদরখালী ইউনিয়নের উপকারভোগী প্রত্যেক পরিবারকে গৃহ নির্মাণ বা মেরামত বাবদ প্রথমদফায় নগদ ১০ হাজার টাকা করে তুলে দেওয়া হয়। চকরিয়ার বাকী চার ইউনিয়ন কোনাখালী, ঢেমুশিয়া, পশ্চিম বড় ভেওলা ও পূর্ব বড় ভেওলার উপকারভোগী পরিবারকে দেওয়া হবে আগামী ১২ নভেম্বর। পরদিন ১৩ নভেম্বর বিতরণ করা হবে পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া, রাজাখালী ও মগনামা ইউনিয়নের ২০০ পরিবারসহ দুই উপজেলার সর্বমোট ১৪৩৬ পরিবারকে।

কারিতাস বাংলাদেশ চট্টগ্রাম অঞ্চলের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের জুনিয়র কর্মসূচী কর্মকর্তা ড্যানিয়েল ছিপু গোমেজ জানান, ঘুর্ণিঝড় মোরা-২০১৭ এ ক্ষতিগ্রস্ত ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারদের জন্য পুনরুদ্ধার সহায়তা (গৃহ মেরামত/নির্মাণ) কর্মসূচীর অধীনে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। এই প্রকল্পে দাতা সংস্থা ইউকেএইড এর অর্থ সহায়তা এবং ইউনোপস/ডিএফআইডি এর ব্যবস্থাপনায় কারিতাস বাংলাদেশ এই অর্থ সহায়তা দিচ্ছেন ঘুর্ণিঝড় মোরায় আক্রান্ত চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার ১৪৩৬ পরিবারকে। যারা এই দুর্যোগে আক্রান্ত হয়ে সর্বস্ব হারিয়েছেন।

তিনি আরো জানান, দুই উপজেলার উপকারভোগী প্রত্যেক পরিবারকে গৃহ নির্মাণ বা মেরামত বাবদ দেওয়া হবে নগদ ২০ হাজার করে টাকা। তন্মধ্যে প্রথম পর্যায়ে প্রত্যেক পরিবারকে বিকাশের মাধ্যমে নগদ ১০ হাজার টাকা করে বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে বৃহস্পতিবার (গতকাল) থেকে। বাকী টাকা আগামী ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে বিতরণ করা হবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে চিরিঙ্গা ইউনিয়নের উপকারভোগীদের মাঝে প্রথম পর্যায়ের টাকা বিতরণের মাধ্যমে এই কার্যক্রম শুরু হয়। কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন চকরিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ জাফর আলম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চিরিঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জসীম উদ্দিন, কারিতাস বাংলাদেশ চট্টগ্রাম অঞ্চলের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের জুনিয়র কর্মসূচী কর্মকর্তা ড্যানিয়েল ছিপু গোমেজ, প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সংশ্লিষ্টরা এবং এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও উপকারভোগী পরিবারের নারী-পুরুষেরা।

চিরিঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জসীম উদ্দিন জানান, কারিতাস বাংলাদেশ এর সহায়তা সবসময় শতভাগ নির্ভেজাল। নানা দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে শুরু থেকেই এই সংস্থাটি সততার সাথে অর্থ সহায়তা দিয়েছে, এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। আমার ইউনিয়নের বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে যারাই প্রকৃতপক্ষে পাওয়ার যোগ্য তারাই পেয়েছেন এই অর্থ সহায়তা।

চকরিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ জাফর আলম বলেন, ‘চকরিয়ায় কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত হানলেই কারিতাস আমাদের পাশে এসে দাঁড়ায়। তারই ধারাবাহিকতায় এই উপজেলায় ঘুর্ণিঝড় মোরায় আক্রান্ত হয়ে বসতবাড়ি হারানো ১২৩৬ পরিবারের প্রত্যেককে নগদ ২০ হাজার করে টাকা বিতরণ করায় ব্যক্তিগতভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। পাশাপাশি কারিতাসের এই টাকার সঠিক ব্যবহার করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো মাথা গোঁজার ঠাই পাবে।’

পাঠকের মতামত: