ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় আবারও বন্যা আতঙ্ক

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::
ভারি বর্ষণ শুরু হওয়ায় আবারও বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে কক্সবাজারের চকরিয়ায়। গত শনিবার দিনভর মাঝারি এবং গতকাল ভোর থেকে টানা ভারি বর্ষণের কারণে ইতোমধ্যে এ উপজেলার নিম্নাঞ্চলের লাখো মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন।

বর্ষণ অব্যাহত থাকলে মাতামুহুরী নদীতে উজান থেকে পাহাড়ি ঢল নামলেই ফের ভয়াবহ বন্যায় রূপ নিতে পারে এখানে। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে মানুষের মাঝে। চলতি মাসের ৭ আগস্ট থেকে লাগাতার ভারি বর্ষণ ও মাতামুহুরীতে নেমে আসা উজানের পাহাড়ি ঢলের পানিতে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন এবং পৌরসভার ৯৫ শতাংশ এলাকা। এতে একনাগাড়ে তিন–চারদিন ধরে পানিবন্দি অবস্থায় ছিলেন লাখ লাখ মানুষ।

সর্বশেষ ভয়াবহ বন্যার পর উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের দেওয়া হিসাব বিবরণী অনুযায়ী, এবারের ভয়াবহ বন্যায় অন্তত হাজার কোটি টাকার সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। মূলত একাধিক কারণেই বন্যায় বার বার এসব ক্ষতির শিকার হতে হচ্ছে চকরিয়াবাসীকে। এবারের বন্যার পানি এবং তাণ্ডবচিত্র অতীতের সকল বন্যার রেকর্ড ছাড়িয়েছে। সেই ক্ষতের ওপর দাঁড়িয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলো ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে।

কিন্তু ফের ভারি বর্ষণে মানুষের মুখ মলিন হয়ে পড়েছে। যদি আবারও ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েন তাহলে কী হবে তাদের, সেই দুশ্চিন্তা ভর করছে মানুষের মাঝে। মাতামুহুরী নদীতীরের সুরাজপুর–মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আজিমুল হক আজিম দৈনিক আজাদীকে বলেন, ভারি বর্ষণ অব্যাহত থাকায় ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলে বসবাসকারী মানুষগুলোকে সতর্ক করা হচ্ছে। একপক্ষকাল আগের বন্যার ধকল থেকে শিক্ষা নিয়ে অনেকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাচ্ছেন।

বরইতলী ইউপি চেয়ারম্যান মো. ছালেকুজ্জামান, হারবাং ইউপি চেয়ারম্যান মেহরাজ উদ্দিন মিরাজ, কাকারা ইউপি চেয়ারম্যান মো. শাহাব উদ্দিন দৈনিক আজাদীকে জানান, গত বন্যায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এসব ইউনিয়ন। এখনো ইউনিয়নগুলোর বেশ কয়েকটি সড়ক এখনোও চলাচলের উপযোগী হয়নি। তার ওপর ভারি বর্ষণের কারণে মানুষের ঘরে ঘরে কান্নার রোল পড়েছে। ইতোমধ্যে নিম্নাঞ্চলের অনেক গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা মো. জামিল মোর্শেদ জানান, ভারি বর্ষণ এবং উজানের পাহাড়ি ঢলের পানি ব্যাপকভাবে মাতামুহুরী নদীতে নেমে আসছে। এতে টইটম্বুর হয়ে পড়েছে মাতামুহুরী নদী। এতে যে কোন সময় ফের বন্যা হতে পারে চকরিয়ায়।

ইউএনও জেপি দেওয়ান বলেন, যেভাবে ভারি বর্ষণ ফের শুরু হয়েছে, কোথা কোথাও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। এতে আবারও বন্যা দেখা দিতে পারে। তাই সকল জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে সর্বসাধারণকে সতর্ক এবং নিরাপদে থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। পাশাপাশি যেখানে পাহাড় বা ভূমিধসের আশঙ্কা থাকতে পারে সেখানকার পরিবারগুলোকে সরিয়ে নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

 

পাঠকের মতামত: