ঢাকা,শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়ার বাঘগুজারা রাবার ড্যামের মাটি চাপায় ৭০ হাজার একর জমিতে চাষাবাদ অনিশ্চিত

আইরিন সোলতানা রুমি, চকরিয়া :

চকরিয়া উপজেলার মধ্যদিয়ে প্রবাহমান মাতামুহুরী নদীর উপর নির্মিত বাঘগুজারা রাবার ড্যামটি মাটি চাপায় পড়ে রয়েছে গত বর্ষকাল থেকে। চলতি শুস্ক বোরো মৌসুম  শুরু হলেও কৃষকরা চারা রোপণের কাজ এখনো পর্যন্ত শুরুই করতে পারেনি । ফলে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে চকরিয়া উপজেলা-পেকুয়া অংশের ৭০ হাজার একর জমির চাষাবাদ।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, মাতামুহুরী নদীর সেচ প্রকল্পের আওতায় ২০১৩ সালে প্রায় ৫৩ কোটি টাকা ব্যয়ে পালাকাটা ও বাঘগুজারা অংশে দু’টি রাবার ড্যাম নির্মাণ করা হয়। অনিয়ম দুর্নীতির মধ্য দিয়ে নিম্মমানের উপকরণে নির্মাণ কাজ শেষ করায় বছর পার না হতেই রাবার ড্যামটির নানা ত্রুটি দেখা দেয়। পরে নাম সর্বস্ব ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগসাজস করে বিনা টেন্ডারে রাবার ড্যামের ত্রুটি মেরামতের নামে কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়।

অভিযোগে জানা গেছে, গতবছর জানুয়ারীর দিকে বোরো মৌসুমের শুরুতে বাঘগুজারা রাবার ড্যামের রাবার ব্যাগ ছিড়ে গেছে এমন অজুহাত দেখিয়ে কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড রাবার মেরামতের জন্য সরকারের কাছ থেকে দুই কোটি টাকা বরাদ্দ আনে। পরবর্তীতে বিনা টেন্ডারে একব্যক্তির মাধ্যমে ড্যামের উভয় পাশে পানি আটকানোর জন্য দুটি অস্থায়ী মাটির বাধ নির্মাণ করেন। যা কোন দরকার ছিলনা বলে জানান স্থানীয় সচেতন লোকজন।

 অবশ্য ওই সময় রাবার ড্যামগুলোর মেরামতের কাজ চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব জাফর আলম নিজের পছন্দের লোক দিয়ে করিয়েছে বলে জানায় কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকোশলী মোঃ সাবিবুর রহমান।

 চলতি বছরেও বাঘগোজারা রাবার ড্যামটির ব্যাগ বর্ষায় পলি ও মাটির চাপা পড়ায় সময় মতো ফোলানো যায়নি। এতে মিঠাপানির অভাবে চকরিয়া ও পেকুয়ার কৃষকরা এখনও চাষাবাদের কাজ শুরু করতে পারেনি। অধিকাংশ বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে পানি সেচের অভাবে। কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মাঘ মাসের শুরুতেই বোরো চাষে ধান রোপণের কাজ শেষ করতে হয়। এতে ফলন ভালো পাওয়া যায়। তবে কখন নাগাত চাষাবাদে পানি পাবে চিন্তিত রয়েছে কৃষকরা।

 সরেজমিনে বাঘগুজারা রাবার ড্যামে গিয়ে দেখা যায় ৪টি স্পাইনের মধ্যে দুইটি স্পাইনের রাবার ব্যাগ মাটি চাপা পড়ে আছে। ৩জন শ্রমিক মাটি সরানোর কাজ করছেন। রাবার ড্যামটির অপারেটর আবদু রহিম বলেন, গত বর্ষার সময় এই রাবার ড্যামটির ৪টি স্পাইনের মধ্যে ৩টি স্পাইনের ব্যাগ মাটি চাপা পড়ে যায়। যার কারণে ব্যাগগুলো ফুলিয়ে নদীর পানি আটকানো সম্ভব হয়নি।

চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ সভাপতি আলহাজ্ব জাফর আলমের সহকারী হাসানুল ইসলাম আদর বলেন, আপনারা রাবার ড্যাম পরিদর্শনে যাওয়ার পর আমাকে তা স্বাভাবিক করে দিতে বলা হয়। আমি মাটি সরিয়ে রাবার ব্যাগগুলো ফুলানোর ব্যবস্থা করে দিয়ে এসেছি। কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকেৌশলী সাবিবুর রহমান জানান, কয়েকদিনের মধ্যে রাবার ড্যামটির ব্যাগ ফোলানো সম্ভব হবে।

পাঠকের মতামত: