ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪

কক্সবাজার জেলা পরিষদ নির্বাচনে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর নির্ঘুম প্রচারণা

shalauddin-mostak-coxsbazar-zala-pcশাহজাহান চৌধুরী শাহীন, কক্সবাজার, ১৭ ডিসেম্বর ॥

কক্সবাজার জেলা পরিষদ নির্বাচনে হেভিওয়েট দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান প্রশাসক মোস্তাক আহমদ চৌধুরী ও জাতীয় পাটির (জেপির) প্রেসিডিয়াম সদস্য এএইচএম সালাহ উদ্দিন মাহমুদ নির্ঘুম প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। হেভিওেয়েট দুই প্রার্থী সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। আগামী ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে বহুপ্রতিক্ষিত জেলা পরিষদ নির্বাচন।

জনপ্রতিনিধি ভোটাররা এই দুই প্রার্থীরা সফলতা আর ব্যর্থতা নিয়ে চুলছেড়া বিশ্লেষণ করছেন। জেলার উন্নয়নে কার কি অবদান আর রাজনৈতিক অঙ্গনে কার কি ভুমিকা ছিল বা আছে তা নিয়েও চলছে আলোচনা সমালোচনা।

তিন বার নির্বাচিত সংসদস সদস্য মোস্তাক আহম্মদ চৌধুরী। দলের তৃনমুল থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের দপ্তরের নেতাকর্মীরা মোস্তাক আহম্মদ চৌধুরীকে একজন সৎ ও আর্দশবান রাজনীতিবিদ বলে জানেন। আওয়ামীলীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও পছন্দ করেন তাকে। এ কারনে দীর্ঘসময় জেলা পরিষদ প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করলেও অনুষ্ঠিতব্য জেলা পরিষদ নির্বাচনে ব্যক্তি ইমেজ, দলীয় আনুগত্য আর সততার কারণ সহ সব দিক বিবেচনা করে তাকে দলীয় প্রার্থী করেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড।

জানা গেছে, ১৯৭০ সালে সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রার্থীকে পরাজিত করে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া মোস্তাক চৌধুরী। তিনি একধারে তিন বার সংসদ সদস্য ছিলেন। ২০০৯ সালে আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার শেষ দিকে দেশের অন্যসব জেলার সাথে কক্সবাজার জেলা পরিষদে প্রশাসক পদে নিযুক্ত হন নির্লোভ রাজনীতিবিদ ও কক্সবাজার সদর উপজেলার চৌফলদন্ডি ইউনিয়নের জমিদার বাড়ির সন্তান খাঁন বাহাদুর মোস্তাক আহমদ চৌধুরী। সেই থেকে চলতি ২০১৬ সাল পর্যন্ত কক্সবাজার জেলা পরিষদের প্রশাসক পদে দায়িত্ব পালন করন তিনি। রাজনীতিতে যেমন সজ্জন তেমনি ব্যক্তি ইমেজের ক্ষেত্রেও অসম্ভব পরোপকারী মোস্তাক আহমদ চৌধুরী দায়িত্ব পালনকালীন পাঁচ বছর সময়ে জেলা পরিষদকে একটি কার্যকর প্রতিষ্ঠান হিসেবে জনগনের কাছে নিয়ে গেছেন। সরকারি বরাদ্দের আওতায় তিনি জেলার আটটি উপজেলার সম্ভাব্য সব ধরণের উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করেন। ফলে স্থানীয়রা অনেকে বলছেন এবারের জেলা পরিষদ নির্বাচনে আবারও চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হবেন বহু পরিক্ষিত জনপ্রতিনিধি মোস্তাক আহম্মদ চৌধুরী।

তৃণমুলের ভোটাররা জানান, কুতুবদিয়া, মহেশখালী, রামু, কক্সবাজার সদর, মাতামুহুরী, পেকুয়া, উখিয়া, টেকনাফ ও চকরিয়ায় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে তৃণমুল পর্যায়ে জনপ্রতিনিধিদের সাথে গনসংযোগ করে যাচ্ছেন। ১৯৭০ সালে সংসদ নির্বাচনের পরপর থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত কক্সবাজার জেলা পরিষদের প্রশাসক থাকাকালে তিনি জেলার আট উপজেলার প্রত্যন্ত জনপদে দৃশ্যমান উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছেন। যা এখনো কালের স্বাক্ষী হিসেবে প্রতিয়মান হচ্ছে। এছাড়াও তৃণমুলের জনপ্রতিনিধি ও জনগণেরর সাথে তাঁর যোগাযোগ ছিলো বেশি। প্রচার প্রচারণা আর ব্যক্তি ইমেজে অনেকটা মোস্তাক আহম্মদ চৌধুরী বিজয় নিশ্চিত বলে জানিয়েছেন তৃনমুলের জনপ্রতিনিধি ভোটাররা।

কক্সবাজার জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে হেভিওয়েট অপর প্রার্থী কক্সবাজার অঞ্চলের সর্বজনের পরিচিত নেতা সালাহ উদ্দিন মাহমুদ। জাতীয় পাটির আমলে নির্বাচিত এমপি ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান তিনি। বর্তমানে তিনি জাতীয় পাটি (জেপি-মঞ্জু)’র প্রেসিডিয়াম সদস্য ও মহাজোট সরকারের শরীকদল জাতীয় পাটির (জেপির) প্রেসিডিয়াম সদস্য। জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য এবং মুজিব বাহিনীর কমান্ডার বরণ্য রাজনীতিবিদ এএইচএম সালাহ উদ্দিন মাহমুদ।

তৃণমুল ভোটাররা জানান, রাজনৈতিক জীবনে তিনি ১৯৮৫ সালে চকরিয়া উপজেলার প্রথম উপজেলা চেয়ারম্যান, ১৯৮৬ সালে তৃতীয় সংসদ, ১৯৮৮ সালে চতুর্থ সংসদের এমপি নির্বাচিত হন। ১৯৮৮ সালে উপ-মন্ত্রীর পদমর্যাদায় কক্সবাজার জেলা পরিষদের প্রথম জেলা চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। এর পর থেকে দীর্ঘদিন অনেকটা তিনি মাঠ পর্যায়ে সরব ছিলেন না। অনেক জনপ্রতিনিধি তাকে চিনেন না। ফলে ভোটপ্রাপ্তির ক্ষেত্রেও রয়েছে বিস্তর ফারাক।

রাজনীতিতে প্রবীণ এই দুই হেভিওয়েট প্রার্থী জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়ে লড়ে যাওয়ার বিষয়টি এখন জেলার রাজনীতি অঙ্গনে সরব আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সাধারণ ভোটাররা (তৃনমুলের জনপ্রতিনিধি) মনে করেন, নির্বাচনে দুই হেভিওয়েট প্রার্থীর মধ্যে তুমুল লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। জনপ্রিয়তা ও ব্যক্তি ইমেজে দুই প্রার্থীই সমান যোগ্যতার অধিকারী। তৃনমুলে রয়েছে দুইজনের ব্যাপক জনপ্রিয়তা।

পাঠকের মতামত: