সেলিম উদ্দিন, ঈদগাঁও (কক্সবাজার) প্রতিনিধি, কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁও বাজারের ফুটপাতে বসা অবৈধ দোকান থেকে একটি চক্র প্রতিমাসে অর্ধকোটি টাকার নিরব চাঁদাবাজি চালিয়ে যাচ্ছে। এসব ফুটপাত দখল হয়ে যাওয়ায় ক্রমশঃ চলাচলের রাস্তা ছোট হয়ে পড়ছে। বাড়ছে যানজট ও দুর্ভোগ।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক এলাকা ঈদগাঁও বাজারে দৈনিক অর্ধলাখ মানুষ প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটাতে আসা-যাওয়া করে। বৃহত্তর ঈদগাঁও’র ৩ লক্ষাধিক মানুষের চাহিদা পুরণের কেন্দ্রস্থল হচ্ছে এ বাজার। সৈকত নগরী কক্সবাজারের প্রধান প্রবেশদ্বার হচ্ছে ঈদগাঁও বাসস্টেশন। যার কারণে অত্র বাজার ও স্টেশনের জায়গাগুলোর মুল্য দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যবসায়ীরা ঈদগাঁও বাজারমুখী হয়ে পড়ছে। এ সুযোগকে কাজে লাগায় কতিপয় অসাধু দোকান মালিক। অবৈধ পন্থায় টাকা আয় করতে রাস্তার সরকারী খালি জায়গা দখল উৎসবে মেতেছে রাস্তার পাশের দোকান মালিকরা। বিশেষ করে বাজার ও স্টেশনের রাস্তার দু’পাশের দোকান মালিকরা তাদের দোকানের সামনের রাস্তার সরকারী জায়গার উপর কৌশলে ফুটপাতে অবৈধ ভাসমান দোকান বসিয়ে দৈনিক ও মাসিক হারে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। উক্ত ২ স্থানের পাশাপাশি বাজারের অলি-গলিতেও এসব দোকানের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার সংখ্যা আনুমানিক ২ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। এসব ফুটপাত ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে দোকান মালিকরা এককালীন মোটা অংকের সেলামীর পাশাপাশি দৈনিক ১শ থেকে ৩শ টাকা ও মাসিক ১ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা হারে ভাড়া আদায় করে চলছে। মোটা অংকের এ অবৈধ অর্থের প্রলোভনে পড়ে এসব দোকান মালিকরা এক সময় এসব ফুটপাত স্থায়ীভাবে দখল করে নিচ্ছে। ফলে স্টেশন ও বাজারে যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম ডিসি সড়ক সহ অলিগলির দু’পাশ ছোট হয়ে আসাতে অধিকাংশ সময় বাজারে যানজট লেগেই থাকে। এতে করে বাজারমুখী ব্যবসায়ী ও পথচারীদের পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। বাজার পরিচালনার দায়িত্বে কার্যকর কোন কমিটি না থাকায় এ অবস্থা অব্যাহত রয়েছে বলে সচেতন ব্যক্তিবর্গের অভিমত।
অপর একটি সূত্রে প্রকাশ, এসব অসাধু দোকান মালিকদের পাশাপাশি একটি চক্র ও এ ফুটপাত ব্যবসায়ীদের থেকে দৈনিক ২০ থেকে ১০০ টাকা হারে চাঁদা হাতিয়ে নিচ্ছে। এছাড়া ইজারাদারকেও দিতে হয় নিয়মিত টোল। এ ব্যবসায়ীদের কারনে অবস্থা এমন হয়েছে যে, রাস্তার দু’পাশে পানি চলাচলের যে ড্রেনেজ ব্যবস্থা ছিল তাও দখল হয়ে যাওয়ায় সামান্য বৃষ্টি নামলেই পুরো বাজার খালে পরিণত হয়। স্ব স্ব দোকান মালিকরা তার সামনের রাস্তার খালি জায়গা মাটি দিয়ে ভরাট উচু করে ফুটপাত দোকান বসানোতে রাস্তাটি দু’পাশের দোকান থেকে নিচু হয়ে যাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে বলে সাধারণ পথচারীদের অভিযোগ। উপজেলা প্রশাসন বাজারের দেখভালের মুল দায়িত্বে থাকলেও এসব ফুটপাত উচ্ছেদ ও সরকারী জায়গা উদ্ধারে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণেই এ প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতিমধ্যে বাজার ও স্টেশনে সরকারের কোটি টাকার খাস জায়গা দখল করে চিহ্নিত চক্র দালান কোটা নির্মাণ করলেও তা উদ্ধারের কোন ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। নামে মাত্র কিছু মামলা ঠুকে দিয়ে দায় সেরেছে সংশ্লিষ্টরা।
সাধারন ব্যবসায়ী ও সচেতন ব্যক্তিদের অভিমত এসব ফুটপাত ও দখল হয়ে যাওয়া সরকারী কোটি টাকার জায়গা উচ্ছেদ পূর্বক উদ্ধার করে ফুটপাত ব্যবসায়ীদের উদ্ধারকৃত খালি জায়গায় পুনর্বাসন করা হলে একদিকে যেমন সরকারী জায়গা উদ্ধার হবে, অন্যদিকে সরকার প্রতি অর্থবছরে পাবে মোটা অংকের রাজস্ব। যা রাষ্ট্রীয় কোষাগারকে আরো সুরক্ষিত করতে পারে। উপরোক্ত বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুঃ নজরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে জানান, উক্ত সমস্যা নিরসনে অবৈধ দখল উচ্ছেদে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পাঠকের মতামত: