নিজস্ব প্রতিবেদক :
পরিবারসহ সকল শুভার্থীদের শোকে ভাসিয়ে অকালে না ফেরার দেশে চলে যাওয়া অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন’র প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী ২৪ আগস্ট। ২০১৬ সালে এ দিনে অকস্মাৎ মস্তিকে রক্তক্ষরণ জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন (ইন্না…রাজেউন)। এসময় তিনি চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজে বাংলা বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। শিক্ষকতা জীবনের শুরুতে কক্সবাজার সরকারি কলেজে প্রভাষক হিসেবে যোগ দিয়ে তিনি দীর্ঘ দেড় যুগ সেখানে অধ্যাপনা করেন। এ সুবাধে তিনি অগণিত শিক্ষার্থীর অন্তপ্রাণ সাইফুদ্দিন স্যার। মৃত্যুকালে রেখে যাওয়া স্ত্রী, চার সন্তান, বৃদ্ধা মা, ভাই-বোন ও স্বজনসহ অসংখ্য শিক্ষার্থী তাঁর জন্য এখনো শোকবিহবল হন।
তাঁর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে গ্রামের বাড়ি ও চট্টগ্রামের বাসায় মিলাদ, খতমে কোরআন ও এতিমদের জন্য ভোজের আয়োজন করা হচ্ছে। এতে অংশ নিতে সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন পরিবারের পক্ষে তাঁর স্ত্রী-সন্তানরা।
পারিবারিক সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম শহরে কর্মস্থলের কাছে পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি। প্রতিদিনের মতো বুধবার (২৪ আগস্ট ২০১৬) ভোরে প্রচুর বৃষ্টিপাতেও মসজিদে গিয়ে তিনি ফজরের নামাজ আদায় করেন। ফিরে এসে প্রাত্যহিক কাজ গুছানোর ফাঁকে হঠাৎ বুকে ব্যাথা অনুভব ও শারিরীক অসুস্থতার কথা বলে শুয়ে পড়েন বিছানায়। এদিক-সেদিক গড়াগড়ি খেতে খেতে এক সময় বিছানা থেকে পড়ে যান। এসময় নাক ও মুখ দিয়ে রক্ত বের হতে থাকে। তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তখন তার বয়স হয়েছিল মাত্র ৫০ বছর।
ওইদিন বেলা ১১ টায় চট্টগ্রাম সিটি কলেজ মাঠে প্রথম জানাজা ও পরে বিকাল সাড়ে ৫ টায় তাঁর গ্রামের বাড়ি চকরিয়ার সাহারবিল বাটাখালী আনোয়ারুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসা মাঠে দ্বিতীয় জানাজা শেষে সামাজিক কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।
প্রয়াত অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন কক্সবাজার সরকারি কলেজে ১৯৯২ সালে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। পরে সহকারি ও সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্বপালন করেন। ২০১৪ সহযোগি অধ্যাপক হিসেবে গাছবাড়িয়া সরকারি কলেজে বদলি হন। সেখান থেকে ২০১৬ সালে চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজে যান তিনি।
কক্সবাজারে দায়িত্বপালনকালিন সময়ে তিনি বাংলাদেশ বেতার কক্সবাজার কেন্দ্রের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক আলোচক হিসেবে প্রোগ্রাম পরিচালনা করতেন। নিয়মিত লেখা-লেখি করতেন বিভিন্ন পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে। তাঁর অসংখ্য কবিতা, প্রবন্ধ, গল্প ও পাঠালোচনা নানা পত্রিকায় স্থান পেয়েছে। এখনো অপ্রকাশিত রয়েছে অনেক লেখা। যা শীঘ্রই বই আকারে বের করার উদ্যোগ নিচ্ছেন বাংলা বিভাগের প্রাক্তন কয়েকজন শিক্ষার্থী।
পাঠকের মতামত: