২০০০ সালের শেষে দিকে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্য প্রায় ৫০ লাখ টাকা মূল্যের একটি এক্স-রে যন্ত্র সরবরাহ দেওয়া হয়। কিন্তু চালানোর জন্য টেকনিশিয়ান (রেডিওগ্রাফার) পদায়ন না করায় এটি বসানোর পর থেকেই কক্ষবন্দী হয়ে আছে। ১৬ বছরে একটি বারের জন্যও রোগীদের কাজে আসেনি যন্ত্রটি।
হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, এক্স-রে যন্ত্রের কক্ষটি তালাবদ্ধ। রোগীদের কাউকে এক্স-রে করাতে হলে ছুটতে হচ্ছে ২০ কিলোমিটার দূরের চকরিয়ায়। আশপাশে বেসরকারি কোনো রোগনির্ণয়কেন্দ্রও নেই।
টৈটং ইউনিয়নের নাপিতখালী গ্রামের গৃহবধূ খাদিজাতুত তহুরা (২৭) বলেন, ‘পেকুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভালো ভালো চিকিৎসক আছেন। কিন্তু তাঁরা এক্স-রে দিলে সেখানে করানোর সুযোগ নেই। যেতে হয় চকরিয়া। সেখান থেকে এক্স-রে করিয়ে পেকুয়া ফিরতে দুপুর দুইটা পার হয়ে যায়। তখন আর চিকিৎসক পাওয়া যায় না। পরদিন দেখাতে হয়। শুধু একজন টেকনিশিয়ানের অভাবে এমন দুরর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।’
হাসপাতাল সূত্র জানায়, ১৯৯৬ সালে ২০ শয্যার পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠিত হয়। ওই সময় হাসপাতালটি উন্নয়ন খাত থেকে পরিচালিত হতো। ২০০৫ সালে ৩১ শয্যায় রূপান্তরিত হয় হাসপাতাল। ২০০৮ সালের এপ্রিলে স্থানান্তরিত হয় রাজস্ব খাতে।
পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান বলেন, চকরিয়া নিউজকে ‘রেডিওগ্রাফার না থাকায় ১৬ বছর ধরে এক্স-রে যন্ত্রটি সচল করা হয়নি। একজন রেডিওগ্রাফারের জন্য মন্ত্রণালয়ে কয়েক শ বার চিঠি পাঠানো হয়েছে। কিন্তু জনবল পাওয়া যাচ্ছে না। এখন যন্ত্রটি সচল নাকি অচল, তা–ও জানি না।’
পেকুয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সহসভাপতি শাফায়েত আজিজ চকরিয়া নিউজকে বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের চিকিৎসাসেবার একমাত্র ভরসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। আগের চেয়ে চিকিৎসার মান ভালো হলেও এক্স-রে যন্ত্র চালু না থাকায় রোগীদের দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। টেকনিশিয়ান না থাকার কারণে অবহেলায় যন্ত্রটিও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। প্রত্যেক মাসিক সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হলেও সেটি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা শুনছেন না।’
পাঠকের মতামত: