পেকুয়া প্রতিনিধি ::
চোখের সামনে মাতামুহুরী নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে বাঘগুজারা–কোনাখালী–বদরখালী সড়কটি। সড়কটি মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।
সড়কটি বাঘগুজারা ব্রীজ থেকে শুরু হয়ে মাতামুহুরী নদীর পাড় বেয়ে কোনাখালী হয়ে মিশে গেছে বদরখালী বাজারে। কোনাখালী ইউনিয়নের ৩০ হাজার লোকজনের যাতায়াতের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক।
এসড়ক দিয়ে পেকুয়া উপজেলা ও কোনাখালী ইউনিয়নের মানুষ বদরখালী, মহেশখালী, মাতারবাড়ী সহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করেন। সাম্প্রতিক বন্যায় মাতামুহুরীর তীব্র সোতে এসড়কটির ভাঙন শুরু হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাঘগুজারা–কোনাখালী–বদরখালী সড়কের হাইদ্যারদিয়া এলাকায় ৪–৫ চেইন এলাকা জুড়ে বিশাল ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে করে হুমকীর মুখে পড়েছে ওই এলাকার সিকদার পাড়া, লতাবুনিয়া পাড়া, খাতুর বাপের পাড়া, মৌলভী পাড়া, দিয়ার পাড়া, দক্ষিণ কোণাখালীসহ আরো অনেক গ্রাম। এলাকাবাসির প্রচেষ্ঠায় সড়কটির যেটুকু অংশ টিকে আছে প্রবল স্রোত এলে সেটিও নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে বলে আশংকা করছেন স্থানীয়রা।
সিকদার পাড়া এলাকার বাসিন্দা আবদুল মোনাফ, হাইদ্যার দিয়া এলাকার সোলতান আহমদ, বৃদ্ধ কবির হোসেন, স্থানীয় কৃষক জেবর মুল্লুকসহ আরো অনেকে জানান, জরুরি ভিত্তিতে যদি সড়কটি সংস্কার করা না হয় তাহলে সামনে বৃষ্টিতে মাতামুহুরীর পানি বৃদ্ধি পেলে প্রথম স্রোতেই সড়কটি বিলীন হয়ে যাবে। এ বিষয়ে স্থানীয় সমাজ সেবক ডা: আবদুল মাবুদ, আবদুল হান্নান সহ আরো অনেকে জানান, দীর্ঘদিন ধরে সড়কটির কোন প্রাকার সংস্কার হয়নি। কয়েকবছর আগে প্রাথমিকভাবে যখন ভাঙন শুরু হয় তখন যদি ইউনিয়ন পরিষদের বরাদ্দ থেকেও সামান্য অর্থ ব্যয় করা হত তাহলে আজকে সড়কটি হুমকির মুখে পড়ত না।
কোনাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানান, ১৩ কিলোমিটার সড়কটি কোনাখালী ইউনিয়নের প্রায় ৩০ হাজার জনসাধারণের চলাচলের জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ একটি রাস্তা। সড়কটি সংস্কার ও বেড়িবাঁধ সংস্কারের জন্য আমরা বহুবার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ধর্না দিয়েছি এমনকি পানি সম্পদমন্ত্রী, নির্বাহী প্রকৌশলীসহ বড় বড় অফিসাররা সড়ক ও বেড়িবাঁধটি পরিদর্শন করে গেছেন কিন্তু কেন যে তা সংস্কারের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছেনা তা আমার বোধগম্য নয়।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সবিবুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সড়কটি মূলত মাতামুহুরী নদীর বেড়িবাঁধ। এটি স্থানীয় জনসাধারণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিধায় তাতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ এটিকে পিচ ঢালাই করে রাস্তা তৈরী করেছে। তিনি বলেন, মাতামুহুরী নদীর পানির উচ্চতা যেভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে তাতে বিভিন্ন স্থানে বাঁধের বহু অংশ হুমকির মুখে পড়েছে। অনেক স্থানে একেবারেই বিলীন হয়ে গেছে। হাইদ্যার দিয়া অংশের ভাঙনসহ বিভিন্ন ভাঙনের জন্য জরুরি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এবং ইতিমধ্যে কাজও শুরু হয়েছে বলে জানান তিনি।
পাঠকের মতামত: