পেকুয়ায় তৃতীয় শ্রেনীর এক শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়েছে। ওই শিক্ষার্থীর নাম মো.সাকিব (১০)। সে উপজেলার শিলখালী ইউনিয়নের সাপেরগাড়া দুর্গম পাহাড়ি রাজারখোলা এলাকার নুরুল আমিনের ছেলে। জানা গেছে সে সাপেরগাড়া মনিরুজ্জামান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেনীর ছাত্র। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কক্সবাজারের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি করে। তবে ক্লিনিকের নাম জানা যায়নি। গত ২৮মে সকাল ৭টার দিকে রাজাখোলা ওই শিক্ষার্থীর বাড়িতে।
জানাগেছে ওইদিন সকালে রাজারখোলা এলাকার শাহ আলমের ছেলে মনোর আলম অবৈধ অস্ত্র নিয়ে সাকিবের বাড়িতে যান। অস্ত্রনিয়ে মনোর আলম পাহাড়ি এলাকা থেকে প্রতিনিয়ত বনমোরগ শিকারে ব্যস্ত থাকে। ওইদিন শিকারের জন্য মনোর আলম সাকিবদের নিকট পাহাড়ে যায়। ওই সময় তার আগ্নেয়াস্ত্র নড়াচড়া করার সময় অসর্তকতা বশত গুলি ছোঁড়ে। এ সময় সাকিব পেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করে। ঘটনার এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেছে।
গুলিবিদ্ধ সাকিব এখনো শংকামুক্ত নন। তবে গোপনে ঘটনা ধামাচাপা দিতে একটি প্রভাবশালী পক্ষ অস্ত্রধারী মনোর আলমের পক্ষে নেপত্যে থেকে কাজ করছে বলে রাজারখোলা এলাকার লোকজন জানিয়েছেন। গোপনে হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। স্পর্শকাতর ও গুলি ছোঁড়ার চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি কৌশলে ধামাচাপা দিতে সক্ষম হন ওই মনোর আলম।
শুক্রবার সকালে সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা গেছে রাজারখোলা দুর্গম পাহাড়ের চুড়ায় সাকিবদের বসবাস। বাবা দিন মজুর। কথা হয় সাকিবের মা মর্তুজা বেগম তার বোন কানিজ ফাতেমা ও তসলিমার সাথে। ওইদিনের হৃদয় বিদারক ঘটনার বর্ননা দিতে গিয়ে মা-মেয়ে চোখের জ্বল ধরে রাখতে পারেনি। তবে ভয়ে মুখ খোলার সাহস পাচ্ছেনা। সাকিবের বর্তমান অবস্থা একটু উন্নতির দিকে দাবি করছেন তারা।
তসলিমা জানায় গুলিবিদ্ধের সময় মা বাড়িতে ছিলেন না। আমি তরকারি রান্নার সময় হঠাৎ বিকট আওয়া পাই। এ সময় ছোট ভাই সাকিব গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। রক্ত দেখে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। কক্সবাজারের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানায় তিনি।
শিলখালীর রাজারখোলা ও সাপেরগাড়া এলাকার লোকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায় গত ইউপি নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান নুরুল হোছাইন শিলখালীর বিভিন্ন প্রান্তে অবৈধ অস্ত্রের যোগান দেন। ভোট সেন্টারে আধিপত্য নিতে নুরুল হোছাইন চেয়ারম্যান ওই অস্ত্র মনোর আলমকে সরবরাহ দেন। এর আগে মনোর আলমের ভাই তাজের মুল্লুক ছিদ্দিকের এক মেয়েকে কুপিয়ে মারাত্বক জখম করে। ওই ঘটনাও চেয়ারম্যান ধামাচাপা দেন। গুলিবিদ্ধের ঘটনাও চেয়ারম্যান ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছেন।
মনোর আলম জানায় আমি দুরে আছি। সাক্ষাতে বিস্তারিত বলব এ বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। এ বিষয়ে জানতে শিলখালী ইউপির চেয়ারম্যান নুরুল হোছাইন এর সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হয়। ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া যায়নি। পেকুয়া থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) জিয়া মো.মোস্তাফিজ ভুঁইয়া জানায় বিষয়টি আমাকে কেউ জানায়নি। খোঁজ নিয়ে দেখবো। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনুনাগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
################
পেকুয়ায় অপহৃত কিশোরকে পুলিশের উদ্ধার
পেকুয়া প্রতিনিধি ::
পেকুয়ায় অপহৃত এক কিশোরকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। অপহৃত কিশোরের নাম নাছির উদ্দিন (১৫)। সে উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের সবজীবনপাড়া এলাকার জহুরুল ইসলামের ছেলে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে পেকুয়া থানার এসআই বিমল কান্তি নাথ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে সদর ইউনিয়নের সাবেকগুলদি চরপাড়া এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করেছে। তবে পুলিশ কিশোরকে অপহরনের কথা অস্বীকার করেছেন।
পুলিশ জানায় ওই কিশোর চুরি চামারির সাথে জড়িত। বারবাকিয়া বাজারে কিছু লোক পকেট কাটার দায়ে আটকিয়ে রাখে। সদর সাবেকগুলদি রাস্তা থেকে তাকে নিয়ে আসা হয়। পরে তার পিতা ও দফাদারের জিম্মায় তাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
এদিকে সাবেকগুলদী এলাকার লোকজন জানায় কিশোর নাছির উদ্দিনকে জিম্মি করে মুক্তিপন আদায়ের জন্য অপহরন করা হয়েছে। গত বৃহষ্পতিবার রাত ৯টার দিকে বারবাকিয়া বাজার থেকে অপহরন করে সাবেকগুলদী এলাকায় নিয়ে আসে। স্থানীয় দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী একাধিক মামলার আসামি সদ্য জেল ফেরত শফিউল আলম প্রকাশ গুরা বাইশ্যার ছেলে সালাহ উদ্দিন প্রকাশ সালু নেতৃত্বে কয়েকজন চক্র তাকে অপহরন করে। মুক্তিপনের জন্য সাবেকগুলদীর একটি অজ্ঞাত বাড়িতে আটকিয়ে নির্যাতন চালানো হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ সাবেকগুলদী থেকে পরদিন দুপুরে উদ্ধার করে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ইসমাইল সিকদার জানায় কিশোরকে উদ্ধারের জন্য আমি চেয়ারম্যান ও পুলিশকে অবহিত করি। সাবেকগুলদীতে আইন শৃংখলা পরিস্থিতি চরম অবনতি হয়েছে। মানুষের জানমাল হুমকির মধ্যে পড়েছে। এগুলো থেকে এলাকাবাসি দ্রুত পরিত্রান চায়। পেকুয়া থানার এসআই বিমল কান্তি নাথ জানায় তাকে অপহরন করা হয়নি। রাস্তায় স্বাভাবিক অবস্থায় পেয়েছি। শরীরে আঘাতের দাগ রয়েছে।
অফিসার ইনর্চাজ জিয়া মো.মোস্তাফিজ ভুঁইয়া জানায় এসআই বিমলকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। শুনেছি ছেলেটি পকেট কাটত। এরপরেও পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পাঠকের মতামত: