ঢাকা,শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

পেকুয়ার মগনামায় ৪৬৬ একর জমি নিয়ে দেশের প্রথম সাবমেরিন স্টেশন স্থাপন হতে যাচ্ছে

pic-pekua-sabmarenএম.জুবাইদ. পেকুয়া:
বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর সক্ষমতা বাড়াতে ৪৬৬ একর জমি অধিগ্রহন করে দেশের প্রথম সাবমেরিন স্টেশন স্থাপনের কাজ শুরু হতে যাচ্ছে কক্সবাজারের পেকুয়ার মগনামায়। এ উপলক্ষ্যে কিছু দিন আগে অধিগ্রহনকৃত জমির মালিকদের হাতে ক্ষতিপূরণের চেক তুলে দিয়েছেন জেলা প্রশাসক আলী হোসেনসহ নৌবাহিনীর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে এ বছরের শেষের দিকে দেশের এ প্রথম সাবমেরিন স্টেশনের কাজ হবে তার কারণে সাবমেরিন স্টেশনের জন্য অধিগ্রহনকৃত জায়গায় এবার লবণ চাষে মাঠে না নামতে চাষিদের প্রতি নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। প্রতিবছরের মতো নভেম্বর মাসের শেষ দিকে চাষিরা লবণ উৎপাদনের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেন উপজেলা প্রশাসন। এদিকে সাবমেরিন স্টেশন স্থাপনে কাজ এখনো শুরু না হলেও অধিগ্রহনকৃত ৪৬৬ একর জমিতে লবণ চাষে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় মাথায় হাত দিয়েছে প্রান্তিক চাষিরা। অধিগ্রহনকৃত জমিতে লবণ চাষে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মারুফুর রশিদ খাঁন। তিনি বলেন সাবমেরিন স্টেশন স্থাপনের জন্য অধিগ্রহনকৃত জমির মালিকদের ক্ষতিপূরণের চেক তুলে দেওয়া হচ্ছে। জেলা প্রশাসক মো: আলী হোসেন উপস্থিত থেকে সংশি¬ষ্টদের নিয়ে জমির মালিকদের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে এই চেক হস্তান্তর করছেন। সাবমেরিন স্টেশন স্থাপনের কাজ শুরু হবে। এ জন্য আগে থেকেই অধিগ্রহনকৃত জায়গায় লবণ চাষে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে প্রায় একবছর আগে এই জমি অধিগ্রহন করা হলেও জমির মালিকরা প্রান্তিক চাষিদের কাছ থেকে আগাম টাকা নিয়ে আগামী মৌসুমে লবণ চাষের জন্য লাগিয়ত করেছেন। এতে প্রায় ৩০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন প্রান্তিক চাষিরা। স্থাণীয় লবণচাষি শহীদুল ইসলাম, আজিম উদ্দিনসহ ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা বলেন ইতিমধ্যে লবণের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বেশ উৎসাহ নিয়ে লবণ চাষের দিকে ঝুঁকছেন চাষিরা। তাই চড়ামূল্যে জমি লিজ নিয়ে লবণ চাষের জন্য পুরোদমে প্রস্তুতি চলছে চাষিদের মাঝে। কিন্তু অধিগ্রহণকৃত জমিতে লবণ চাষে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় আমাদের মাথায় হাত উঠেছে। এমনকি বিষয়টি জানার পর লিজের টাকা ফেরত চেয়ে শরণাপন্ন হলেও টাকা ফেরত দিচ্ছেনা জমির মালিকরা। তবে জমির মালিকদের দাবী সাবমেরিন স্টেশন স্থাপনের জন্য সরকার মগনামা ইউনিয়নের কয়েকটি মৌজার ৪৬৬ একর লবণ চাষের জমি অধিগ্রহন করে। ওই জমি ইতিমধ্যে নৌ বাহিনীর নিয়ন্ত্রনে থাকলেও এখনো কিছু কিছু ক্ষতিপূরণ পাওয়া গেলেও সবগুলো পায়নি জমির মালিকরা। তাই চলতি মৌসুমে লবণ চাষের জন্য প্রান্তিক চাষিদের কাছ থেকে নেওয়া লিজের টাকা ফেরত দেওয়ার মত অবস্থা তাদের নেই। কেননা লিজের বিপরীতে দুমাস আগে নেওয়া টাকা ইতিমধ্যে তাদের খরচ হয়ে গেছে। তবে জমির ক্ষতিপূরণ বাবদ সরকারের কাছ থেকে টাকা পাওয়ার পর লিজ গ্রহীতা প্রান্তিক চাষিদের টাকাও ফেরত দেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে মগনামা ইউপির চেয়ারম্যান শরাফত উল¬াহ ওয়াসিম জানান এখনো যেহেতু অধিগ্রহণকৃত জমিতে সাবমেরিন ঘাঁটি স্থাপনের কাজ শুরু হয়নি,সেহেতু মানবিক দিক বিবেচনায় নিয়ে মোটা অংকের টাকায় ওই জমি লিজ নেওয়া প্রান্তিক চাষিদের আগামী মৌসুমেও লবণ চাষের সুযোগ করে দেওয়া উচিত। তা না হলে প্রান্তিক চাষিরা বিনিয়োগকৃত টাকা ফেরত না পেয়ে দেউলিয়া হবেন।

পাঠকের মতামত: