ঢাকা,বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪

জনগণের জীবন-জীবিকার উন্নয়নে বন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে -বনবিভাগের প্রকল্প পরিচালক

্‌্‌্মোঃ রেজাউল করিম, ঈদগাঁও, কক্সবাজার :::

ক্লাইমেট রিজিলিয়েন্ট পার্টিসিপেটরী এফরেষ্টেশন এন রিফরেষ্টেশনের প্রকল্প পরিচালক উত্তম কুমার সাহা বলেছেন, বাংলাদেশ একটি জনবহুল ও ঘনবসতিপূর্ণ দেশ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এদেশ এখন সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। দেশে যে পরিমাণ বনজ সম্পদ রয়েছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত কম। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দেশ ঘন ঘন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হচ্ছে। এর বিরূপ প্রভাবে দেশের বন প্রতিবেশ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দেশের বিপুল জনসংখ্যার প্রয়োজনের তাগিদে বনভূমিকে অন্য খাতে ব্যবহার, ব্যাপকভাবে জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ, বেআইনীভাবে বনজ সম্পদ সংগ্রহ ইত্যাদি কারণে বন ক্রম উজাড় হচ্ছে। ফলে বনাঞ্চল ও বনজ সম্পদের পরিমাণ দিন দিন সংকুচিত হয়ে আসছে। তাই পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাসহ জনগণের জীবন-জীবিকার উন্নয়নে বন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ২১ আগষ্ট সকালে কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের মেহেরঘোনা রেঞ্জে আয়োজিত ২ দিন ব্যাপী প্রশিক্ষণের উদ্বোধন পর্বে তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। বাংলাদেশ বনবিভাগ ও আরণ্যক ফাউন্ডেশনের যৌথ বাস্তবায়নে বিশ্ব ব্যাংকের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় বন অধিদপ্তর এ কর্মসূচীর আয়োজন করেছে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এনভায়রনমেন্ট, এগ্রিকালচার এন্ড ডেভেলপমেন্ট সার্ভিসেস লিমিটেড (ইএডিএস) এবং এর সহযোগী প্রতিষ্ঠান ঢাকা আহসানিয়া মিশন ও ম্যানেজমেন্ট ট্রেনিং ইন্টারন্যাশনাল এ প্রশিক্ষণ আয়োজনে সহযোগিতা করেছে। এসময় উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক মোহাম্মদ ইউছুপ, মেহেরঘোনা রেঞ্জ কর্মকর্তা এ.কে.এম আতা ইলাহী। রিসোর্স পারসন ছিলেন বনবিভাগের প্রাক্তন কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান, মাহবুবুর রহমান প্রমুখ। প্রশিক্ষণে বন ও বনের গুরুত্ব, বন সৃজন, বন ব্যবস্থাপনা, উপকারভোগী হিসেবে দায়িত্ব-কর্তব্য, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় করণীয়ের বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত করা হয়। অংশীদারিত্বমূলক বন ব্যবস্থাপনায় সচেতনতা ও দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণের উপর জোর দেয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণ ম্যানুয়েলে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল অত্যন্ত দূর্যোগপূর্ণ। বনাঞ্চল বা গাছপালা প্রাকৃতিক দূর্যোগ তথা ঝড়, জলোচ্ছ্বাস, ঘুর্ণিঝড় ইত্যাদির ক্ষয়ক্ষতি রোধে সাহায্য করে। বাংলাদেশ বনবিভাগ ১৯৬০ সাল থেকে উপকূলীয় অঞ্চলে নতুন জেগে উঠা চরে বনায়ন কার্যক্রম শুরু করে। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের দিক নির্দেশনায় বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমিতকরণ এবং বনাঞ্চল বৃদ্ধির লক্ষ্যে উপকূলীয় ও পাহাড়ী এলাকায় অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে বনায়ন ও পুনর্বনায়নের কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। যা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০১২ সালে ‘সিআরপিএআর’ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। কর্মশালায় আরো বলা হয়, বাংলাদেশ ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে যতই দিন যাচ্ছে ততই বন ও বনজ সম্পদের উপর চাপ বাড়ছে। বিপুল জনগোষ্ঠির চাপে কাঠ, জ্বালানি, বাসস্থান, পশুখাদ্য, চাষযোগ্য জমির চাহিদা পূরণের জন্য গ্রামীণ গাছ-গাছড়া ও বনের পরিমাণ আশঙ্কাজনকভাবে কমছে। মাটি হারাচ্ছে উর্বরতা। দূষিত হচ্ছে বায়ু ও পানি। তাই নিজেদের বাঁচার জন্য প্রয়োজন বেশি বেশি করে গাছের চারা রোপন, বাগান সৃজন এবং বন সংরক্ষণ। কর্মসূচীর ১ম ব্যাচে মেহেরঘোনা বনাঞ্চলে ২০১৪-১৫ সালে সৃজিত বাফারজোন বাগানের ৩০জন উপকারভোগী অংশ নেন।

পাঠকের মতামত: