ঢাকা,শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

বেহাল সেন্টমার্টিন জেটি

সেন্টমার্টিনে ঝুঁকিতে ৫০ হাজার মানুষের জীবিকা ও কর্মসংস্থান

ইমাম খাইর, কক্সবাজার ::
প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন বাঁচাতে বিধ্বস্ত জেটিটি অবিলম্বে সংস্কার করতে হবে। না হলে পর্যটন খাতে জড়িত অন্তত ৫০ হাজার লোকের জীবন-জীবিকা ও কর্মসংস্থান ঝুঁকিতে পড়বে। আগামী ১৫ অক্টোবরের মধ্যে জেটির মেরামত করা না গেলে পর্যটন শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পাশাপাশি সরকার বিপুল রাজস্ব হারাবে।
সেন্টমার্টিন জেটি দ্রুত মেরামতের দাবিতে শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শহরের আবাসিক হোটেলের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে পদক্ষেপ বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলা সভাপতি তোফায়েল আহম্মেদ এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটক পারাপারে ৭-৮টি জাহাজ, ২০০-৩০০ বাস মিনিবাস, ১০০ মাইক্রোবাস, ২০০ ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠান, ৪০০ট্যুরিস্ট গাইড এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীসহ ৫০ হাজার মানুষের জীবন-জীবিকা পর্যটন ব্যবসাকে কেন্দ্র করে পরিচালিত হয়।
এ সকল কর্মকাণ্ডের মাধ্যম একমাত্র সেন্টমার্টিন জেটি। অনেক দিন জেটিটির সংস্কার নেই।
তিনি মনে করেন, দ্বীপের প্রবেশদ্বার জেটি ছাড়া দ্বীপ যেন এক্কেবারে অচল।
পর্যটনের উদ্যোক্তা তোফায়েল আহম্মেদ বলেন, গেল কয়েকটি বছরে বয়ে যাওয়া ঘুর্ণিঝড়- জ্বলোচ্ছ্বাসের তান্ডবে সেন্ট মার্টিন জেটির অনেকাংশে ভেঙে পড়েছে। নষ্ট হয়ে গেছে পল্টুন। সর্বশেষ গত ২৭ মে ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে জেটিটি আরেক দফা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এমনকি জেটির পাশে ট্রলার ভিড়ানোর অংশ পর্যন্ত ভেঙে গেছে। যে কারণে অনেকটা চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
দ্বীপকে ঘিরে পর্যটন ব্যবসায়ীরা দীর্ঘ দেয়াদি বিনিয়োগ করেছে। তারা আজ দিশেহারা।
তিনি বলেন, দ্বীপের কোন মানুষ অসুস্থ হলে জেটি ব্যবহার করে উন্নত চিকিৎসার জন্য টেকনাফে যাওয়া কঠিন। দ্বীপবাসী তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য আনা-নেওয়া করতে পারে না। জেটির কারণে দ্বীপের লোকজন মারাত্মক ক্ষতি ও ভোগান্তির শিকার।
এই পরিস্থিতিতে জেটি পারাপার কোনভাবেই সম্ভব নয়। এই খাতে সম্পৃক্ত প্রায় ৫০ হাজার মানুষ অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতির শিকার হবে।
দ্বীপের অবস্থা তুলে ধরে পদক্ষেপ বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলা সভাপতি তোফায়েল আহম্মেদ বলেন, কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটকদের বিরাট একটা অংশ সেন্ট মার্টিন ভ্রমণে যায়। তাদের জন্য দ্বীপে গড়ে ওঠেছে দুই শতাধিক হোটেল, মোটেল ও গেস্ট হাউজ। রয়েছে শতাধিক রেস্তোরাঁ। বর্তমানে দ্বীপবাসীর একমাত্র আয়ের উৎস পর্যটন। তাই পর্যটনকে পুঁজি করে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের প্রচুর বিনিয়োগ রয়েছে। বছরে মাত্র ৫ মাসের ব্যবসার আয়ের টাকায় ১২ মাস চলে দ্বীপের বাসিন্দারা। জেটিটি দ্রুত সময়ে সংস্কার না করলে বন্ধ হয়ে যাবে আয়ের উৎস। রাজস্ব বঞ্চিত হবে সরকার।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন- পদক্ষেপ বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলা শাখার উপদেষ্টা এমএ হাসিব বাদল, এসএম কিবরিয়া খান, সিনিয়র সহসভাপতি মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম তোহা, সহসভাপতি ইফতিকার আহমদ চৌধুরী, এসএ কাজল, নুরুল আলম রনি ও সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মো. আল আমীন বিশ্বাস তুষার।

পর্যটন ব্যবসায়ী ও ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্য থেকে সাহাব উদ্দিন জনি, জামাল উদ্দিন, জনি ভুইয়া, ফোরকান জুয়েল। এছাড়া বিভিন্ন পর্যটনসেবী প্রতিষ্ঠানের ট্যুর গাইডরাও উপস্থিত ছিলেন।

পাঠকের মতামত: